ঢাকা ০১:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
খুনিকে জীবিত গ্রেফতার চাই, বন্দুকযুদ্ধের নাটক চাই না: ইনকিলাব মঞ্চ বছরের সবচেয়ে ছোট দিন আজ ‘ভোটের গাড়ি’র প্রচার শুরু আজ পৃথিবীতে টিকে থাকা শুধু ডিগ্রি দিয়ে সম্ভব নয়- প্রয়োজন সততা: সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা রাসেল গার্মেন্টসে অসন্তোষ, নেপথ্যে মাসুম বিল্লাহ শাজাহানপুরে ট্রাকের নিচে ঢুকে মোটরসাইকেল আরোহী কলেজছাত্র নিহত, আহত ২ নারায়ণগঞ্জ ক্লাব পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনে ফের এম সোলায়মানের নিরংকুশ বিজয় সীমান্তে অনুপ্রবেশের অভিযোগে বিএসএফ সদস্য আটক নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ইসির উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ফতুল্লায় ফেরি থেকে ট্রাকসহ পাঁচ যান ধলেশ্বরী নদীতে, নিহত ৩

ডাকাত প্রবণ আড়াইহাজারে ডাকাতি চলছেই

চীফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ১০:১৩:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫
  • / ২০৯ জন পড়েছেন

নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলা ডাকাতদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গত দুই মাসে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক সংঘবদ্ধ ডাকাতির ঘটনা ঘটায় মানুষের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় চলাফেরা এখন রীতিমতো দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে অনেকের জন্য। পুলিশ প্রশাসনের টহল ও নজরদারির আশ্বাস থাকা সত্ত্বেও ডাকাতি কমছে না, বরং সময়ের ব্যবধানে বেড়েই চলেছে এর মাত্রা।
গত এপ্রিল ও মে মাসে আড়াইহাজার উপজেলার অন্তত ৬টি এলাকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো:
খগকান্দায় ডাকাতি:
গত ২৫ মে গভীর রাতে খাগকান্দা এলাকায় ৮-১০ জনের একটি সশস্ত্র ডাকাতদল এক কৃষকের বাড়িতে হানা দেয়। অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে তারা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ৭ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নেয়।
বিশনন্দী এলাকায় ভয়াবহ হামলা:
মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিষনন্দী ফেরিঘাট সংলগ্ন এলাকায় এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি হয়। এ ঘটনায় গৃহকর্তা এবং তার স্ত্রী গুরুতর আহত হন। ডাকাতদল বাঁশ, দা ও বন্দুকের ভয় দেখিয়ে মূল্যবান মালামাল লুট করে।
মোক্তারপুর এলাকায় ডাকাতি:
এপ্রিলের শেষ দিকে মোক্তারপুর এলাকায় একটি মুদি দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। দোকান বন্ধ করার সময় ৫-৬ জন যুবক দোকানদারকে কুপিয়ে আহত করে নগদ টাকা ও পণ্যের মালামাল নিয়ে যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ডাকাতরা একাধিকবার এলাকায় ঘুরে ঘুরে রেকি করে এবং তারপর নির্ধারিত বাড়ি কিংবা দোকানে হানা দেয়। অধিকাংশ সময়ই তারা গুলি, ককটেল বা ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে, ফলে আতঙ্কে থাকা ছাড়া সাধারণ মানুষের আর কোনো উপায় থাকছে না।
বিশনন্দী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন,রাতে ঘুমাতে পারি না। স্ত্রী, বাচ্চাদের নিয়েও চিন্তায় থাকি। রাস্তায় অপরিচিত কেউ দেখলেই ভয় লাগে। মনে হয় কখন যেন আবার ডাকাত পড়বে।
ডাকাতি বাড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে স্থানীয়রা পুলিশের টহল ব্যবস্থার দুর্বলতা, অপর্যাপ্ত জনবল এবং স্থানীয় চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীদের সাথে ডাকাত দলের যোগসূত্রকে দায়ী করছেন। অনেক সময় স্থানীয় থানায় অভিযোগ জানালেও তারা তৎপরতা দেখায় না বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, অনেক সময় দেখা যাচ্ছে, ডাকাত দলের সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী রাজনৈতিক ঘেঁষা নেতাদের যোগসূত্র রয়েছে বলে গুঞ্জন উঠেছে। ফলে অনেক ডাকাত গ্রেফতার হলেও অল্পদিনের মধ্যেই জামিনে বেরিয়ে এসে পুনরায় অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। ফলে,এই চক্রটিই দিনকে দিন আরও সাহসী হয়ে উঠছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় অংশ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাসমিন আক্তার জানান, আড়াইহাজারে যে সকল এলাকাগুলোতে ডাকাতি হয় সেগুলো তিন চার কিলোমিটার ভেতরে। সেখানে পায়ে হেঁটে যেতে হয়। পুলিশ তো গাড়ি নিয়ে সেখানে যেতে পারে না। গত মাসে আড়াইহাজারে যে ডাকাতি হয়েছে সে ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনজন গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আড়াইহাজারে দুইটি ইউনিয়ন রয়েছে। সেখানে প্রতিটি ঘরে ডাকাত দলের সদস্য রয়েছে। বংশানুক্রমে তারা ডাকাত এবং এই পরিচয়ে তারা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। এরা বেশিরভাগ জামিন পেয়ে এসেছে আবার চলে যাচ্ছে। আমরা ডাকাতদের গ্রেপ্তার করি তারা আবার জামিনে চলে আসে।

ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ডাকাত প্রবণ আড়াইহাজারে ডাকাতি চলছেই

আপডেট সময় : ১০:১৩:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলা ডাকাতদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গত দুই মাসে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক সংঘবদ্ধ ডাকাতির ঘটনা ঘটায় মানুষের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় চলাফেরা এখন রীতিমতো দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে অনেকের জন্য। পুলিশ প্রশাসনের টহল ও নজরদারির আশ্বাস থাকা সত্ত্বেও ডাকাতি কমছে না, বরং সময়ের ব্যবধানে বেড়েই চলেছে এর মাত্রা।
গত এপ্রিল ও মে মাসে আড়াইহাজার উপজেলার অন্তত ৬টি এলাকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো:
খগকান্দায় ডাকাতি:
গত ২৫ মে গভীর রাতে খাগকান্দা এলাকায় ৮-১০ জনের একটি সশস্ত্র ডাকাতদল এক কৃষকের বাড়িতে হানা দেয়। অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে তারা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ৭ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নেয়।
বিশনন্দী এলাকায় ভয়াবহ হামলা:
মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিষনন্দী ফেরিঘাট সংলগ্ন এলাকায় এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি হয়। এ ঘটনায় গৃহকর্তা এবং তার স্ত্রী গুরুতর আহত হন। ডাকাতদল বাঁশ, দা ও বন্দুকের ভয় দেখিয়ে মূল্যবান মালামাল লুট করে।
মোক্তারপুর এলাকায় ডাকাতি:
এপ্রিলের শেষ দিকে মোক্তারপুর এলাকায় একটি মুদি দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। দোকান বন্ধ করার সময় ৫-৬ জন যুবক দোকানদারকে কুপিয়ে আহত করে নগদ টাকা ও পণ্যের মালামাল নিয়ে যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ডাকাতরা একাধিকবার এলাকায় ঘুরে ঘুরে রেকি করে এবং তারপর নির্ধারিত বাড়ি কিংবা দোকানে হানা দেয়। অধিকাংশ সময়ই তারা গুলি, ককটেল বা ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে, ফলে আতঙ্কে থাকা ছাড়া সাধারণ মানুষের আর কোনো উপায় থাকছে না।
বিশনন্দী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন,রাতে ঘুমাতে পারি না। স্ত্রী, বাচ্চাদের নিয়েও চিন্তায় থাকি। রাস্তায় অপরিচিত কেউ দেখলেই ভয় লাগে। মনে হয় কখন যেন আবার ডাকাত পড়বে।
ডাকাতি বাড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে স্থানীয়রা পুলিশের টহল ব্যবস্থার দুর্বলতা, অপর্যাপ্ত জনবল এবং স্থানীয় চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীদের সাথে ডাকাত দলের যোগসূত্রকে দায়ী করছেন। অনেক সময় স্থানীয় থানায় অভিযোগ জানালেও তারা তৎপরতা দেখায় না বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, অনেক সময় দেখা যাচ্ছে, ডাকাত দলের সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী রাজনৈতিক ঘেঁষা নেতাদের যোগসূত্র রয়েছে বলে গুঞ্জন উঠেছে। ফলে অনেক ডাকাত গ্রেফতার হলেও অল্পদিনের মধ্যেই জামিনে বেরিয়ে এসে পুনরায় অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। ফলে,এই চক্রটিই দিনকে দিন আরও সাহসী হয়ে উঠছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় অংশ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাসমিন আক্তার জানান, আড়াইহাজারে যে সকল এলাকাগুলোতে ডাকাতি হয় সেগুলো তিন চার কিলোমিটার ভেতরে। সেখানে পায়ে হেঁটে যেতে হয়। পুলিশ তো গাড়ি নিয়ে সেখানে যেতে পারে না। গত মাসে আড়াইহাজারে যে ডাকাতি হয়েছে সে ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনজন গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আড়াইহাজারে দুইটি ইউনিয়ন রয়েছে। সেখানে প্রতিটি ঘরে ডাকাত দলের সদস্য রয়েছে। বংশানুক্রমে তারা ডাকাত এবং এই পরিচয়ে তারা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। এরা বেশিরভাগ জামিন পেয়ে এসেছে আবার চলে যাচ্ছে। আমরা ডাকাতদের গ্রেপ্তার করি তারা আবার জামিনে চলে আসে।