ঢাকা ০২:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করল ড্যাব বরিশাল বিভাগের ২১ আসনে প্রার্থী ঘোষণা খেলাফত মজলিসের ১৮ মামলার আসামি ‘মাদক সম্রাট’ অবশেষে ধরা গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যা: ৭ আসামি ২ দিনের রিমান্ডে গাজীপুরে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু ধানের শীষ বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির প্রতীক: মীর হেলাল অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন করতে যা যা দরকার সব করা হবে: সিইসি সংসদ নির্বাচন: প্রশিক্ষণ নেবে সোয়া নয় লাখ কর্মকর্তা, ব্যয় ১৩০ কোটি চট্টগ্রাম উপকূলে ট্রলারডুবি: দুই জেলের লাশ উদ্ধার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ বাতিল করায় গিয়াসের সমালোচনা

সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করল ড্যাব

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৬:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ অগাস্ট ২০২৫
  • / ১০ জন পড়েছেন

সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের এক নতুন উদাহরণ স্থাপন করেছে বিএনপির পেশাজীবী সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। ভয়হীন ও মুক্ত পরিবেশে, উৎসবমুখর আবহে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন।

শনিবার (৯ আগস্ট) রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন নির্বাচন-সংশ্লিষ্টরা।

দায়িত্বশীলদের মতে, এই শান্তিপূর্ণ ভোট প্রক্রিয়া আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। আর পুরো প্রক্রিয়াটির তত্ত্বাবধান করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

গত ১৭ বছর ধরে বাংলাদেশে নির্বাচন মানেই ছিল সংঘাত, সহিংসতা এবং জনমনে আতঙ্ক— জাতীয় হোক বা স্থানীয় নির্বাচন। স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে বাজার পরিচালনা কমিটির ভোটেও আধিপত্য বিস্তারের নামে চলেছে ব্যাপক হানাহানি ও মারামারি। কিন্তু ড্যাবের এবারের নির্বাচনে দেখা গেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। প্রার্থী, ভোটার ও সংশ্লিষ্টদের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হয়েছে পুরো প্রক্রিয়া। সকাল থেকে সিনিয়র থেকে জুনিয়র—সব শ্রেণির চিকিৎসকরাই এসেছিলেন ভোট দিতে।

ভোটকেন্দ্রের বাইরে ভোটারের সিরিয়াল অনুযায়ী তথ্য সন্নিবেশ করা ছিল। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে ভোটারের পরিচয়। এরপর ভোটার স্লিপ সংগ্রহ করে লাইনে দাঁড়িয়ে নির্দিষ্ট বুথে গিয়ে ভোট দিয়েছেন সবাই।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা চিকিৎসকরা ভোট দেওয়ার পর বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ হচ্ছে। আমরা ডিজিটালি জেনারেটেড ভোটার কার্ড পেয়েছি। একজনের ভোট অন্যজন দেওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। পরিবেশ ১০০ শতাংশ ঠিক ছিল। কোনো বিশৃঙ্খলা তারা পাননি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে নির্বাচন কমিশন ভালো দায়িত্ব পালন করছে।

আরেকজন চিকিৎসক বলেন, এতদিনের আন্দোলনের পর ড্যাবে যে একটি সঠিক প্রক্রিয়ায় ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার নির্বাচন হচ্ছে, সবাই অবাধে ভোট দিচ্ছে, এটাই আমরা এনজয় করছি। ভোটার তালিকা, ব্যালট পেপার, গোপন বুথ, স্বচ্ছ ব্যালট বক্স, সবই মানসম্পন্ন। সবার আস্থা ছিল নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বশীলদের ওপর। একটি সুষ্ঠ ও গ্রহণযোগ্য ভোটের জন্য যে পরিবেশ থাকা দরকার, তা সবই ছিল ড্যাব নির্বাচনে।

সভাপতি পদপ্রার্থী (হারুন-শাকিল প্যানেল) অধ্যাপক ডা. হারুণ আল রশিদ বলেন, ৫ আগস্টের পরে প্রথম একটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক নির্বাচন। সবাই এনজয় করছে। এত গরম, এত কষ্ট, কিন্তু কারও মুখে বিরক্তি নেই। সবাই হাসছে। বিপক্ষ প্রতিপক্ষ আছে, তাতে কিছু যায় আসে না। এর মানে মানুষ গণতন্ত্রকে ভালোবাসে। ডেমোক্রেটিক রাইটস প্রয়োগ করতে চায়— এটা আজকের নির্বাচনে প্রমাণ হচ্ছে।

মহাসচিব পদপ্রার্থী (হারুন-শাকিল প্যানেল) অধ্যাপক ডা. আবদুস সাকুর খান বলেন, সবচেয়ে বড় দিক হলো ভোটার উপস্থিতি— যা সন্তোষজনক। দুটো প্যানেল মানে দুটো গ্রুপ নয়, এটি ড্যাবের নির্বাচন। ড্যাব জাতীয়তাবাদী আদর্শ বিশ্বাসী সংগঠন। আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি, আরও ঐক্যবদ্ধ হব। চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও কোনো সংঘাত বা সহিংসতা নেই। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ছিল, কিন্তু কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দখলদারী ভোট সংস্কৃতির বাইরে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিজন কান্তি সরকার মনে করেন, আসছে সংসদ নির্বাচনের জন্য মডেল হতে পারে পেশাজীবী সংগঠনের এই ভোট গ্রহণ। তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জ ছিল সুষ্ঠভাবে ভোট আয়োজন করা। দেশে তো ভোট ছিল না। সামনে হবে— আমরা আশায় আছি। এটি এক ধরনের রিহার্সেল।

নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়া তদারকি করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ক্ষমতার প্রভাব ছাড়া সংখ্যামুক্ত ভোট কীভাবে করা যায়, সেটি নিশ্চিত করেছেন তিনি।

ভোটের আগে ভার্চুয়ালি এক আলোচনায় তারেক রহমান বলেন— ৩১ দফার মধ্যে চিকিৎসা সংক্রান্ত দফাটি বাস্তবায়ন করতে হলে উপস্থিত ৩১১৭ জন কাউন্সিলরসহ ড্যাবের কর্মী-সমর্থকদের সহযোগিতা প্রয়োজন। গত ১৫ বছর এবং জুলাই-আগস্টসহ যারা আহত হয়েছেন, তাদের প্রত্যাশা আমরা যদি পূরণ করতে পারি, তাহলেই আমাদের প্রত্যাশার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব। প্রত্যেককে সামান্য হলেও কন্ট্রিবিউট করতে হবে, এবং আমরা তা পারব।

ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করল ড্যাব

আপডেট সময় : ০৯:৫৬:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ অগাস্ট ২০২৫

সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের এক নতুন উদাহরণ স্থাপন করেছে বিএনপির পেশাজীবী সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। ভয়হীন ও মুক্ত পরিবেশে, উৎসবমুখর আবহে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন।

শনিবার (৯ আগস্ট) রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন নির্বাচন-সংশ্লিষ্টরা।

দায়িত্বশীলদের মতে, এই শান্তিপূর্ণ ভোট প্রক্রিয়া আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। আর পুরো প্রক্রিয়াটির তত্ত্বাবধান করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

গত ১৭ বছর ধরে বাংলাদেশে নির্বাচন মানেই ছিল সংঘাত, সহিংসতা এবং জনমনে আতঙ্ক— জাতীয় হোক বা স্থানীয় নির্বাচন। স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে বাজার পরিচালনা কমিটির ভোটেও আধিপত্য বিস্তারের নামে চলেছে ব্যাপক হানাহানি ও মারামারি। কিন্তু ড্যাবের এবারের নির্বাচনে দেখা গেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। প্রার্থী, ভোটার ও সংশ্লিষ্টদের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হয়েছে পুরো প্রক্রিয়া। সকাল থেকে সিনিয়র থেকে জুনিয়র—সব শ্রেণির চিকিৎসকরাই এসেছিলেন ভোট দিতে।

ভোটকেন্দ্রের বাইরে ভোটারের সিরিয়াল অনুযায়ী তথ্য সন্নিবেশ করা ছিল। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে ভোটারের পরিচয়। এরপর ভোটার স্লিপ সংগ্রহ করে লাইনে দাঁড়িয়ে নির্দিষ্ট বুথে গিয়ে ভোট দিয়েছেন সবাই।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা চিকিৎসকরা ভোট দেওয়ার পর বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ হচ্ছে। আমরা ডিজিটালি জেনারেটেড ভোটার কার্ড পেয়েছি। একজনের ভোট অন্যজন দেওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। পরিবেশ ১০০ শতাংশ ঠিক ছিল। কোনো বিশৃঙ্খলা তারা পাননি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে নির্বাচন কমিশন ভালো দায়িত্ব পালন করছে।

আরেকজন চিকিৎসক বলেন, এতদিনের আন্দোলনের পর ড্যাবে যে একটি সঠিক প্রক্রিয়ায় ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার নির্বাচন হচ্ছে, সবাই অবাধে ভোট দিচ্ছে, এটাই আমরা এনজয় করছি। ভোটার তালিকা, ব্যালট পেপার, গোপন বুথ, স্বচ্ছ ব্যালট বক্স, সবই মানসম্পন্ন। সবার আস্থা ছিল নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বশীলদের ওপর। একটি সুষ্ঠ ও গ্রহণযোগ্য ভোটের জন্য যে পরিবেশ থাকা দরকার, তা সবই ছিল ড্যাব নির্বাচনে।

সভাপতি পদপ্রার্থী (হারুন-শাকিল প্যানেল) অধ্যাপক ডা. হারুণ আল রশিদ বলেন, ৫ আগস্টের পরে প্রথম একটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক নির্বাচন। সবাই এনজয় করছে। এত গরম, এত কষ্ট, কিন্তু কারও মুখে বিরক্তি নেই। সবাই হাসছে। বিপক্ষ প্রতিপক্ষ আছে, তাতে কিছু যায় আসে না। এর মানে মানুষ গণতন্ত্রকে ভালোবাসে। ডেমোক্রেটিক রাইটস প্রয়োগ করতে চায়— এটা আজকের নির্বাচনে প্রমাণ হচ্ছে।

মহাসচিব পদপ্রার্থী (হারুন-শাকিল প্যানেল) অধ্যাপক ডা. আবদুস সাকুর খান বলেন, সবচেয়ে বড় দিক হলো ভোটার উপস্থিতি— যা সন্তোষজনক। দুটো প্যানেল মানে দুটো গ্রুপ নয়, এটি ড্যাবের নির্বাচন। ড্যাব জাতীয়তাবাদী আদর্শ বিশ্বাসী সংগঠন। আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি, আরও ঐক্যবদ্ধ হব। চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও কোনো সংঘাত বা সহিংসতা নেই। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ছিল, কিন্তু কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দখলদারী ভোট সংস্কৃতির বাইরে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিজন কান্তি সরকার মনে করেন, আসছে সংসদ নির্বাচনের জন্য মডেল হতে পারে পেশাজীবী সংগঠনের এই ভোট গ্রহণ। তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জ ছিল সুষ্ঠভাবে ভোট আয়োজন করা। দেশে তো ভোট ছিল না। সামনে হবে— আমরা আশায় আছি। এটি এক ধরনের রিহার্সেল।

নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়া তদারকি করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ক্ষমতার প্রভাব ছাড়া সংখ্যামুক্ত ভোট কীভাবে করা যায়, সেটি নিশ্চিত করেছেন তিনি।

ভোটের আগে ভার্চুয়ালি এক আলোচনায় তারেক রহমান বলেন— ৩১ দফার মধ্যে চিকিৎসা সংক্রান্ত দফাটি বাস্তবায়ন করতে হলে উপস্থিত ৩১১৭ জন কাউন্সিলরসহ ড্যাবের কর্মী-সমর্থকদের সহযোগিতা প্রয়োজন। গত ১৫ বছর এবং জুলাই-আগস্টসহ যারা আহত হয়েছেন, তাদের প্রত্যাশা আমরা যদি পূরণ করতে পারি, তাহলেই আমাদের প্রত্যাশার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব। প্রত্যেককে সামান্য হলেও কন্ট্রিবিউট করতে হবে, এবং আমরা তা পারব।