ঢাকা ০১:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পাকিস্তানে প্রক্সি যুদ্ধ জোরদার করেছে দিল্লি—অভিযোগ সেনাপ্রধান মুনিরের

পাকিস্তানে প্রক্সি যুদ্ধ জোরদার করেছে দিল্লি—অভিযোগ সেনাপ্রধান মুনিরের

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেট সময় : ০৩:৩১:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
  • / ৯ জন পড়েছেন

ভারতের বিরুদ্ধে ১৯ দিনের সামরিক সংঘর্ষে (মারকায়ে হক) পরাজয়ের পর পাকিস্তানে ছায়াযুদ্ধ বা ‘প্রক্সি ওয়ার’ আরও তীব্র করেছে ভারত—এমন অভিযোগ তুলেছেন পাকিস্তানের সেনাবাহিনী প্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির। তিনি বলেন, পাকিস্তানের ভূখণ্ডে অস্থিতিশীলতা ও বিভাজন সৃষ্টির জন্য ভারত সন্ত্রাসী প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোর সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা করছে। এর মাধ্যমে দিল্লি ‘ফিতনা-তুল-খাওয়ারিজ’ ও ‘ফিতনা-তুল-হিন্দুস্তান’-এর মতো হাইব্রিড যুদ্ধের কৌশল বাস্তবায়ন করছে।

বুধবার বেলুচিস্তানে অনুষ্ঠিত ১৬তম ন্যাশনাল ওয়ার্কশপে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেন সেনাপ্রধান। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণসংযোগ বিভাগ আইএসপিআর এক বিবৃতিতে এই বক্তব্য তুলে ধরে।

মুনির বলেন, বেলুচিস্তানের দেশপ্রেমিক জনগণের মনোবল ভাঙতেই ভারতের এই সন্ত্রাসী প্রকল্প। তবে যেভাবে তারা ‘মারকায়ে হক’-এ অপমানজনক পরাজয়ের শিকার হয়েছিল, একই পরিণতি এসব প্রক্সি গোষ্ঠীরও হবে।

তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্ম, গোষ্ঠী বা নৃগোষ্ঠী থাকে না। তাই এসব হুমকি মোকাবেলায় দেশের সব স্তরের মানুষের সম্মিলিত জবাব অত্যাবশ্যক। বেলুচিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জাতীয় সংহতি রক্ষায় সেনাবাহিনী সর্বাত্মক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানান তিনি।

প্রক্সি যুদ্ধ কী?

প্রক্সি যুদ্ধ হলো এমন একধরনের যুদ্ধ বা সংঘাত, যেখানে কোনো দুটি প্রধান রাষ্ট্র বা শক্তি সরাসরি একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই না করে, তাদের স্বার্থ রক্ষায় অন্য দেশ, গোষ্ঠী বা মিলিশিয়া বাহিনীকে ব্যবহার করে লড়াই চালায়।

এক দেশ অন্য কোনো দেশ বা গোষ্ঠীকে অস্ত্র, অর্থ বা প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করে, যাতে সেই গোষ্ঠী বা বাহিনী তাদের প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। এতে করে মূল দেশটি সরাসরি যুদ্ধ না করেও তার রাজনৈতিক বা কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করে।

স্নায়ুযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন একে অপরের বিরুদ্ধে অনেক প্রক্সি যুদ্ধ চালিয়েছে—যেমন ভিয়েতনাম যুদ্ধ, আফগান যুদ্ধ, কোরিয়া যুদ্ধ ইত্যাদি।

পাকিস্তানের অভিযোগ অনুযায়ী, ভারত বেলুচিস্তানে কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী বা বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করছে, যাতে সেগুলো পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কার্যক্রম চালায়। এটাকেই পাকিস্তান ভারতের প্রক্সি যুদ্ধ হিসেবে বর্ণনা করছে।

ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

পাকিস্তানে প্রক্সি যুদ্ধ জোরদার করেছে দিল্লি—অভিযোগ সেনাপ্রধান মুনিরের

পাকিস্তানে প্রক্সি যুদ্ধ জোরদার করেছে দিল্লি—অভিযোগ সেনাপ্রধান মুনিরের

আপডেট সময় : ০৩:৩১:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

ভারতের বিরুদ্ধে ১৯ দিনের সামরিক সংঘর্ষে (মারকায়ে হক) পরাজয়ের পর পাকিস্তানে ছায়াযুদ্ধ বা ‘প্রক্সি ওয়ার’ আরও তীব্র করেছে ভারত—এমন অভিযোগ তুলেছেন পাকিস্তানের সেনাবাহিনী প্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির। তিনি বলেন, পাকিস্তানের ভূখণ্ডে অস্থিতিশীলতা ও বিভাজন সৃষ্টির জন্য ভারত সন্ত্রাসী প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোর সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা করছে। এর মাধ্যমে দিল্লি ‘ফিতনা-তুল-খাওয়ারিজ’ ও ‘ফিতনা-তুল-হিন্দুস্তান’-এর মতো হাইব্রিড যুদ্ধের কৌশল বাস্তবায়ন করছে।

বুধবার বেলুচিস্তানে অনুষ্ঠিত ১৬তম ন্যাশনাল ওয়ার্কশপে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেন সেনাপ্রধান। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণসংযোগ বিভাগ আইএসপিআর এক বিবৃতিতে এই বক্তব্য তুলে ধরে।

মুনির বলেন, বেলুচিস্তানের দেশপ্রেমিক জনগণের মনোবল ভাঙতেই ভারতের এই সন্ত্রাসী প্রকল্প। তবে যেভাবে তারা ‘মারকায়ে হক’-এ অপমানজনক পরাজয়ের শিকার হয়েছিল, একই পরিণতি এসব প্রক্সি গোষ্ঠীরও হবে।

তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্ম, গোষ্ঠী বা নৃগোষ্ঠী থাকে না। তাই এসব হুমকি মোকাবেলায় দেশের সব স্তরের মানুষের সম্মিলিত জবাব অত্যাবশ্যক। বেলুচিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জাতীয় সংহতি রক্ষায় সেনাবাহিনী সর্বাত্মক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানান তিনি।

প্রক্সি যুদ্ধ কী?

প্রক্সি যুদ্ধ হলো এমন একধরনের যুদ্ধ বা সংঘাত, যেখানে কোনো দুটি প্রধান রাষ্ট্র বা শক্তি সরাসরি একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই না করে, তাদের স্বার্থ রক্ষায় অন্য দেশ, গোষ্ঠী বা মিলিশিয়া বাহিনীকে ব্যবহার করে লড়াই চালায়।

এক দেশ অন্য কোনো দেশ বা গোষ্ঠীকে অস্ত্র, অর্থ বা প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করে, যাতে সেই গোষ্ঠী বা বাহিনী তাদের প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। এতে করে মূল দেশটি সরাসরি যুদ্ধ না করেও তার রাজনৈতিক বা কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করে।

স্নায়ুযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন একে অপরের বিরুদ্ধে অনেক প্রক্সি যুদ্ধ চালিয়েছে—যেমন ভিয়েতনাম যুদ্ধ, আফগান যুদ্ধ, কোরিয়া যুদ্ধ ইত্যাদি।

পাকিস্তানের অভিযোগ অনুযায়ী, ভারত বেলুচিস্তানে কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী বা বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করছে, যাতে সেগুলো পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কার্যক্রম চালায়। এটাকেই পাকিস্তান ভারতের প্রক্সি যুদ্ধ হিসেবে বর্ণনা করছে।