আফগানদের হারিয়ে এখন যে সমীকরণ বাংলাদেশের সামনে

- আপডেট সময় : ০৩:৫৭:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ৪ জন পড়েছেন
‘একেকটা টুর্নামেন্ট আসে, আর ক্যালকুলেটর নিয়ে বসে যেতে হয়’ – শ্রীলঙ্কার কাছে হারের পর থেকেই চলছিল নানা হিসাব নিকাশ, প্যারালালে এই কৌতুক চলছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সে কৌতুক একপাশে রাখুন, বাংলাদেশের সুপার ফোর নিশ্চিত করার যে সমীকরণ ছিল শ্রীলঙ্কা ম্যাচের আগে, তার প্রথম অংশটুকু ছিল আফগানিস্তানকে হারানো। সমীকরণের প্রথম কাজটা লিটন দাসরা করে ফেলেছেন। এবার ভাগ্যটা আর নিজেদের হাতে নেই। তাকিয়ে থাকতে হবে শ্রীলঙ্কার দিকে।
সে ম্যাচেও নানান সমীকরণ আছে বাংলাদেশের সামনে। বিষয়টা ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে আসা তানজিদ হাসান তামিমকেও জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। জবাবে মৃদু হেসে তিনি জানালেন, ‘নাহ। খেলাটা তো মাত্র শেষ হলো। এখনও দেখিনি। দেখতে হবে।’ ম্যাচ শেষেই অবশ্য একটা খসড়া হিসেব বলে দিয়েছিলেন ধারাভাষ্যকার রাসেল আরনল্ড। জানিয়েছিলেন আফগানিস্তান যদি জেতে, বাংলাদেশের তবু আশা আছে, শুধু আফগানরা ৭০ রানে জিতলেই হলো!
আফগানদের হারিয়ে বাংলাদেশ এখন বি গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে। সব ম্যাচ খেলে তাদের পয়েন্ট ৪। তবে শীর্ষ তিন দলের ভেতর সবচেয়ে বাজে নেট রান রেট তাদেরই, -০.২৭০। শীর্ষে থাকা শ্রীলঙ্কা দুই ম্যাচের দুটিই জিতেছে, তাদের পয়েন্ট ৪ আর নেট রান রেট ১.৫৪৬। ওদিকে আফগানিস্তান এক ম্যাচ হারলেও হংকংয়ের বিপক্ষে বিশাল জয়ের কারণে তাদের নেট রান রেট এখনও আকাশছোঁয়া, ২.১৫০; তবে তাদের পয়েন্ট ২।
এই পরিস্থিতি থেকে কোনো হিসাব ছাড়াই বাংলাদেশ সুপার ফোরে চলে যেতে পারবে। যদি শ্রীলঙ্কা ম্যাচটা জিতে যায়, তখন শ্রীলঙ্কার পয়েন্ট দাঁড়াবে ৬-এ, বাংলাদেশের ৪ আর আফগানদের পয়েন্ট হবে ২।
তবে আফগানরা শেষ ম্যাচে লঙ্কানদের হারিয়ে দিলে তারা গ্রুপসেরা হয়েই শেষ চারে যাবে। সমীকরণ মিলে গেলে তখনও বাংলাদেশের পক্ষে সুপার ফোরে যাওয়া সম্ভব। নেট রান রেটের দিক থেকে দ্বিতীয় সেরা অবস্থানে থাকা লঙ্কানদের যদি আফগানিস্তান হারাতে পারে ৬৫ রানের ব্যবধানে, তাহলেই কেল্লাফতে। আফগানিস্তান যদি রান তাড়া করতে নামে, তাহলে তাদের জিততে হবে অন্তত ৫০ বল হাতে রেখে। তবেই বাংলাদেশের শেষ চারে খেলা সম্ভব।
আফগানিস্তান আরও কম বল বা রানে জিতলেও কাজ হয়ে যেত বাংলাদেশের। যদি দুই জয়ের ব্যবধানটা আরেকটু বড় হতো, কিংবা লঙ্কানদের জয়টা আরও বিলম্বিত করা যেত। এই তিনটিরই সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের সামনে। প্রথম ম্যাচে হংকংয়ের বিপক্ষে ১৪৩ রান তাড়া করতে বাংলাদেশকে খেলতে হয়েছিল ১৭.৪ ওভার। অথচ চাইলেই ম্যাচটা ১৫ ওভারের ভেতর শেষ করে দেওয়াই যেত, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের নেট রান রেটটাও হতো আরও স্বাস্থ্যকর।
শ্রীলঙ্কা ম্যাচে ১৩৯ রানের পুঁজি নিয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ। সেটা লঙ্কানরা ১৪.৪ ওভারে তাড়া করে ফেলেছিল। সে কারণেই ঋণাত্মক নেট রান রেটে চলে যায় লিটন দাসের দল। অথচ একটু ভালো বোলিং হলেও নেট রান রেটটা থাকতে পারত হাতের নাগালে।
এরপর আফগানিস্তান ম্যাচটা জিতলেও বাংলাদেশ একই ভুল করেছে। ১৯তম ওভারের শেষ দিকে একটা রান আউট মিস করেন মোস্তাফিজুর রহমান, যা হলে দল জিততে পারত অন্তত ২০ রানে, সেটা হলে ইতিবাচক নেট রান রেটে চলে যাওয়া যেত বৈকি! এরপর শেষ ওভারেও এই সুযোগ ছিল। তবে তাসকিন আহমেদ উইকেটের লোভে স্টাম্প টু স্টাম্প বল করে হজম করেছেন দুটো ছক্কা। সে কারণে জয়ের ব্যবধানটাও নেমে এসেছে সিঙ্গেল ডিজিটে। ম্যাচ জিতলেও তাই নেট রান রেটটা রয়ে গেছে রুগ্ন অবস্থাতেই। শেষমেশ সেটাই বাংলাদেশের বিদায়ের কারণ হয়ে দাঁড়ালে আফসোসের অন্ত থাকবে না নিশ্চয়ই!