ঢাকা ১১:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
শাজাহানপুরে ট্রাকের নিচে ঢুকে মোটরসাইকেল আরোহী কলেজছাত্র নিহত, আহত ২ নারায়ণগঞ্জ ক্লাব পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনে ফের এম সোলায়মানের নিরংকুশ বিজয় সীমান্তে অনুপ্রবেশের অভিযোগে বিএসএফ সদস্য আটক নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ইসির উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ফতুল্লায় ফেরি থেকে ট্রাকসহ পাঁচ যান ধলেশ্বরী নদীতে, নিহত ৩ শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরসহ ১৭ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা নারায়ণগঞ্জ ক্লাব নির্বাচন: বিপুল ভোটে জয়ের পথে এম. সোলায়মান জীবনানন্দ দাশের ‘বনলতা সেন’ হলেন নাবিলা দুই বছর পর ওমরাহ করতে গিয়ে ছেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ ওমর সানীর ছক্কা মেরে আহত করে সেবা করলেন পান্ডিয়া

এমন কোনো রায় দিতে চাই না, যা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে: প্রধান বিচারপতি

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেট সময় : ০৩:৫৮:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ৩৫ জন পড়েছেন

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর শুনানির সময় অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, আগের আপিল বিভাগের মতো এমন কোনো রায় দিতে চাই না, যা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে পঞ্চদশ সংশোধনীর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানির সময় এ মন্তব্য করেন তিনি।

সকালে শুনানির শুরুতে পঞ্চদশ সংশোধনীর কিছু কিছু বিষয় থাকার দরকার ও কিছু কিছু পরবর্তী সংসদের হাতে ছেড়ে দেয়া উচিত মন্তব্য করে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের মতামত জানতে চেয়ে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেন, জামায়াতের পক্ষের আইনজীবী শিশির মনির শুনানিতে মতামতে বলেছেন এখন পঞ্চদশ সংশোধনীর শুনানি শেষ না করে তা মুলতবি রেখে পরবর্তী সংসদের হাতে ছেড়ে দেওয়া উচিত এটি নিয়ে তাদের মত কী?

উত্তরে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তারা চান এটার শুনানি শেষ হয়ে যাক এবং একটা রায় আসুক আপিল বিভাগ থেকে।

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা আগের আপিল বিভাগের মতো কোনো রায় দিতে চাইনা, যা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কয়েকদিন পরে নতুন আপিল বিভাগ গঠিত হবে সেখানে এটির শুনানি হলে কেমন হয় অথবা যদি শুনানিতে একটা দীর্ঘ মুলতবি করা হয় তাহলে তো সব পক্ষই সুবিধা পায়। পরে ফের শুনানি শুরু করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তারা আজই এর শুনানি শেষ করবেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন এনে ২০১১ সালের ৩০ জুন পঞ্চদশ সংশোধনী আইন জাতীয় সংসদে পাস হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ ওই সংশোধনীতে সংবিধানে ৫৪টি ক্ষেত্রে পরিবর্তন এসেছিল।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর পঞ্চদশ সংশোধনীর পুরো আইন ও আইনের কয়েকটি ধারার বৈধতা নিয়ে গত বছর হাইকোর্টে আলাদা দুটি রিট হয়। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদকসহ পাঁচ ব্যক্তি একটি এবং নওগাঁর বাসিন্দা মো. মোফাজ্জল হোসেন আরেকটি রিট করেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন।

রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করা হয়। এই দুটিসহ পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত ৭ক, ৭খ, ৪৪(২) অনুচ্ছেদ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করা হয়। রায়ে গণভোটের বিধানসংক্রান্ত ১৪২ অনুচ্ছেদ (দ্বাদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে আনা) পুনর্বহাল করা হয়। পঞ্চদশ সংশোধনী আইন সম্পূর্ণ বাতিল না করে অন্য বিধানগুলোর বিষয়ে আইন অনুসারে পরবর্তী সংসদ সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি আপিল হয়। সুজন সম্পাদকসহ চার ব্যক্তি একটি আপিল করেন। নওগাঁর বাসিন্দা মো. মোফাজ্জল হোসেন একটি এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আরেকটি আপিল করেন। আপিলের ওপর ৩ ডিসেম্বর শুনানি শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় ৪, ৭ ও ৮ ডিসেম্বর এবং ১০ ডিসেম্বর শুনানি হয়। আদালতে বদিউল আলম মজুমদারসহ চার ব্যক্তির পক্ষে শুরুতে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া।

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পুরো বাতিল হলে আবার বাকশাল ফিরে আসবে। সংবিধান থেকে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ বাদ পড়ে যাবে। যেভাবে আছে, সেভাবে থাকলে বৃহত্তর দৃষ্টিকোণে দেখার সুযোগ বেশি থাকবে। আর এই ব্যাপ্তিটা খোলা থাকা উচিত, গণভোটের ফলাফলের ভিত্তিতে যেন সংবিধান সংস্কার পরিষদ বিষয়গুলোতে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে পারে।

ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

এমন কোনো রায় দিতে চাই না, যা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে: প্রধান বিচারপতি

আপডেট সময় : ০৩:৫৮:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর শুনানির সময় অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, আগের আপিল বিভাগের মতো এমন কোনো রায় দিতে চাই না, যা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে পঞ্চদশ সংশোধনীর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানির সময় এ মন্তব্য করেন তিনি।

সকালে শুনানির শুরুতে পঞ্চদশ সংশোধনীর কিছু কিছু বিষয় থাকার দরকার ও কিছু কিছু পরবর্তী সংসদের হাতে ছেড়ে দেয়া উচিত মন্তব্য করে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের মতামত জানতে চেয়ে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেন, জামায়াতের পক্ষের আইনজীবী শিশির মনির শুনানিতে মতামতে বলেছেন এখন পঞ্চদশ সংশোধনীর শুনানি শেষ না করে তা মুলতবি রেখে পরবর্তী সংসদের হাতে ছেড়ে দেওয়া উচিত এটি নিয়ে তাদের মত কী?

উত্তরে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তারা চান এটার শুনানি শেষ হয়ে যাক এবং একটা রায় আসুক আপিল বিভাগ থেকে।

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা আগের আপিল বিভাগের মতো কোনো রায় দিতে চাইনা, যা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কয়েকদিন পরে নতুন আপিল বিভাগ গঠিত হবে সেখানে এটির শুনানি হলে কেমন হয় অথবা যদি শুনানিতে একটা দীর্ঘ মুলতবি করা হয় তাহলে তো সব পক্ষই সুবিধা পায়। পরে ফের শুনানি শুরু করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তারা আজই এর শুনানি শেষ করবেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন এনে ২০১১ সালের ৩০ জুন পঞ্চদশ সংশোধনী আইন জাতীয় সংসদে পাস হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ ওই সংশোধনীতে সংবিধানে ৫৪টি ক্ষেত্রে পরিবর্তন এসেছিল।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর পঞ্চদশ সংশোধনীর পুরো আইন ও আইনের কয়েকটি ধারার বৈধতা নিয়ে গত বছর হাইকোর্টে আলাদা দুটি রিট হয়। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদকসহ পাঁচ ব্যক্তি একটি এবং নওগাঁর বাসিন্দা মো. মোফাজ্জল হোসেন আরেকটি রিট করেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন।

রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করা হয়। এই দুটিসহ পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত ৭ক, ৭খ, ৪৪(২) অনুচ্ছেদ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করা হয়। রায়ে গণভোটের বিধানসংক্রান্ত ১৪২ অনুচ্ছেদ (দ্বাদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে আনা) পুনর্বহাল করা হয়। পঞ্চদশ সংশোধনী আইন সম্পূর্ণ বাতিল না করে অন্য বিধানগুলোর বিষয়ে আইন অনুসারে পরবর্তী সংসদ সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি আপিল হয়। সুজন সম্পাদকসহ চার ব্যক্তি একটি আপিল করেন। নওগাঁর বাসিন্দা মো. মোফাজ্জল হোসেন একটি এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আরেকটি আপিল করেন। আপিলের ওপর ৩ ডিসেম্বর শুনানি শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় ৪, ৭ ও ৮ ডিসেম্বর এবং ১০ ডিসেম্বর শুনানি হয়। আদালতে বদিউল আলম মজুমদারসহ চার ব্যক্তির পক্ষে শুরুতে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া।

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পুরো বাতিল হলে আবার বাকশাল ফিরে আসবে। সংবিধান থেকে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ বাদ পড়ে যাবে। যেভাবে আছে, সেভাবে থাকলে বৃহত্তর দৃষ্টিকোণে দেখার সুযোগ বেশি থাকবে। আর এই ব্যাপ্তিটা খোলা থাকা উচিত, গণভোটের ফলাফলের ভিত্তিতে যেন সংবিধান সংস্কার পরিষদ বিষয়গুলোতে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে পারে।