ঢাকা ১০:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাদক ব্যবসায়ীকে নিয়ে জেলা প্রশাসকের বৃক্ষরোপণ

সোজাসাপটা রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০৭:৫২:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
  • / ৫৪ জন পড়েছেন

গ্রীণ ও ক্লিন নারায়ণগঞ্জ কর্মসূচীর আওতায় নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা’র একটি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির ছবি নিয়ে জেলাজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ছবিতে জেলা প্রশাসকের পাশে এক ব্যক্তিকে দেখা গেছে, যিনি এলাকার একজন চিহ্নিত এবং একাধিক মাদক মামলার আসামি হিসেবে পরিচিত। সরকারের মাদকবিরোধী ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ও জেলা প্রশাসকের গ্রীণ ও ক্লিন কর্মসূচীর মধ্যে প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তার এমন কর্মকা-ে জনমনে তীব্র ক্ষোভ ও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
জানা গেছে, জেলা প্রশাসকের গৃহিত গ্রীণ ও ক্লিন নারায়ণগঞ্জ কর্মসূচী বাস্তবায়নে নিউ জিমখানা ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সহযোগীতায় জিমখানা এলাকায় শেখ রাসেল পার্কে বৃক্ষরোপন কর্মসূচী-২০২৫ পালন করা হয়। সেই কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম মিঞা।
জেলা প্রশাসক, নারায়ণগঞ্জ নামে একটি ফেসবুক পেইজ থেকে প্রকাশিত একাধিক ছবিতে দেখা যায়, জেলা প্রশাসক নিজ হাতে গাছের চারা রোপণ করছেন এবং তার ঠিক পিছনে ও পাশেই অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ী হৃদয় দাঁড়িয়ে আছেন। এই ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হৃদয় এর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একাধিক মামলা রয়েছে এবং তিনি পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে তিনি মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এই ছবি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই জেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। জেলাবাসী ও সচেতন মহল নানা রকম মন্তব্য করছেন। সচেতন এলাকাবাসী বলছে, “যেখানে সরকার মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, সেখানে একজন জেলা প্রশাসক কীভাবে একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে পাশে নিয়ে বৃক্ষরোপনের মতো কর্মসূচিতে অংশ নেন? এটি মেনে নেওয়া যায় না।”
রাসেল পার্ক এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, “এটি কি মাদক ব্যবসায়ীদের সমাজে পুনর্বাসনের কোনো নতুন কৌশল, নাকি প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের সাথে তাদের সখ্যের নিদর্শন? আমরা সাধারণ মানুষ এর জবাব চাই।” অনেকেই এটিকে প্রশাসনের ভাবমূর্তির জন্য চরম অবমাননাকর বলে অভিহিত করেছেন।
এই বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আমি তো নিতাইগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ীদের প্রোগ্রামে গিয়েছি। সেখানে বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শংকর সাহা ছিলেন, তাকে ছাড়া তো আমি আর কাউকে চিনি না।
এদিকে, একজন সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার এমন কর্মকা-ে সাধারণ মানুষের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে একটি স্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করেছেন। এছাড়া, জেলা প্রশাসক হিসেবে যে কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে সে সম্পর্কে খোঁজ নেয়ারও আহ্বান জানায় নারায়ণগঞ্জবাসী।

ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মাদক ব্যবসায়ীকে নিয়ে জেলা প্রশাসকের বৃক্ষরোপণ

আপডেট সময় : ০৭:৫২:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

গ্রীণ ও ক্লিন নারায়ণগঞ্জ কর্মসূচীর আওতায় নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা’র একটি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির ছবি নিয়ে জেলাজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ছবিতে জেলা প্রশাসকের পাশে এক ব্যক্তিকে দেখা গেছে, যিনি এলাকার একজন চিহ্নিত এবং একাধিক মাদক মামলার আসামি হিসেবে পরিচিত। সরকারের মাদকবিরোধী ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ও জেলা প্রশাসকের গ্রীণ ও ক্লিন কর্মসূচীর মধ্যে প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তার এমন কর্মকা-ে জনমনে তীব্র ক্ষোভ ও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
জানা গেছে, জেলা প্রশাসকের গৃহিত গ্রীণ ও ক্লিন নারায়ণগঞ্জ কর্মসূচী বাস্তবায়নে নিউ জিমখানা ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সহযোগীতায় জিমখানা এলাকায় শেখ রাসেল পার্কে বৃক্ষরোপন কর্মসূচী-২০২৫ পালন করা হয়। সেই কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম মিঞা।
জেলা প্রশাসক, নারায়ণগঞ্জ নামে একটি ফেসবুক পেইজ থেকে প্রকাশিত একাধিক ছবিতে দেখা যায়, জেলা প্রশাসক নিজ হাতে গাছের চারা রোপণ করছেন এবং তার ঠিক পিছনে ও পাশেই অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ী হৃদয় দাঁড়িয়ে আছেন। এই ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হৃদয় এর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একাধিক মামলা রয়েছে এবং তিনি পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে তিনি মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এই ছবি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই জেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। জেলাবাসী ও সচেতন মহল নানা রকম মন্তব্য করছেন। সচেতন এলাকাবাসী বলছে, “যেখানে সরকার মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, সেখানে একজন জেলা প্রশাসক কীভাবে একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে পাশে নিয়ে বৃক্ষরোপনের মতো কর্মসূচিতে অংশ নেন? এটি মেনে নেওয়া যায় না।”
রাসেল পার্ক এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, “এটি কি মাদক ব্যবসায়ীদের সমাজে পুনর্বাসনের কোনো নতুন কৌশল, নাকি প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের সাথে তাদের সখ্যের নিদর্শন? আমরা সাধারণ মানুষ এর জবাব চাই।” অনেকেই এটিকে প্রশাসনের ভাবমূর্তির জন্য চরম অবমাননাকর বলে অভিহিত করেছেন।
এই বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আমি তো নিতাইগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ীদের প্রোগ্রামে গিয়েছি। সেখানে বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শংকর সাহা ছিলেন, তাকে ছাড়া তো আমি আর কাউকে চিনি না।
এদিকে, একজন সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার এমন কর্মকা-ে সাধারণ মানুষের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে একটি স্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করেছেন। এছাড়া, জেলা প্রশাসক হিসেবে যে কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে সে সম্পর্কে খোঁজ নেয়ারও আহ্বান জানায় নারায়ণগঞ্জবাসী।