ঢাকা ০৭:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

বিএনসিসি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এক্স-ক্যাডেটদের সংগঠন বেকার জন্ম ইতিহাস

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেট সময় : ০৮:৫০:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৩০ জন পড়েছেন
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর বা বিএনসিসি হচ্ছে সেনা, নৌ ও বিমান শাখার ক্যাডেটদের সমন্বয়ে গঠিত একটি দ্বিতীয় সারির, আধাসামরিক, স্বেচ্ছাসেবী রিজার্ভ বাহিনী। এটি সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা, জেসিও, এনসিও, বেসামরিক কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিটের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গঠিত। বিএনসিসি’র মূলমন্ত্র হলো “জ্ঞান ও শৃঙ্খলা।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) এর প্রতিষ্ঠাতা হলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তিনি ২৩শে মার্চ, ১৯৭৯ সালে একটি সরকারি আদেশের মাধ্যমে বিএনসিসি প্রতিষ্ঠা করেন, যার মূল লক্ষ্য ছিল সৎ, দক্ষ, দেশপ্রেমিক এবং যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি করা।
‎বিএনসিসি প্রতিষ্ঠার পূর্বে, ১৯৭৬ সালের ৩১শে মার্চ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ক্যাডেট কোর এর তিনটি পদাতিক ডিভিশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
‎বিএনসিসি’র মূলমন্ত্র “জ্ঞান, শৃঙ্খলা ও একতা”। এটি যুব সমাজের নৈতিক উন্নতি সাধন এবং তাদের মধ্যে যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্য একটি জাতীয় সংগঠন।
বিএনসিসি’র প্রাক্তন ক্যাডেটদের সংগঠন বাংলাদেশ এক্স-ক্যাডেটস এসোসিয়েশন যার সংক্ষিপ্ত নাম বেকা(BECA)।
বেকা’র জন্ম ও পরিচয়ঃ
সমগ্র বাংলাদেশের UTC, UOTC ও BNCC এর প্রাক্তন-ক্যাডেটদের নিয়ে গঠিত হয়েছে “বাংলাদেশ এক্স-ক্যাডেটস্ এসোসিয়েশন (বেকা)।” ১৯৮২ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারী প্রতিষ্ঠিত এই এসোসিয়েশন ৪৫টি জেলা ইউনিট এবং ১১২টি অঙ্গ ইউনিট ১২১৬ আজীবন সদস্য, প্রায় ৬৯ হাজার সাধারন সদস্য নিয়ে গঠিত। ১৯৮১ সালের ২৭ডিসেম্বর রোজ রবিবার (সাপ্তাহিক সরকারি বন্ধ) ঢাকা’য় কিছুসংখ্যক এক্স-ক্যাডেট ধানমন্ডি এলাকায় ২০, গ্রীন রোড বাসায় এক্স-ক্যাডেটদের নিয়ে একটি এসোসিয়েশন গঠনের প্রাথমিক আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। সে সময় আমিনুর রশিদকে আহবায়ক এবং এ.কে.এম রেজাউল হক ঝুনুকে সদস্য-সচিব করে একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে লেঃ কর্ণেল মতিউর রহমান (অবঃ) এবং ই এম মাহমুদুল হায়দার কে যথাক্রমে সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক মনোনিত করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের মাধ্যমে বেকা’র আত্মপ্রকাশ ঘটে। প্রথম এক্স-ক্যাডেটস্ পুনর্মিলনী ও স্মরনীকা প্রকাশ করে ২৮ ফেব্রুয়ারী, ১৯৮২। এ সময় সরকারি তিতুমীর কলেজ এর ১৯৭৮ সনের UOTC-র শেষের দিকে এবং ১৯৭৯ সনের বিএনসিসি’র প্রথম দিকে বিমান শাখা’র এক্স-সিইউও ই এম মাহমুদুল হায়দার এর বাসায় (২০, গ্রীন রোড, ঢাকা) প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে বেকা’র প্রতিষ্ঠা ব্যাপারে ৬ জন এক্স-ক্যাডেট স্বপ্ন রচনা করেন। এরপর একজন গ্রহনযোগ্য ও সর্বজনিন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিকে বেকা’র চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনিত করার চেষ্টা চলে। অবশেষে এগিয়ে আসেন UTC-UOTC-র প্রান পুরুষ এবং বিএনসিসি’র ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব লেঃ কর্ণেল মতিউর রহমান (যিনি এক্স-ক্যাডেট ছিলেন -বি এম কলেজ, বরিশাল (১৯৩২-৩৩) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৩৪-৩৬) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীর চর্চা বিভাগের ডাইরেক্টর (১৯৩৬-১৯৬৬)। ব্রিটিশ শাসনামলে তিনিই প্রথম চঞঋঙ হিসেবে যোগ দিয়ে পাকিস্তান শাসনামলে লেঃ কর্ণেল (PTFO) পদ প্রাপ্ত হন। লেঃ কর্ণেল মতিউর স্যার এর বাসা-(বাসা-৫৫৫, রোড-১৫, ধানমন্ডি, ঢাকা) তেও কয়েক দফা আহবায়ক কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।
‎বেকা’র প্রথম কার্যনির্বাহী পরিষদে লেঃ কর্ণেল মতিউর রহমান (অবঃ) কে চেয়ারম্যান এবং মোঃ আমিনুর রশীদ, এ কে এম রেজাউল হক ঝুনু দ্বয়কে ভাইস চেয়ারম্যান এবং ই এম মাহমুদুল হায়দার’কে মহাসচিব করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিষ্ঠাকালিন কমিটি (১৯৮২-৮৩) গঠন করা হয়। গৌরব গাঁথা প্রতিষ্ঠা ইতিহাস এখন প্রেরণার ডাক দিয়েছে। গত ২২-০৯-২০১৯ ইং তারিখে বেকা’র ২০১৭-২০১৯ মেয়াদের জাতীয় নির্বাহী পরিষদের ২৮তম সভায় সে মোতাবেক বেকা’র প্রতিষ্ঠা ২৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮২ করার প্রস্তাব করেন সচিব (সাংগঠনিক) মোঃ মাহবুব আলম। এ সময় সকল প্রমানপত্র যাচাই-বাছাই করে সভায় উপস্থিত সদস্যবৃন্দ বেকা’র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী হিসেবে ২৮ ফেব্রুয়ারী, ১৯৮২ পালনে সর্ব সম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। করোনা জনিত মহামারি’র কারনে ১ বছর পর ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী নব নির্বাচিত জাতীয় নির্বাহী পরিষদ (২০২১-২০২৩) প্রথম বারের মতন আনুষ্ঠানিকভাবে ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করে। তাই বর্তমান বেকা জাতীয় নির্বাহী পরিষদ অনেক বিশ্লেষণ করে শক্ত দলিলের মাধ্যমে প্রথম “এক্স ক্যাডেটস পুনর্মিলনী/৮২” কে বেকা’র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী হিসাব ধরে “২৮ ফেব্রুয়ারি/৮২” কে প্রতিষ্ঠা কাল গণনাসহ গত ২০২১ সন হতে তা পালন করা শুরু করেছে।
‎বেকা’র প্রতিষ্ঠাতাগণঃ
‎১। বেকা’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ক্যাডেট কোরের ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব লেঃ কর্ণেল মোঃ মতিউর রহমান। যিনি এক্স-ক্যাডেট ছিলেন-বি এম কলেজ, বরিশাল (১৯৩২-৩৩) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৩৪-৩৬) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীর চর্চা বিভাগের ডাইরেক্টর (১৯৩৬-১৯৬৬) এবং পিটিএফ অফিসার। ২। মোঃ আমীনুর রশীদ। (সরকারি বি এল কলেজ, খুলনা ১৯৭৬ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৭-১৯৮০) ৩। ফিরোজ আলম। (ঢাকা কলেজ ১৯৭৬ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৭-৮১) ৪। একেএম রেজাউল হক ঝুনু। (আদমজী ক্যান্টঃ কলেজ ও তিতুমীর কলেজ ১৯৭৬-৮০)। ৫। ই এম মাহমুদুল হায়দার। (সরকারি তিতুমীর কলেজ ১৯৭৮-১৯৮১) ৬। লেঃ কর্ণেল মকবুল কাদের মিন্টু (অবঃ), (আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ ১৯৭৬)। ৭। মোঃ হামিদুর রহমান চৌধুরী সেলিম (সৈয়দ সারওয়ার্দী কলেজ ১৯৭৭-৮০)। বেকা এই প্রথম প্রতিষ্ঠাতাদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী/২০২১ রাওয়া ক্লাবে বেকা’র ৩৯ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে। তবে এখানে উল্লেখ্য যে, UTC, UOTC ও BNCC এর ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব লেঃ কর্ণেল মোঃ মতিউর রহমান (অবঃ) এর আপ্রান চেষ্টায় নিবেদিত নেতৃত্বে বেকা জন্ম লাভ করে। প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছাড়াও বেকা’র প্রথম চীফ প্যার্টোন সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসাইন মোঃ এরশাদ, সাবেক মন্ত্রী ক্যাপ্টেন আবদুল হালিম চৌধুরী (অবঃ), বিএনসিসি’র প্রথম ডিজি কর্ণেল মির্জা শফি আহমেদ (অবঃ), বেকা’র সাবেক চেয়ারম্যান যথাক্রমে মেজর এম জামান, লেঃ কর্ণেল রেজাউল জলিল, মেজর জেনারেল আর এ এম গোলাম মুক্তাদির (অবঃ), মেজর জেনারেল এম রফিকুল ইসলাম (অবঃ), মোঃ হেলাল উদ্দীন, সাবেক মহাসচিব আনওয়ারুল খান মজলিস, বেকা’কে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও জাতীয় সংগঠনে পরিনত করতে তাদের অবদান অনস্বীকার্য। তাঁদের প্রতি বেকা’র সকল সদস্যরা শ্রদ্ধাভরে স্মরন করবে আজীবন।
‎অবশেষে সারা বাংলাদেশের UTC, UOTC, BNCC এর প্রাক্তন ক্যাডেটদের একমাত্র জাতীয় সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সরকারি অনুমোদন দেয় যার নিবন্ধন নম্বর: ঢ-০১৪৯৭, তারিখ: ০১-০৮-১৯৮৪।
‎দীর্ঘ ২২ বছর বন্ধ থাকার পর বর্তমান জাতীয় নির্বাহী পরিষদ (২০২১-২৩) বেকা নিউজ বুলেটিন চালুর ব্যাপারে উদ্যোগী হলে ১৬ ডিসেম্বর/২০২১ সনে বেকা’র মুখপাত্র ও যুগ্ম-মহাসচিব মোঃ মাহবুব আলমকে সম্পাদক করে “বেকা নিউজ” ত্রৈমাসিক বুলেটিন নিয়মিত প্রকাশ শুরু হয়। বর্তমানে তা চলমান। এ পর্যন্ত ৪২ বছরে বর্তমান পরিষদ সহ ১৪টি জাতীয় নির্বাহী পরিষদ প্রথমে দুই বছর পরবর্তীতে ৩ বছর মেয়াদী দায়িত্ব পালন করেছে। ২০২১-২৩ পরিষদ বেকাকে গতিময় করতে গঠতান্ত্রিক নিয়মাবলীর মাধ্যমে জবাবদিহীতার সর্বোচ্চ আসনে নিয়ে সারা বাংলাদেশে এক্স ক্যাডেটদের ঐক্যবদ্ধকরণে ব্যাপক কাজ করেছে।
বেকার জাতীয় নির্বাহী পরিষদ(২০২৪-২০২৬)নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসেবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ,কে,এম শাহজাহান(অবঃ) এবং ৃমহাসচিব হিসেবে লেঃকর্ণেল মোঃআলাউদ্দিন গাজী(অবঃ) পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন।
বাংলাদেশ এক্স-ক্যাডেটস এসোসিয়েশন, নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিটের বর্তমান সভাপতি সর্বপ্রথম সিইউও র‍্যাংক পদকপ্রাপ্ত ফারুক আহম্মদ রিপন এবং সাধারন সম্পাদক এক্স- সিইউও রোটারিয়ান শাহেদুল হক সুমন।
আর্তমানবতার সেবায় এক্স ক্যাডেটদের সকলকে সাধারন মানুষের পাশে থাকার আহবান জানাচ্ছি।
ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিএনসিসি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এক্স-ক্যাডেটদের সংগঠন বেকার জন্ম ইতিহাস

আপডেট সময় : ০৮:৫০:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর বা বিএনসিসি হচ্ছে সেনা, নৌ ও বিমান শাখার ক্যাডেটদের সমন্বয়ে গঠিত একটি দ্বিতীয় সারির, আধাসামরিক, স্বেচ্ছাসেবী রিজার্ভ বাহিনী। এটি সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা, জেসিও, এনসিও, বেসামরিক কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিটের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গঠিত। বিএনসিসি’র মূলমন্ত্র হলো “জ্ঞান ও শৃঙ্খলা।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) এর প্রতিষ্ঠাতা হলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তিনি ২৩শে মার্চ, ১৯৭৯ সালে একটি সরকারি আদেশের মাধ্যমে বিএনসিসি প্রতিষ্ঠা করেন, যার মূল লক্ষ্য ছিল সৎ, দক্ষ, দেশপ্রেমিক এবং যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি করা।
‎বিএনসিসি প্রতিষ্ঠার পূর্বে, ১৯৭৬ সালের ৩১শে মার্চ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ক্যাডেট কোর এর তিনটি পদাতিক ডিভিশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
‎বিএনসিসি’র মূলমন্ত্র “জ্ঞান, শৃঙ্খলা ও একতা”। এটি যুব সমাজের নৈতিক উন্নতি সাধন এবং তাদের মধ্যে যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্য একটি জাতীয় সংগঠন।
বিএনসিসি’র প্রাক্তন ক্যাডেটদের সংগঠন বাংলাদেশ এক্স-ক্যাডেটস এসোসিয়েশন যার সংক্ষিপ্ত নাম বেকা(BECA)।
বেকা’র জন্ম ও পরিচয়ঃ
সমগ্র বাংলাদেশের UTC, UOTC ও BNCC এর প্রাক্তন-ক্যাডেটদের নিয়ে গঠিত হয়েছে “বাংলাদেশ এক্স-ক্যাডেটস্ এসোসিয়েশন (বেকা)।” ১৯৮২ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারী প্রতিষ্ঠিত এই এসোসিয়েশন ৪৫টি জেলা ইউনিট এবং ১১২টি অঙ্গ ইউনিট ১২১৬ আজীবন সদস্য, প্রায় ৬৯ হাজার সাধারন সদস্য নিয়ে গঠিত। ১৯৮১ সালের ২৭ডিসেম্বর রোজ রবিবার (সাপ্তাহিক সরকারি বন্ধ) ঢাকা’য় কিছুসংখ্যক এক্স-ক্যাডেট ধানমন্ডি এলাকায় ২০, গ্রীন রোড বাসায় এক্স-ক্যাডেটদের নিয়ে একটি এসোসিয়েশন গঠনের প্রাথমিক আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। সে সময় আমিনুর রশিদকে আহবায়ক এবং এ.কে.এম রেজাউল হক ঝুনুকে সদস্য-সচিব করে একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে লেঃ কর্ণেল মতিউর রহমান (অবঃ) এবং ই এম মাহমুদুল হায়দার কে যথাক্রমে সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক মনোনিত করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের মাধ্যমে বেকা’র আত্মপ্রকাশ ঘটে। প্রথম এক্স-ক্যাডেটস্ পুনর্মিলনী ও স্মরনীকা প্রকাশ করে ২৮ ফেব্রুয়ারী, ১৯৮২। এ সময় সরকারি তিতুমীর কলেজ এর ১৯৭৮ সনের UOTC-র শেষের দিকে এবং ১৯৭৯ সনের বিএনসিসি’র প্রথম দিকে বিমান শাখা’র এক্স-সিইউও ই এম মাহমুদুল হায়দার এর বাসায় (২০, গ্রীন রোড, ঢাকা) প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে বেকা’র প্রতিষ্ঠা ব্যাপারে ৬ জন এক্স-ক্যাডেট স্বপ্ন রচনা করেন। এরপর একজন গ্রহনযোগ্য ও সর্বজনিন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিকে বেকা’র চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনিত করার চেষ্টা চলে। অবশেষে এগিয়ে আসেন UTC-UOTC-র প্রান পুরুষ এবং বিএনসিসি’র ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব লেঃ কর্ণেল মতিউর রহমান (যিনি এক্স-ক্যাডেট ছিলেন -বি এম কলেজ, বরিশাল (১৯৩২-৩৩) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৩৪-৩৬) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীর চর্চা বিভাগের ডাইরেক্টর (১৯৩৬-১৯৬৬)। ব্রিটিশ শাসনামলে তিনিই প্রথম চঞঋঙ হিসেবে যোগ দিয়ে পাকিস্তান শাসনামলে লেঃ কর্ণেল (PTFO) পদ প্রাপ্ত হন। লেঃ কর্ণেল মতিউর স্যার এর বাসা-(বাসা-৫৫৫, রোড-১৫, ধানমন্ডি, ঢাকা) তেও কয়েক দফা আহবায়ক কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।
‎বেকা’র প্রথম কার্যনির্বাহী পরিষদে লেঃ কর্ণেল মতিউর রহমান (অবঃ) কে চেয়ারম্যান এবং মোঃ আমিনুর রশীদ, এ কে এম রেজাউল হক ঝুনু দ্বয়কে ভাইস চেয়ারম্যান এবং ই এম মাহমুদুল হায়দার’কে মহাসচিব করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিষ্ঠাকালিন কমিটি (১৯৮২-৮৩) গঠন করা হয়। গৌরব গাঁথা প্রতিষ্ঠা ইতিহাস এখন প্রেরণার ডাক দিয়েছে। গত ২২-০৯-২০১৯ ইং তারিখে বেকা’র ২০১৭-২০১৯ মেয়াদের জাতীয় নির্বাহী পরিষদের ২৮তম সভায় সে মোতাবেক বেকা’র প্রতিষ্ঠা ২৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮২ করার প্রস্তাব করেন সচিব (সাংগঠনিক) মোঃ মাহবুব আলম। এ সময় সকল প্রমানপত্র যাচাই-বাছাই করে সভায় উপস্থিত সদস্যবৃন্দ বেকা’র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী হিসেবে ২৮ ফেব্রুয়ারী, ১৯৮২ পালনে সর্ব সম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। করোনা জনিত মহামারি’র কারনে ১ বছর পর ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী নব নির্বাচিত জাতীয় নির্বাহী পরিষদ (২০২১-২০২৩) প্রথম বারের মতন আনুষ্ঠানিকভাবে ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করে। তাই বর্তমান বেকা জাতীয় নির্বাহী পরিষদ অনেক বিশ্লেষণ করে শক্ত দলিলের মাধ্যমে প্রথম “এক্স ক্যাডেটস পুনর্মিলনী/৮২” কে বেকা’র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী হিসাব ধরে “২৮ ফেব্রুয়ারি/৮২” কে প্রতিষ্ঠা কাল গণনাসহ গত ২০২১ সন হতে তা পালন করা শুরু করেছে।
‎বেকা’র প্রতিষ্ঠাতাগণঃ
‎১। বেকা’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ক্যাডেট কোরের ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব লেঃ কর্ণেল মোঃ মতিউর রহমান। যিনি এক্স-ক্যাডেট ছিলেন-বি এম কলেজ, বরিশাল (১৯৩২-৩৩) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৩৪-৩৬) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীর চর্চা বিভাগের ডাইরেক্টর (১৯৩৬-১৯৬৬) এবং পিটিএফ অফিসার। ২। মোঃ আমীনুর রশীদ। (সরকারি বি এল কলেজ, খুলনা ১৯৭৬ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৭-১৯৮০) ৩। ফিরোজ আলম। (ঢাকা কলেজ ১৯৭৬ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৭-৮১) ৪। একেএম রেজাউল হক ঝুনু। (আদমজী ক্যান্টঃ কলেজ ও তিতুমীর কলেজ ১৯৭৬-৮০)। ৫। ই এম মাহমুদুল হায়দার। (সরকারি তিতুমীর কলেজ ১৯৭৮-১৯৮১) ৬। লেঃ কর্ণেল মকবুল কাদের মিন্টু (অবঃ), (আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ ১৯৭৬)। ৭। মোঃ হামিদুর রহমান চৌধুরী সেলিম (সৈয়দ সারওয়ার্দী কলেজ ১৯৭৭-৮০)। বেকা এই প্রথম প্রতিষ্ঠাতাদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী/২০২১ রাওয়া ক্লাবে বেকা’র ৩৯ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে। তবে এখানে উল্লেখ্য যে, UTC, UOTC ও BNCC এর ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব লেঃ কর্ণেল মোঃ মতিউর রহমান (অবঃ) এর আপ্রান চেষ্টায় নিবেদিত নেতৃত্বে বেকা জন্ম লাভ করে। প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছাড়াও বেকা’র প্রথম চীফ প্যার্টোন সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসাইন মোঃ এরশাদ, সাবেক মন্ত্রী ক্যাপ্টেন আবদুল হালিম চৌধুরী (অবঃ), বিএনসিসি’র প্রথম ডিজি কর্ণেল মির্জা শফি আহমেদ (অবঃ), বেকা’র সাবেক চেয়ারম্যান যথাক্রমে মেজর এম জামান, লেঃ কর্ণেল রেজাউল জলিল, মেজর জেনারেল আর এ এম গোলাম মুক্তাদির (অবঃ), মেজর জেনারেল এম রফিকুল ইসলাম (অবঃ), মোঃ হেলাল উদ্দীন, সাবেক মহাসচিব আনওয়ারুল খান মজলিস, বেকা’কে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও জাতীয় সংগঠনে পরিনত করতে তাদের অবদান অনস্বীকার্য। তাঁদের প্রতি বেকা’র সকল সদস্যরা শ্রদ্ধাভরে স্মরন করবে আজীবন।
‎অবশেষে সারা বাংলাদেশের UTC, UOTC, BNCC এর প্রাক্তন ক্যাডেটদের একমাত্র জাতীয় সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সরকারি অনুমোদন দেয় যার নিবন্ধন নম্বর: ঢ-০১৪৯৭, তারিখ: ০১-০৮-১৯৮৪।
‎দীর্ঘ ২২ বছর বন্ধ থাকার পর বর্তমান জাতীয় নির্বাহী পরিষদ (২০২১-২৩) বেকা নিউজ বুলেটিন চালুর ব্যাপারে উদ্যোগী হলে ১৬ ডিসেম্বর/২০২১ সনে বেকা’র মুখপাত্র ও যুগ্ম-মহাসচিব মোঃ মাহবুব আলমকে সম্পাদক করে “বেকা নিউজ” ত্রৈমাসিক বুলেটিন নিয়মিত প্রকাশ শুরু হয়। বর্তমানে তা চলমান। এ পর্যন্ত ৪২ বছরে বর্তমান পরিষদ সহ ১৪টি জাতীয় নির্বাহী পরিষদ প্রথমে দুই বছর পরবর্তীতে ৩ বছর মেয়াদী দায়িত্ব পালন করেছে। ২০২১-২৩ পরিষদ বেকাকে গতিময় করতে গঠতান্ত্রিক নিয়মাবলীর মাধ্যমে জবাবদিহীতার সর্বোচ্চ আসনে নিয়ে সারা বাংলাদেশে এক্স ক্যাডেটদের ঐক্যবদ্ধকরণে ব্যাপক কাজ করেছে।
বেকার জাতীয় নির্বাহী পরিষদ(২০২৪-২০২৬)নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসেবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ,কে,এম শাহজাহান(অবঃ) এবং ৃমহাসচিব হিসেবে লেঃকর্ণেল মোঃআলাউদ্দিন গাজী(অবঃ) পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন।
বাংলাদেশ এক্স-ক্যাডেটস এসোসিয়েশন, নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিটের বর্তমান সভাপতি সর্বপ্রথম সিইউও র‍্যাংক পদকপ্রাপ্ত ফারুক আহম্মদ রিপন এবং সাধারন সম্পাদক এক্স- সিইউও রোটারিয়ান শাহেদুল হক সুমন।
আর্তমানবতার সেবায় এক্স ক্যাডেটদের সকলকে সাধারন মানুষের পাশে থাকার আহবান জানাচ্ছি।