মারা যাওয়া রোগীর চিকিৎসা হয় যে হাসপাতালে!

- আপডেট সময় : ০৪:০৬:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
- / ১১৭ জন পড়েছেন
নারায়ণগঞ্জের প্রাণকেন্দ্রে গড়ে ওঠা একটি চিকিৎসাকেন্দ্র পরিণত হয়েছে পরিত্যক্ত ও ভূতুরে বাড়ীর পরিবেশে। ইসলামী হাট সেন্টার নামে পরিচিত এই চিকিৎসালয়টি শুরুতে নগরবাসীর আস্থার প্রতীক হিসেবে পরিচিতি লাভ করলেও বর্তমানে এটি যেন এক ভূতুড়ে বাড়ি চারদিকে ময়লা,আবর্জনা, নষ্ট যন্ত্রপাতি, ভাঙা দরজা জানালা, বারান্দায় ও জানালায় ভেজা কাপড় ঝুলানো, ছড়ানো,ছিটানো পুরনো ওষুধ ও পচা গন্ধে আচ্ছন্ন পরিবেশ।
নগরীর অন্যতম পুরনো জনবহুল এলাকার কেন্দ্রস্থলে ছিল ইসলামী হাট সেন্টার চিকিৎসালয়। সমাজসেবামূলক উদ্দেশ্য নিয়েই গড়ে ওঠে এই প্রতিষ্ঠান। লক্ষ্য ছিল গরিব, মধ্যবিত্ত ও সুবিধাবঞ্চিতদের কম খরচে চিকিৎসা প্রদান। তবে পর্যায়ক্রমে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় এই প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা। প্রবেশ পথেই দেখা যায়, অপরিষ্কার অপরিছন্ন ও অগোছালো পরিবেশ। পুরো ভবনজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ব্যবহার না হওয়া ওষুধের প্যাকেট, ফেলে দেওয়া স্যালাইন, ছেঁড়া পর্দা ও নষ্ট যন্ত্রপাতি।
স্থানীয় বাসিন্দা হাজী নাসির বলেন,আমি এইএলাকায় থাকি অনেক বছর হলো সে সুবাদে এতোদিনে এই হাসপাতালের নামে কোনদিন সুনাম শুনিনি। অনেক সময় রোগীদের স্বজনদের সাথে হাসপাতালের লোকজনদের সাথে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনাও ঘটতে দেখ গেছে।
ছোঁয়া নামের এক ভুক্তভোগী জানায়, ২০২১সালে আমার মা হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়লে আমরা ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায় তখন সেখানে থাকা চিকিৎসক বলেন আপনারা হার্ট সেন্টারে নিয়ে যান । পরে আমরা আমার মাকে ইসলামী হার্ট সেন্টারে নিয়ে যাই তবে সেখানে নেওয়ার পরে আমার মা মারা জান ব্যাপারটি সেখানে থাকা চিকিৎসকরা বুঝতে পেরেও আমার মাকে ভর্তি নেন এবং বেশকিছুক্ষন ওটি রুমে রাখার পর বিভিন্ন টেস্ট করতে বলেন আমাদের। সকল টেস্ট শেষ হলে তারা জানান আমাদের মা মারা গেছেন এবং হাতে একটি লম্বা বিল ধরিয়েন দেন। আমরা সবাই ব্যাপারটি তখন বুঝতে পেরেও চেপে যাই কারণ পারিবারিক অবস্থা তখন সবার ভালো ছিলোনা । পরে আমরা জানতে পারি এইখানে নাকি প্রায় সময় এমন করা হয়। মরা ব্যক্তিকে চিকিৎসার নামে টাকা হাতিয়ে নেনে তারা।
আমার বাবার বুকে হঠাতৎ ব্যাথা অনুভব করলে তাকে দ্রুত ইসলামী হার্ট সেন্টারে ভর্তি করিয়েছিলাম কারণ ঢাকা যাওয়ার সময় ছিলোনা তখন। ভর্তির পরে তাঁদের একজন চিকিৎসক বাবার অবস্থা দেখে বলেছিলেন যে ঢাকা নিয়ে যান দ্রুত তবে তাঁদের অফিস থেকে জানায় সমস্যা নেই ঢাকা থেকে আমাদের চিকিৎসক আসবে আপনারা অপেক্ষা করুন। তবে চিকিৎসক আসা পর্যন্ত আমার বাবাকে আমরা আর বাঁচাতে পারিনি। সেদিন যদি ঢাকা নিতে পারাম হয়তো বাবা আজকে বেচে থাকতো। তাঁদের এমন অবহেলা ও কেবিন বাণিজ্যের কারণে ঝড়ে যাচ্ছে কতশত প্রাণ।
এমন অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করতে চাইলে ব্যর্থ হন প্রতিবেদক তাঁদের পক্ষ থেকে তারা কোন কথা বলতে চাননি প্রতিবেদকের সাথে তাই তাদের কোন বক্ত্যব নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এই বিষয়ে কথা বলতে নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মুশিউর রহমানকে মুঠোফোন করলে তিনি জানায়, আমাদের কাছে এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ আসেনি কেউ লিখিত অভিযোগ করলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নিব। তবে এর আগে আমিও শুনেছি এই হাসপাতালের পরিবেশ নোরংরা তাই আমি নিজেই এর মধ্যেই একদিন ভিজিটে যাবো।