সিদ্ধিরগঞ্জে মহাসড়ক দখল করে নীলাচল পরিবহনের কাউণ্টার
সিদ্ধিরগঞ্জে মহাসড়ক দখল করে নীলাচল পরিবহনের কাউণ্টার

- আপডেট সময় : ০৫:৩৩:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
- / ৯ জন পড়েছেন
স্টাফ রিপোর্টার
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোড এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দখল করে অবৈধভাবে নীলাচল পরিবহনের কাউণ্টার বসানোর কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। নীলাচল কাউন্টার ও অবৈধভাবে পার্কিং করায় মানুষের চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে। শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশের রহস্যজনক নীরবতায় সাধারণ মানুষের মাঝে নানান প্রশ্ন উঠছে। শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশ এসব পরিবহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এরা মহাসড়কে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবে বলে জানান পথচারীরা।
শুধু তাই নয় কাউণ্টার ছাড়াও মহাসড়ক দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে শতাধিক ফুটপাতের দোকান। এতে প্রতিনিয়তই সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে বড় ধরেনর যানজট, ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রী ও পথচারীদের।
স্থানীয়দের অভিযোগ, চিটাগাংরোডের জনবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েণ্ট আহসান উল্লাহ সুপার মার্কেটের সামনের অংশ। সেখানেই মহাসড়ক দখল করে বসানো হয়েছে নীলাচল পরিবহনের কাউণ্টার। এ পরিবহনের রুট পারমিট নেই। ফলে দৈনিক ৪৫০ টাকা জিপি চাঁদা দিয়ে নীলাচল ব্যানারে অর্ধশতাধিক যাত্রীবাহী বাস চলছে বিনা বাধায়। বাসগুলো মহাসড়কে পার্কিং করে রাখায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ পরিবহনের একজন বাস মালিক জানান, কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের মাসোয়ারা দিয়ে এসব পরিবহন মহাসড়কে কাউন্টার ও অবৈধ ভাবে গাড়ি পার্কিং করছে।
চিটাগাংরোড এলাকার বাসিন্দা সুমন মিয়া বলেন, রাজনৈতিক শেল্টারে নীলাচল চলছে বেপরোয়াভাবে। ডিপো থেকে মহাসড়কে আসার সময় গত বছরে ২ জন পথচারী নীলাচল বাসের চাপায় নিহত হয়েছে। এ পরিবহনের চলন্ত বাসে ১ নারী যাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটেছিল প্রায় দেড় বছর আগে। তখন ক্ষমতার প্রভাব ও বিভিন্ন মহলকে আর্থিক সুবিধা দিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়ার ছোট ভাই আবু বকর সিদ্দিক ওই ঘটনা ধামাচাপা দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নেতা জানান, রুট পারমিট না থাকার পরও গত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া পরিবহনটি চালু করেন। মাসে ৭০ হাজার টাকা চাঁদা নিয়ে মিজমিজি মধ্যপাড়া মুক্তাঝিল আবাসিক এলাকায় পরিবহনের ডিপো বানিয়ে দেন তিনি। পরিবহন দেখভাল করার জন্য মৌচাক এলাকায় নিজের তেলের পাম্মে করে দেন অফিস। পরিবহনটি নিয়ন্ত্রণ করতেন ইয়াছিন মিয়ার ছোট ভাই আবু বকর সিদ্দিক। আর কাউণ্টার বসানো হয়েছিল আহসান উল্লাহ সুপার মার্কেটের পশ্চিম পাশে খালপাড়ে। কাউণ্টার থেকে মাসে ৪০ হাজার টাকা চাঁদা নিতেন নাসিক ১ নং ওয়ার্ডের তৎকালিন কাউন্সির যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক। গত সিটি নির্বাচনে ফারুক ফেল করলে কাউণ্টারের চাঁদা নিতেন কাউন্সিলর আনোয়ার ইসলাম। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তারা সবাই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেলে পরিবহনটির নিয়ন্ত্রন নেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন। তখন ডিপো নিয়ন্ত্রনকে কেন্দ্র করে গত ১৫ মার্চ রাতে বিএনপির ইকবাল গ্রুপ ও স্বেচ্ছাসেবক দলের বাবু গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। পরে দুগ্রুপের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে ডিপো রয়ে গেছে বহাল তবিয়তে। হাইওয়ে পুলিশকে ম্যানেজ করে কাউণ্টার স্থানান্তর করা হয়েছে আহসান উল্লাহ সুপার মার্কেটের সামনে মহাসড়কে।
নীলাচল পরিবহনের ডিপো ও কাউণ্টার বসানোর বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা ইকবাল হোসেন এসবের সঙ্গে জড়িত নয় দাবি করে বলেন। আমাকে হেয় করতে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ মহল বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে।
পরিবহনের দায়িত্বে থাকা ফোরম্যান আবুল হাসেমের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি।
হাইওয়ে পুলিশের শিমরাইল ক্যাম্পের ইনচার্জ জুলহাস উদ্দিন বলেন, কোন পরিবহন হাইওয়েতে গাড়ি পার্কিং অথবা কাউন্টার বসাতে পারবে না। যদি কেউ বাসায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ মাসোহারা গ্রহণের অভিযোগটি সঠিক নয় দাবি করেন বলেন, হাইওয়ে পুলিশের নাম ভাঙিয়ে কেউ টাকা নিলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।