ঢাকা ১১:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
টিসিবির পণ্য কিনতে গিয়ে ট্রাকচাপায় নিহত ১ ঢাকায় ইউরোপের ভিসা সেন্টার খোলার অনুরোধে কাঙ্ক্ষিত সাড়া মেলেনি সাগর-রুনির সন্তানের হাতে প্লটের দলিল হস্তান্তর করলেন প্রধান উপদেষ্টা ছাত্র হত্যা মামলার আসামি রাজাপুরের ইউএনও রাহুল ওএসডি ২৯ কোটি টাকার হিসাব কীভাবে পরিচালনা করেছে, জানাল জামায়াত নারায়ণগঞ্জ বার নির্বাচন: জামায়াতপন্থী আইনজীবী প্যানেলের গণসংযোগ নথি সরিয়ে করে ১৪৬ কোটি টাকার কর ফাঁকি, কর্মকর্তা বরখাস্ত জুলাই গণহত্যা: জাতিসংঘের প্রতিবেদন ‘ঐতিহাসিক দলিল’ হিসেবে ঘোষণার নির্দেশ অভ্যন্তরীণ ভোটের মাধ্যমে ছাত্রদলের প্যানেল নির্ধারণ করা হয়েছে: আবিদুল সরকারি পাসপোর্টধারী ও কূটনীতিকরা ভিসা ছাড়াই পাকিস্তান সফর করতে পারবেন

বাংলাদেশি’ সন্দেহে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে পিটুনি

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেট সময় : ০৪:২৬:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫
  • / ১২ জন পড়েছেন

কলকাতা শহরের বাংলা ভাষায় কথা বলার অপরাধে বাংলাদেশি সন্দেহে এলোপাতাড়ি মারধরের শিকার হয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

জানা গেছে, বুধবার (২০ আগস্ট) রাতে শিয়ালদহ ব্রিজের নিচে মোবাইলের ব্যাক কভার কিনতে যান ওই দুই শিক্ষার্থী। বাংলায় কথা বলায় দোকানদার তাদের বাংলাদেশি কিনা জানতে চায়। এসময় প্রতিবাদ করলে শুরু হয় বাগবিতণ্ডা। পরে তারা হোস্টেলে ফিরে সহপাঠীদের ঘটনাটি জানান। কয়েকজন শিক্ষার্থী মিলে আবারও সেখানে গেলে হিন্দিভাষী ব্যবসায়ীদের একাংশ তাদের ঘিরে ধরে। একপর্যায়ে ছুরি, লাঠি নিয়ে হামলা চালানো হয়।

আহত শিক্ষার্থীদের কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিয়ালদহর মুচিপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও পুলিশ কতজনকে আটক করেছে সে বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। এমনকি আহতদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) আক্রান্তদের এক সহপাঠী গণমাধ্যমকে বলেন, ওরা (ব্যবসায়ী) হিন্দিতে বলছিল, বাংলায় কথা বলছিস, তোদের বাংলাদেশি ছাড়া আর কী বলব! এরপর আমার বন্ধুকে মারল, মোবাইল কেড়ে নিল। একজনকে তো কিছুক্ষণ আটকে রেখেছিল।

ঘটনাটি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতেও তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, এটা ধিক্কার জানিয়ে শেষ হচ্ছে না। আগে তো ভিন রাজ্যে হত। এখন কলকাতায় হচ্ছে। এই পরিবেশ তৈরি করেছে রাজ্যের শাসকদল।

বাংলাপক্ষ নেতা গর্গ চট্টোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গুজরাটে মার খাব, রাজস্থানে মার খাব, দিল্লিতে মার খাব, এখন আবার কলকাতায়ও মার খেতে হচ্ছে? বিজেপি যেখানে ক্ষমতায় নেই, সেই কলকাতায় অপরাধীরা কেন গ্রেপ্তার হবে না?

অভিযোগ উঠেছে, শিয়ালদহ এলাকায় ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাবশালী একটি সংগঠন। তবে দলটির পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। ক্ষোভ জানিয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বামমনস্ক শিক্ষার্থীরাও। তাদের অভিযোগ, ভিনরাজ্যে বাঙালিদের হয়রানি হলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরব হন, অথচ নিজের রাজ্যে এমন ঘটনা ঘটলেও কেন নীরবতা?

বিগত কয়েক মাস ধরে ভিনরাজ্যে বাঙালি শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন নিয়ে সরব ছিল তৃণমূল। এবার কলকাতার বুকেই সেই অভিযোগ উঠল। প্রশ্ন এখন একটাই— আসলে কলকাতায় কতটা নিরাপদ বাঙালিরা? আর এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে আদৌ ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, সেদিকেই এখন নজর।

ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বাংলাদেশি’ সন্দেহে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে পিটুনি

আপডেট সময় : ০৪:২৬:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫

কলকাতা শহরের বাংলা ভাষায় কথা বলার অপরাধে বাংলাদেশি সন্দেহে এলোপাতাড়ি মারধরের শিকার হয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

জানা গেছে, বুধবার (২০ আগস্ট) রাতে শিয়ালদহ ব্রিজের নিচে মোবাইলের ব্যাক কভার কিনতে যান ওই দুই শিক্ষার্থী। বাংলায় কথা বলায় দোকানদার তাদের বাংলাদেশি কিনা জানতে চায়। এসময় প্রতিবাদ করলে শুরু হয় বাগবিতণ্ডা। পরে তারা হোস্টেলে ফিরে সহপাঠীদের ঘটনাটি জানান। কয়েকজন শিক্ষার্থী মিলে আবারও সেখানে গেলে হিন্দিভাষী ব্যবসায়ীদের একাংশ তাদের ঘিরে ধরে। একপর্যায়ে ছুরি, লাঠি নিয়ে হামলা চালানো হয়।

আহত শিক্ষার্থীদের কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিয়ালদহর মুচিপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও পুলিশ কতজনকে আটক করেছে সে বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। এমনকি আহতদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) আক্রান্তদের এক সহপাঠী গণমাধ্যমকে বলেন, ওরা (ব্যবসায়ী) হিন্দিতে বলছিল, বাংলায় কথা বলছিস, তোদের বাংলাদেশি ছাড়া আর কী বলব! এরপর আমার বন্ধুকে মারল, মোবাইল কেড়ে নিল। একজনকে তো কিছুক্ষণ আটকে রেখেছিল।

ঘটনাটি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতেও তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, এটা ধিক্কার জানিয়ে শেষ হচ্ছে না। আগে তো ভিন রাজ্যে হত। এখন কলকাতায় হচ্ছে। এই পরিবেশ তৈরি করেছে রাজ্যের শাসকদল।

বাংলাপক্ষ নেতা গর্গ চট্টোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গুজরাটে মার খাব, রাজস্থানে মার খাব, দিল্লিতে মার খাব, এখন আবার কলকাতায়ও মার খেতে হচ্ছে? বিজেপি যেখানে ক্ষমতায় নেই, সেই কলকাতায় অপরাধীরা কেন গ্রেপ্তার হবে না?

অভিযোগ উঠেছে, শিয়ালদহ এলাকায় ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাবশালী একটি সংগঠন। তবে দলটির পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। ক্ষোভ জানিয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বামমনস্ক শিক্ষার্থীরাও। তাদের অভিযোগ, ভিনরাজ্যে বাঙালিদের হয়রানি হলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরব হন, অথচ নিজের রাজ্যে এমন ঘটনা ঘটলেও কেন নীরবতা?

বিগত কয়েক মাস ধরে ভিনরাজ্যে বাঙালি শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন নিয়ে সরব ছিল তৃণমূল। এবার কলকাতার বুকেই সেই অভিযোগ উঠল। প্রশ্ন এখন একটাই— আসলে কলকাতায় কতটা নিরাপদ বাঙালিরা? আর এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে আদৌ ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, সেদিকেই এখন নজর।