ঢাকা ০৫:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সিদ্ধিরগঞ্জে সরকারি জায়গাকে নিজের দাবি মুক্তিযোদ্ধার

সিদ্ধিরগঞ্জে সরকারি জায়গাকে নিজের দাবি মুক্তিযোদ্ধার

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেট সময় : ০৫:০০:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
  • / ১২ জন পড়েছেন

স্টাফ রিপোর্টার
সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকায় সরকারি জায়গাকে নিজের দাবি করে চরম বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন মোল্লা। অবৈধভাবে সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে তুলা দোকানের ভাড়া বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই মুক্তিযোদ্ধা বিএনপি নেতা দেলোয়ার হোসেন খোকনসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি ও দোকান ভাঙচুরের অভিযোগ তুলায় এলাকায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, গোদনাইল ২ নং ঢাকেশ্বরী বাসস্ট্যাণ্ড এলাকায় সরকারি জায়গা দখল করে মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন মোল্লা ভাড়া বাণিজ্য করে আসছিলেন। এতে গোদনাইল কিশোর সংঘ (রেজি নং-৩১৯) এর কার্যালয়ের পরিবেশ ও সৌন্দর্য নষ্ট হয়। তাই জনস্বার্থে কিশোর সংঘের নেতারা স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে আলোচনা করে দোকানটি সরিয়ে ফেলার জন্য মহিউদ্দিন মোল্লাকে অনুরোধ জানান। কিন্তু মহিউদ্দিন মোল্লা তা কর্ণপাত করেননি।
গোদনাইল কিশোর সংঘের সভাপতি মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ক্লাবের পরিবেশ ও সৌন্দর্যবর্ধনের লক্ষ্যে সামাজিক স্বার্থে মহিউদ্দিন মোল্লার টং দোকানটি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ ভিত্তিহীন।
কাøবের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম প্রধান বলেন, সরকারি জমি দখল করে ক্লাবের সামনে টং দোকান দিয়ে ভাড়া আদায় করতেন মহিউদ্দিন মোল্লা। এলাকার কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সম্মতিক্রমে বৃহস্পতিবার দুপুরে ক্লাবের সামন থেকে দোকানটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ভাঙচুর বা চাঁদা দাবির অভিযোগটি মিথ্যা।
ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ জামাল প্রধান বলেন, প্রকৃতপক্ষে এটি আমার পৈত্রিক জমি। সরকার আমাদের কাছ থেকে এ্যাকোয়ার করে নিয়েছে। জমিটি পরিত্যক্ত থাকায় এলাকার স্বার্থে আমরা জমিতে ক্লাবের কার্যালয় নির্মাণে সম্মতি প্রদান করি। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন মোল্লা ক্লাবের সামনে সরকারি জমি দখল করে দোকান দিয়ে ভাড়া দেয়। জনস্বার্থে ক্লাবের লোকজন তার দোকান সরিয়ে দিয়েছে। এতে তার ভাড়া বাণিজ্য বন্ধ হয়ে পড়ায় বিএনপি নেতা দেলোয়ার হোসেন খোকনসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে দোকান ভাঙচুর ও চাঁদা দাবির মিথ্যা অভিযোগ তুলেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেন খোকনের নির্দেশে দোকান ভাঙচুর ও চাঁদা দাবির যে অভিযোগ মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন মোল্লা উত্থাপন করেছেন তা সঠিক নয় বলে দাবি করেন কিশোর সংঘের নেতারা। তাদের দাবি ক্লাবের উদ্যোগে দোকান সরানো হয়েছে। এতে দেলোয়ার হোসেন খোকনের কোন সম্পর্ক নেই।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গোদনাইল ২ নং ঢাকেস্বরী বাসস্ট্যাণ্ড এলাকায় সরকারি জায়গা দখল করে দোকানপাট নির্মাণ, ভাড়া ও চাঁদাবাজি করছে মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন মোল্লার ছেলে হুমায়ূন খালেদ মুরাদ ও তার মেয়ের জামাই শফিকুল ইসলাম শাকিল। এ শাকিল সাবেক এমপি শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমানের অন্যতম সহযোগী ও শাহরিয়ার রহমান বাপ্পির আপন ছোট ভাই। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমল থেকে শাকিল ও তার ভগ্নিপতি শফিকুল ঢাকেশ্বরী বাসস্ট্যাণ্ডে ফুটপাত দোকান থেকে চাঁদা আদায় করছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতন হলেও রহস্য জনক কারণে তাদের চাঁদাবাজি বন্ধ হচ্ছেনা। তাই সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন গোদনাইল কিশোর সংঘের নেতারা।
এ বিষয়ে মহিউদ্দিন মোল্লা বলেন,আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও চাঁদাবাজদের হাতে জিম্মি। আমি আমার দোকান ফেরত পেতে প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করছি।

ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সিদ্ধিরগঞ্জে সরকারি জায়গাকে নিজের দাবি মুক্তিযোদ্ধার

সিদ্ধিরগঞ্জে সরকারি জায়গাকে নিজের দাবি মুক্তিযোদ্ধার

আপডেট সময় : ০৫:০০:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫

স্টাফ রিপোর্টার
সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকায় সরকারি জায়গাকে নিজের দাবি করে চরম বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন মোল্লা। অবৈধভাবে সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে তুলা দোকানের ভাড়া বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই মুক্তিযোদ্ধা বিএনপি নেতা দেলোয়ার হোসেন খোকনসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি ও দোকান ভাঙচুরের অভিযোগ তুলায় এলাকায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, গোদনাইল ২ নং ঢাকেশ্বরী বাসস্ট্যাণ্ড এলাকায় সরকারি জায়গা দখল করে মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন মোল্লা ভাড়া বাণিজ্য করে আসছিলেন। এতে গোদনাইল কিশোর সংঘ (রেজি নং-৩১৯) এর কার্যালয়ের পরিবেশ ও সৌন্দর্য নষ্ট হয়। তাই জনস্বার্থে কিশোর সংঘের নেতারা স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে আলোচনা করে দোকানটি সরিয়ে ফেলার জন্য মহিউদ্দিন মোল্লাকে অনুরোধ জানান। কিন্তু মহিউদ্দিন মোল্লা তা কর্ণপাত করেননি।
গোদনাইল কিশোর সংঘের সভাপতি মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ক্লাবের পরিবেশ ও সৌন্দর্যবর্ধনের লক্ষ্যে সামাজিক স্বার্থে মহিউদ্দিন মোল্লার টং দোকানটি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ ভিত্তিহীন।
কাøবের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম প্রধান বলেন, সরকারি জমি দখল করে ক্লাবের সামনে টং দোকান দিয়ে ভাড়া আদায় করতেন মহিউদ্দিন মোল্লা। এলাকার কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সম্মতিক্রমে বৃহস্পতিবার দুপুরে ক্লাবের সামন থেকে দোকানটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ভাঙচুর বা চাঁদা দাবির অভিযোগটি মিথ্যা।
ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ জামাল প্রধান বলেন, প্রকৃতপক্ষে এটি আমার পৈত্রিক জমি। সরকার আমাদের কাছ থেকে এ্যাকোয়ার করে নিয়েছে। জমিটি পরিত্যক্ত থাকায় এলাকার স্বার্থে আমরা জমিতে ক্লাবের কার্যালয় নির্মাণে সম্মতি প্রদান করি। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন মোল্লা ক্লাবের সামনে সরকারি জমি দখল করে দোকান দিয়ে ভাড়া দেয়। জনস্বার্থে ক্লাবের লোকজন তার দোকান সরিয়ে দিয়েছে। এতে তার ভাড়া বাণিজ্য বন্ধ হয়ে পড়ায় বিএনপি নেতা দেলোয়ার হোসেন খোকনসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে দোকান ভাঙচুর ও চাঁদা দাবির মিথ্যা অভিযোগ তুলেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেন খোকনের নির্দেশে দোকান ভাঙচুর ও চাঁদা দাবির যে অভিযোগ মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন মোল্লা উত্থাপন করেছেন তা সঠিক নয় বলে দাবি করেন কিশোর সংঘের নেতারা। তাদের দাবি ক্লাবের উদ্যোগে দোকান সরানো হয়েছে। এতে দেলোয়ার হোসেন খোকনের কোন সম্পর্ক নেই।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গোদনাইল ২ নং ঢাকেস্বরী বাসস্ট্যাণ্ড এলাকায় সরকারি জায়গা দখল করে দোকানপাট নির্মাণ, ভাড়া ও চাঁদাবাজি করছে মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন মোল্লার ছেলে হুমায়ূন খালেদ মুরাদ ও তার মেয়ের জামাই শফিকুল ইসলাম শাকিল। এ শাকিল সাবেক এমপি শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমানের অন্যতম সহযোগী ও শাহরিয়ার রহমান বাপ্পির আপন ছোট ভাই। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমল থেকে শাকিল ও তার ভগ্নিপতি শফিকুল ঢাকেশ্বরী বাসস্ট্যাণ্ডে ফুটপাত দোকান থেকে চাঁদা আদায় করছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতন হলেও রহস্য জনক কারণে তাদের চাঁদাবাজি বন্ধ হচ্ছেনা। তাই সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন গোদনাইল কিশোর সংঘের নেতারা।
এ বিষয়ে মহিউদ্দিন মোল্লা বলেন,আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও চাঁদাবাজদের হাতে জিম্মি। আমি আমার দোকান ফেরত পেতে প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করছি।