ঢাকা ০১:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফতুল্লায় ব্যবসায়িক অংশীদারের অর্থ আত্মসাৎ

সোজাসাপটা রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০৯:৪১:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫
  • / ২০ জন পড়েছেন

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে কোটি টাকার চাউল ও ইলেকট্রিক ব্যবসা পরিচালনার নামে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তিন ব্যবসায়ী ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগে জানা যায়, ফতুল্লার পঞ্চবটি গুলশান রোড এলাকার বাসিন্দা কামাল হোসেন (৩৭) তার দুই সহযোগী মোঃ রিপন (৩৭) ও মোঃ হোসেন (৪০)-কে সঙ্গে নিয়ে বিবাদী হোসেন আলী (৩৪) ও তার স্ত্রী মোসাঃ সাথী আক্তার (৩০) এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে যৌথভাবে পাইকারী চাউলের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন।

অভিযোগকারীদের দাবি, বিবাদী হোসেন আলী কয়েক মাস ধরে নিয়মিত ব্যবসার হিসাব দিচ্ছিলেন না। বরং গোপনে ব্যবসার মুনাফার টাকা আত্মসাৎ করছিলেন। পাশাপাশি অভিযোগকারী কামাল হোসেন চাকরিরত ছিলেন সুপারস্টার ইলেকট্রিক কোম্পানিতে। তার মাধ্যমেই হোসেন আলী কোম্পানি থেকে ৪ লক্ষ টাকার ইলেকট্রিক মালামাল বাকিতে নেয়। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ওই অর্থ ফেরত দেয়নি।

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, চলতি বছরের ৫ জুন ২০২৫ ইং তারিখে বিবাদীদ্বয় পরিকল্পিতভাবে একযোগে, যৌথ ব্যবসার ৭ লক্ষ টাকা, রিপনের কাছ থেকে নেওয়া হাওলাদ বাবদ ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা, এবং কামালের কাছ থেকে বাকিতে নেওয়া ইলেকট্রিক মালামালের ৪ লক্ষ টাকা, মোট ১২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে অন্যত্র পলায়ন করে।

এরপর ভুক্তভোগীরা একাধিকবার বিবাদীদ্বয়ের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে (০১৮৯৮৩৪৭৮৫৮, ০১৮৭৩৬২৪৫৪৫) যোগাযোগ করলে তারা টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো অর্থ ফেরত দেননি। সর্বশেষ গত ১২ জুলাই সকাল ১১টায় যোগাযোগ করলে তারা স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে কোনো টাকা ফেরত দেবেন না। বরং উল্টো অভিযোগকারী ও তার সহযোগীদের চিরতরে হত্যা করার হুমকি প্রদান করেন।

অভিযোগকারী কামাল হোসেন জানান, “বিবাদীদের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের কারণে আমি শুধু আর্থিক ক্ষতির শিকার নই, বরং আমার চাকরিরত কোম্পানির পণ্য বাকিতে দেওয়ায় আমাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হয়েছে। ফলে কোম্পানি থেকেও আমাকে চাকরিচ্যুত হতে হয়। আমরা একেবারেই নিঃস্ব হয়ে গেছি।”

এ বিষয়ে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করেও কোনো সমাধান না হওয়ায় অবশেষে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে বাধ্য হয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানায়, অভিযোগটি প্রাথমিকভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, পঞ্চবটি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক প্রতারণার ঘটনা ঘটে আসছে। অংশীদারিত্বের নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা নতুন নয়। তবে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তিনজনের পরিবার বর্তমানে চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে।

ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ফতুল্লায় ব্যবসায়িক অংশীদারের অর্থ আত্মসাৎ

আপডেট সময় : ০৯:৪১:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে কোটি টাকার চাউল ও ইলেকট্রিক ব্যবসা পরিচালনার নামে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তিন ব্যবসায়ী ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগে জানা যায়, ফতুল্লার পঞ্চবটি গুলশান রোড এলাকার বাসিন্দা কামাল হোসেন (৩৭) তার দুই সহযোগী মোঃ রিপন (৩৭) ও মোঃ হোসেন (৪০)-কে সঙ্গে নিয়ে বিবাদী হোসেন আলী (৩৪) ও তার স্ত্রী মোসাঃ সাথী আক্তার (৩০) এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে যৌথভাবে পাইকারী চাউলের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন।

অভিযোগকারীদের দাবি, বিবাদী হোসেন আলী কয়েক মাস ধরে নিয়মিত ব্যবসার হিসাব দিচ্ছিলেন না। বরং গোপনে ব্যবসার মুনাফার টাকা আত্মসাৎ করছিলেন। পাশাপাশি অভিযোগকারী কামাল হোসেন চাকরিরত ছিলেন সুপারস্টার ইলেকট্রিক কোম্পানিতে। তার মাধ্যমেই হোসেন আলী কোম্পানি থেকে ৪ লক্ষ টাকার ইলেকট্রিক মালামাল বাকিতে নেয়। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ওই অর্থ ফেরত দেয়নি।

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, চলতি বছরের ৫ জুন ২০২৫ ইং তারিখে বিবাদীদ্বয় পরিকল্পিতভাবে একযোগে, যৌথ ব্যবসার ৭ লক্ষ টাকা, রিপনের কাছ থেকে নেওয়া হাওলাদ বাবদ ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা, এবং কামালের কাছ থেকে বাকিতে নেওয়া ইলেকট্রিক মালামালের ৪ লক্ষ টাকা, মোট ১২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে অন্যত্র পলায়ন করে।

এরপর ভুক্তভোগীরা একাধিকবার বিবাদীদ্বয়ের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে (০১৮৯৮৩৪৭৮৫৮, ০১৮৭৩৬২৪৫৪৫) যোগাযোগ করলে তারা টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো অর্থ ফেরত দেননি। সর্বশেষ গত ১২ জুলাই সকাল ১১টায় যোগাযোগ করলে তারা স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে কোনো টাকা ফেরত দেবেন না। বরং উল্টো অভিযোগকারী ও তার সহযোগীদের চিরতরে হত্যা করার হুমকি প্রদান করেন।

অভিযোগকারী কামাল হোসেন জানান, “বিবাদীদের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের কারণে আমি শুধু আর্থিক ক্ষতির শিকার নই, বরং আমার চাকরিরত কোম্পানির পণ্য বাকিতে দেওয়ায় আমাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হয়েছে। ফলে কোম্পানি থেকেও আমাকে চাকরিচ্যুত হতে হয়। আমরা একেবারেই নিঃস্ব হয়ে গেছি।”

এ বিষয়ে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করেও কোনো সমাধান না হওয়ায় অবশেষে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে বাধ্য হয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানায়, অভিযোগটি প্রাথমিকভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, পঞ্চবটি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক প্রতারণার ঘটনা ঘটে আসছে। অংশীদারিত্বের নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা নতুন নয়। তবে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তিনজনের পরিবার বর্তমানে চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে।