ঢাকা ০৩:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ক্যারিবিয়ান দ্বীপে বাড়ি কিনলেই মিলছে পাসপোর্ট

ক্যারিবিয়ান দ্বীপে বাড়ি কিনলেই মিলছে পাসপোর্ট

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেট সময় : ১০:০০:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
  • / ১১ জন পড়েছেন

পূর্ব ক্যারিবিয়ার নির্মল সমুদ্রসৈকত আর শান্তিপূর্ণ জীবনযাত্রার পাশাপাশি এখন ক্রেতাদের আকর্ষণ করছে একটি নতুন পাসপোর্ট।

সম্প্রতি এই অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশ বিনিয়োগের বিনিময়ে নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রস্তাব করছে, যার চাহিদা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার কারণে উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে।

অ্যান্টিগুয়া ও বার্বুডা, ডোমিনিকা, গ্রেনাডা, সেন্ট কিটস ও নেভিস এবং সেন্ট লুসিয়া এই পাঁচটি ক্যারিবিয়ান দেশ কমপক্ষে দুই লাখ ডলার বিনিয়োগ করলে নাগরিকত্ব প্রদান করে। এই সুবিধার আওতায় একটি বাড়ি কিনলে ক্রেতারা পাসপোর্টও পাবেন, যা দিয়ে যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপের শেনজেন অঞ্চলসহ ১৫০টিরও বেশি দেশে ভিসা ছাড়াই ভ্রমণ করা যাবে।

ধনী ক্রেতাদের জন্য এই অঞ্চলের মূল আকর্ষণ হলো কর-মুক্ত সুবিধা। এখানে মূলধন কর, উত্তরাধিকার কর এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে আয়করও নেই। ক্যারিবিয়ানে এই সব দেশের নাগরিকত্ব স্কিমে ক্রেতাদের নিজেদের মূল নাগরিকত্ব ধরে রাখার অনুমতি দেওয়া হয়।

অ্যান্টিগুয়ার একটি বিলাসবহুল রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ‘লাক্সারি লোকেশনস’-এর মালিক নাদিয়া ডাইসন জানান, বর্তমানে প্রায় ৭০% ক্রেতাই নাগরিকত্বের জন্য আগ্রহী, যাদের বেশিরভাগই মার্কিন নাগরিক। যদিও অ্যান্টিগুয়ার নাগরিকত্ব স্কিমে বসবাসের বাধ্যবাধকতা নেই, তবুও কিছু ক্রেতা স্থায়ীভাবে সেখানে থাকার পরিকল্পনা করছেন। ডাইসন বলেন, ইতিমধ্যেই কয়েকজন সেখানে স্থানান্তরিত হয়েছেন।

বিনিয়োগ-ভিত্তিক অভিবাসন বিষয়ক কনসাল্টিং ফার্ম হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে ক্যারিবিয়ান দেশগুলোর নাগরিকত্ব স্কিমে আবেদনকারীদের মধ্যে মার্কিন নাগরিকদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও ইউক্রেন, তুরস্ক, নাইজেরিয়া এবং চীন থেকেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আবেদন পড়ছে। ২০২৪ সালের শেষ তিন মাস থেকে এই স্কিমগুলোর আবেদন ১২% বৃদ্ধি পেয়েছে।

তবে এই ধরনের স্কিম নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগও রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ক্যারিবিয়ান দেশগুলোর জন্য ভিসা-মুক্ত প্রবেশাধিকার স্থগিত করার হুমকি দিয়েছে, কারণ তাদের আশঙ্কা, শিথিল নিয়ম-কানুনের সুযোগ নিয়ে অপরাধীরা বৈধ নাগরিকত্ব পেতে পারে। একইভাবে, যুক্তরাষ্ট্রও আগেই সতর্ক করেছে যে, এই প্রোগ্রামগুলো কর ফাঁকি ও আর্থিক অপরাধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।

ইউরোপীয় কমিশন ইতিমধ্যেই এই পাঁচটি ক্যারিবিয়ান দেশের নাগরিকত্ব স্কিম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং ২০২২ সাল থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ক্যারিবিয়ান দ্বীপে বাড়ি কিনলেই মিলছে পাসপোর্ট

ক্যারিবিয়ান দ্বীপে বাড়ি কিনলেই মিলছে পাসপোর্ট

আপডেট সময় : ১০:০০:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

পূর্ব ক্যারিবিয়ার নির্মল সমুদ্রসৈকত আর শান্তিপূর্ণ জীবনযাত্রার পাশাপাশি এখন ক্রেতাদের আকর্ষণ করছে একটি নতুন পাসপোর্ট।

সম্প্রতি এই অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশ বিনিয়োগের বিনিময়ে নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রস্তাব করছে, যার চাহিদা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার কারণে উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে।

অ্যান্টিগুয়া ও বার্বুডা, ডোমিনিকা, গ্রেনাডা, সেন্ট কিটস ও নেভিস এবং সেন্ট লুসিয়া এই পাঁচটি ক্যারিবিয়ান দেশ কমপক্ষে দুই লাখ ডলার বিনিয়োগ করলে নাগরিকত্ব প্রদান করে। এই সুবিধার আওতায় একটি বাড়ি কিনলে ক্রেতারা পাসপোর্টও পাবেন, যা দিয়ে যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপের শেনজেন অঞ্চলসহ ১৫০টিরও বেশি দেশে ভিসা ছাড়াই ভ্রমণ করা যাবে।

ধনী ক্রেতাদের জন্য এই অঞ্চলের মূল আকর্ষণ হলো কর-মুক্ত সুবিধা। এখানে মূলধন কর, উত্তরাধিকার কর এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে আয়করও নেই। ক্যারিবিয়ানে এই সব দেশের নাগরিকত্ব স্কিমে ক্রেতাদের নিজেদের মূল নাগরিকত্ব ধরে রাখার অনুমতি দেওয়া হয়।

অ্যান্টিগুয়ার একটি বিলাসবহুল রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ‘লাক্সারি লোকেশনস’-এর মালিক নাদিয়া ডাইসন জানান, বর্তমানে প্রায় ৭০% ক্রেতাই নাগরিকত্বের জন্য আগ্রহী, যাদের বেশিরভাগই মার্কিন নাগরিক। যদিও অ্যান্টিগুয়ার নাগরিকত্ব স্কিমে বসবাসের বাধ্যবাধকতা নেই, তবুও কিছু ক্রেতা স্থায়ীভাবে সেখানে থাকার পরিকল্পনা করছেন। ডাইসন বলেন, ইতিমধ্যেই কয়েকজন সেখানে স্থানান্তরিত হয়েছেন।

বিনিয়োগ-ভিত্তিক অভিবাসন বিষয়ক কনসাল্টিং ফার্ম হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে ক্যারিবিয়ান দেশগুলোর নাগরিকত্ব স্কিমে আবেদনকারীদের মধ্যে মার্কিন নাগরিকদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও ইউক্রেন, তুরস্ক, নাইজেরিয়া এবং চীন থেকেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আবেদন পড়ছে। ২০২৪ সালের শেষ তিন মাস থেকে এই স্কিমগুলোর আবেদন ১২% বৃদ্ধি পেয়েছে।

তবে এই ধরনের স্কিম নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগও রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ক্যারিবিয়ান দেশগুলোর জন্য ভিসা-মুক্ত প্রবেশাধিকার স্থগিত করার হুমকি দিয়েছে, কারণ তাদের আশঙ্কা, শিথিল নিয়ম-কানুনের সুযোগ নিয়ে অপরাধীরা বৈধ নাগরিকত্ব পেতে পারে। একইভাবে, যুক্তরাষ্ট্রও আগেই সতর্ক করেছে যে, এই প্রোগ্রামগুলো কর ফাঁকি ও আর্থিক অপরাধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।

ইউরোপীয় কমিশন ইতিমধ্যেই এই পাঁচটি ক্যারিবিয়ান দেশের নাগরিকত্ব স্কিম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং ২০২২ সাল থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।