ঢাকা ০২:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিবন্ধন অধিদপ্তর যাচ্ছে ভূমি মন্ত্রণালয়ে, ব্যাপক অসন্তোষ

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেট সময় : ০৯:৫০:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ৪ জন পড়েছেন

সরকারের রেজিস্ট্রেশন বিভাগ বা নিবন্ধন অধিদপ্তরের সব কার্যক্রমকে আইন মন্ত্রণালয় থেকে ভূমি মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ উদ্দেশ্যে ভূমি মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য আজ বুধবার উপদেষ্টা পরিষদের সভায় উপস্থাপন করা হচ্ছে। সভার কার্যপত্রের ৩নং এজেন্ডা হিসাবে বিষয়টি রাখা হয়েছে। এতে বলা হয়, একই ছাতার নিচে সব ভূমিসেবা সহজে প্রদানের লক্ষ্যে দলিল নিবন্ধন কার্যক্রম ভূমি মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর করা হবে।

এদিকে মঙ্গলবার রাতে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে পুরো রেজিস্ট্রেশন বিভাগজুড়ে তীব্র ক্ষোভ অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। জেলা-রেজিস্ট্রার ও সাব-রেজিস্ট্রারদের অনেকে যুগান্তরে ফোন করে তাদের তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, ২০০৮ সাল থেকে এ সংক্রান্ত রিট মামলা উচ্চ আদালতে পেন্ডিং বা বিচারাধীন আছে। ফলে এ ধরনের প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদে নিয়ে নিবন্ধন অধিদপ্তর ভূমি মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর করার আইনগত সুযোগ নেই। অতীতেও এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটি সফল হয়নি। ভূমি মন্ত্রণালয় এমনিতে সীমাহীন সমস্যায় জড়িত। ভূমিসংক্রান্ত হাজার হাজার মামলার জালে বন্দি। তারা ভূমি অফিসগুলো এখন পর্যন্ত সেবাপ্রার্থীদের সেবা যথাযথভাবে দিতে পারছে না। নামজারির নামে ভোগান্তির শেষ নেই। এর মধ্যে রেজিস্ট্রেশন বিভাগ যুক্ত হলে ভোগান্তি ও হয়রানি আরও বাড়বে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ রেজিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মাইকেল মহিউদ্দিন আব্দুল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, ‘বিষয়টি বিচারাধীন। ফলে রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ভূমি মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর করা হলে তা আইনসিদ্ধ হবে না। বরং আদালত অবমাননা হবে। তিনি বলেন, আদালতের আদেশে বলা আছে, রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ভূমি রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম ভূমি মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর স্থগিত থাকবে।’

প্রসঙ্গত, নিবন্ধন অধিদপ্তরকে আইন মন্ত্রণালয় হতে ভূমি মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর করার বিষয়ে ২০০৭ সালে অর্থ বিভাগের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ডিভিশনে জনস্বার্থে রিট মামলা দায়ের করা হয়। যার নং ২৫১-২০০৮। এরপর ওই বছর ১৩ মার্চের শুনানি শেষে আদালত এক সংক্ষিপ্ত আদেশে বলেন, রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।

সাব-রেজিস্ট্রারদের অনেকে যুগান্তরকে বলেন, শিগ্গিরই ভূমি রেজিস্ট্রেশন সেবা অটোমেশন হতে যাচ্ছে। এজন্য সরকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যে মাঠপর্যায়ে পরীক্ষামূলকভাবে ১৭টি অফিসে এটি সফলভাবে চালু রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, রেজিস্ট্রেশন বিভাগ যখন ভালোভাবে চলতে শুরু করেছে, তখন কুচক্রী মহল জনস্বার্থের কথা বলে নিজেদের স্বার্থে এমন উদ্যোগ নিয়েছে।

ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

নিবন্ধন অধিদপ্তর যাচ্ছে ভূমি মন্ত্রণালয়ে, ব্যাপক অসন্তোষ

আপডেট সময় : ০৯:৫০:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫

সরকারের রেজিস্ট্রেশন বিভাগ বা নিবন্ধন অধিদপ্তরের সব কার্যক্রমকে আইন মন্ত্রণালয় থেকে ভূমি মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ উদ্দেশ্যে ভূমি মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য আজ বুধবার উপদেষ্টা পরিষদের সভায় উপস্থাপন করা হচ্ছে। সভার কার্যপত্রের ৩নং এজেন্ডা হিসাবে বিষয়টি রাখা হয়েছে। এতে বলা হয়, একই ছাতার নিচে সব ভূমিসেবা সহজে প্রদানের লক্ষ্যে দলিল নিবন্ধন কার্যক্রম ভূমি মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর করা হবে।

এদিকে মঙ্গলবার রাতে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে পুরো রেজিস্ট্রেশন বিভাগজুড়ে তীব্র ক্ষোভ অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। জেলা-রেজিস্ট্রার ও সাব-রেজিস্ট্রারদের অনেকে যুগান্তরে ফোন করে তাদের তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, ২০০৮ সাল থেকে এ সংক্রান্ত রিট মামলা উচ্চ আদালতে পেন্ডিং বা বিচারাধীন আছে। ফলে এ ধরনের প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদে নিয়ে নিবন্ধন অধিদপ্তর ভূমি মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর করার আইনগত সুযোগ নেই। অতীতেও এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটি সফল হয়নি। ভূমি মন্ত্রণালয় এমনিতে সীমাহীন সমস্যায় জড়িত। ভূমিসংক্রান্ত হাজার হাজার মামলার জালে বন্দি। তারা ভূমি অফিসগুলো এখন পর্যন্ত সেবাপ্রার্থীদের সেবা যথাযথভাবে দিতে পারছে না। নামজারির নামে ভোগান্তির শেষ নেই। এর মধ্যে রেজিস্ট্রেশন বিভাগ যুক্ত হলে ভোগান্তি ও হয়রানি আরও বাড়বে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ রেজিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মাইকেল মহিউদ্দিন আব্দুল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, ‘বিষয়টি বিচারাধীন। ফলে রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ভূমি মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর করা হলে তা আইনসিদ্ধ হবে না। বরং আদালত অবমাননা হবে। তিনি বলেন, আদালতের আদেশে বলা আছে, রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ভূমি রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম ভূমি মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর স্থগিত থাকবে।’

প্রসঙ্গত, নিবন্ধন অধিদপ্তরকে আইন মন্ত্রণালয় হতে ভূমি মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তর করার বিষয়ে ২০০৭ সালে অর্থ বিভাগের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ডিভিশনে জনস্বার্থে রিট মামলা দায়ের করা হয়। যার নং ২৫১-২০০৮। এরপর ওই বছর ১৩ মার্চের শুনানি শেষে আদালত এক সংক্ষিপ্ত আদেশে বলেন, রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।

সাব-রেজিস্ট্রারদের অনেকে যুগান্তরকে বলেন, শিগ্গিরই ভূমি রেজিস্ট্রেশন সেবা অটোমেশন হতে যাচ্ছে। এজন্য সরকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যে মাঠপর্যায়ে পরীক্ষামূলকভাবে ১৭টি অফিসে এটি সফলভাবে চালু রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, রেজিস্ট্রেশন বিভাগ যখন ভালোভাবে চলতে শুরু করেছে, তখন কুচক্রী মহল জনস্বার্থের কথা বলে নিজেদের স্বার্থে এমন উদ্যোগ নিয়েছে।