ঢাকা ০৪:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
প্রতিবাদে মানব বন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে রেলওয়ের উচ্ছেদের পায়তারা : ক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৪:৪০:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ২৬ জন পড়েছেন

নারায়ণগঞ্জ শহরের নিউ চাষাড়ায় রেলওয়ে সম্পত্তি উচ্ছেদের নামে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি দখলের অপচেষ্টার প্রতিবাদে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ১৮৯ নং চাষাড়া ও ১৯২ নং ইসদাইর মৌজার সিএস ও আরএস দাগভুক্ত জমি দীর্ঘদিন ধরে ব্যক্তিমালিকানাধীন। উক্ত জমির সিএস দাগ নং ২৩, ২৪, ২৫, ২৬ এবং আরএস দাগ নং ১০২, ১০৩, ১০৪, ১০৫ সহ একাধিক দাগভুক্ত জমিতে প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারের বসবাস রয়েছে। জমিগুলো দলিলের মাধ্যমে ক্রয় করে, ভূমি অফিস থেকে যাচাই সাপেক্ষে এবং খাজনা প্রদান করেই মালিকরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ভোগদখল করে আসছেন।

এছাড়াও সিএস ও এসএ ২৩, আরএস ১০২ দাগে ‍বিজ্ঞ ২য় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে দেওয়ানী মোকদ্দমা ৬/২০১৪ এবং ৬৪৫/১৫ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এতে উক্ত তফসিল বর্ণিত সম্পত্তিতে স্থিতিবস্থা (ইনজাংশন) আদেশ বলবৎ রয়েছে। এই জমি একোয়ার হয়েছে এ মর্মে কোন গেজেট নাই। প্রকৃত পক্ষে আরএস ১০২ দাগের বর্নিত সম্পত্তি একোয়ার হয় নাই। রেলওয়ে কর্তপক্ষ তফসিল বর্ণিত সম্পত্তির উপর ১২-০২-১৯২৬ সালের একোয়ার করা হবে মর্মে একটি গেজেটে কপি দেখিয়ে তারা অবৈধ প্রক্রিয়ায় উচ্ছেদ করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

১০২ দাগের জমির মালিকরা জানিয়েছেন, তাদের জমি একোয়ারভুক্ত সম্পত্তি নয়। এটি এক সময় খ তপছিলভুক্ত জমি হিসেবে রেকর্ড হয়েছিল পরবর্তিতে সরকার খ তফসিল ভুক্ত জমির সারাদেশে একটি গ্যাজেটের মাধ্যমে অবমুক্ত ঘোষনা করেছেন। রেলওয়ের কখনো এই সম্পত্তির মালিকানা ছিল না এবং বর্তমানেও নাই।

কিন্তু সম্প্রতি কিছু ব্যক্তি রেলওয়ের নাম ভাঙিয়ে মাইকিংসহ ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে লাল রঙ দিয়ে স্থাপনা চিহ্নিত করছে এবং মালিকদের তিন দিনের মধ্যে সরে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এমনকি তারা জানায়, বসবাস অব্যাহত রাখতে হলে রেলওয়ে থেকে লিজ নিতে হবে এবং উচ্ছেদের সময় কোনো কাগজপত্র দেখা হবে না।

এ প্রসঙ্গে নিউ চাষাড়া আদর্শ পঞ্চায়েত কমিটি ও এলাকাবাসীর সভাপতি আঃ গফুর রাজা এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইউসুফ আল নোমান জেলা প্রশাসকের কাছে প্রদত্ত স্মারকলিপিতে বলেন, “আমরা শতবর্ষেরও বেশি সময় ধরে নিয়মিত খাজনা দিয়ে বৈধভাবে আমাদের জমিতে বসবাস করছি। অথচ এখন রেলওয়ের নাম ব্যবহার করে আমাদের উচ্ছেদ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটি চরম অবৈধ ও অমানবিক।”

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ২০১৭ সালে ঢাকা–নারায়ণগঞ্জ ডাবল লাইনের কাজের সময়ও উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছিল, কিন্তু তখন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এই জমির ওপর কোনো দাবি উত্থাপন করেনি। অথচ এখন নতুন করে দখলদারিত্বের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

এলাকাবাসীর দাবি, রেলের নিজস্ব অধিগ্রহণকৃত জায়গায় কাজ চলমান থাকলেও ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে অযথা হয়রানি করা হচ্ছে। এভাবে চাপ প্রয়োগের কারণে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে এবং যে কোনো সময় অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

জেলা প্রশাসকের নিকট প্রদত্ত স্মারকলিপিতে এলাকাবাসী বিষয়টি দ্রুত যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ করতে এলে যদি আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে, তার পূর্ণ দায়ভার রেলওয়ে ও স্থানীয় প্রশাসনকেই বহন করতে হবে।”

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

প্রতিবাদে মানব বন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে রেলওয়ের উচ্ছেদের পায়তারা : ক্ষোভ

আপডেট সময় : ০৪:৪০:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নারায়ণগঞ্জ শহরের নিউ চাষাড়ায় রেলওয়ে সম্পত্তি উচ্ছেদের নামে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি দখলের অপচেষ্টার প্রতিবাদে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ১৮৯ নং চাষাড়া ও ১৯২ নং ইসদাইর মৌজার সিএস ও আরএস দাগভুক্ত জমি দীর্ঘদিন ধরে ব্যক্তিমালিকানাধীন। উক্ত জমির সিএস দাগ নং ২৩, ২৪, ২৫, ২৬ এবং আরএস দাগ নং ১০২, ১০৩, ১০৪, ১০৫ সহ একাধিক দাগভুক্ত জমিতে প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারের বসবাস রয়েছে। জমিগুলো দলিলের মাধ্যমে ক্রয় করে, ভূমি অফিস থেকে যাচাই সাপেক্ষে এবং খাজনা প্রদান করেই মালিকরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ভোগদখল করে আসছেন।

এছাড়াও সিএস ও এসএ ২৩, আরএস ১০২ দাগে ‍বিজ্ঞ ২য় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে দেওয়ানী মোকদ্দমা ৬/২০১৪ এবং ৬৪৫/১৫ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এতে উক্ত তফসিল বর্ণিত সম্পত্তিতে স্থিতিবস্থা (ইনজাংশন) আদেশ বলবৎ রয়েছে। এই জমি একোয়ার হয়েছে এ মর্মে কোন গেজেট নাই। প্রকৃত পক্ষে আরএস ১০২ দাগের বর্নিত সম্পত্তি একোয়ার হয় নাই। রেলওয়ে কর্তপক্ষ তফসিল বর্ণিত সম্পত্তির উপর ১২-০২-১৯২৬ সালের একোয়ার করা হবে মর্মে একটি গেজেটে কপি দেখিয়ে তারা অবৈধ প্রক্রিয়ায় উচ্ছেদ করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

১০২ দাগের জমির মালিকরা জানিয়েছেন, তাদের জমি একোয়ারভুক্ত সম্পত্তি নয়। এটি এক সময় খ তপছিলভুক্ত জমি হিসেবে রেকর্ড হয়েছিল পরবর্তিতে সরকার খ তফসিল ভুক্ত জমির সারাদেশে একটি গ্যাজেটের মাধ্যমে অবমুক্ত ঘোষনা করেছেন। রেলওয়ের কখনো এই সম্পত্তির মালিকানা ছিল না এবং বর্তমানেও নাই।

কিন্তু সম্প্রতি কিছু ব্যক্তি রেলওয়ের নাম ভাঙিয়ে মাইকিংসহ ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে লাল রঙ দিয়ে স্থাপনা চিহ্নিত করছে এবং মালিকদের তিন দিনের মধ্যে সরে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এমনকি তারা জানায়, বসবাস অব্যাহত রাখতে হলে রেলওয়ে থেকে লিজ নিতে হবে এবং উচ্ছেদের সময় কোনো কাগজপত্র দেখা হবে না।

এ প্রসঙ্গে নিউ চাষাড়া আদর্শ পঞ্চায়েত কমিটি ও এলাকাবাসীর সভাপতি আঃ গফুর রাজা এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইউসুফ আল নোমান জেলা প্রশাসকের কাছে প্রদত্ত স্মারকলিপিতে বলেন, “আমরা শতবর্ষেরও বেশি সময় ধরে নিয়মিত খাজনা দিয়ে বৈধভাবে আমাদের জমিতে বসবাস করছি। অথচ এখন রেলওয়ের নাম ব্যবহার করে আমাদের উচ্ছেদ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটি চরম অবৈধ ও অমানবিক।”

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ২০১৭ সালে ঢাকা–নারায়ণগঞ্জ ডাবল লাইনের কাজের সময়ও উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছিল, কিন্তু তখন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এই জমির ওপর কোনো দাবি উত্থাপন করেনি। অথচ এখন নতুন করে দখলদারিত্বের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

এলাকাবাসীর দাবি, রেলের নিজস্ব অধিগ্রহণকৃত জায়গায় কাজ চলমান থাকলেও ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে অযথা হয়রানি করা হচ্ছে। এভাবে চাপ প্রয়োগের কারণে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে এবং যে কোনো সময় অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

জেলা প্রশাসকের নিকট প্রদত্ত স্মারকলিপিতে এলাকাবাসী বিষয়টি দ্রুত যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ করতে এলে যদি আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে, তার পূর্ণ দায়ভার রেলওয়ে ও স্থানীয় প্রশাসনকেই বহন করতে হবে।”