হকার্স মার্কেটের ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ালেন মাসুদুজ্জমান
হকার্স মার্কেটের ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ালেন মাসুদুজ্জমান

- আপডেট সময় : ০৩:৪২:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
- / ১৪ জন পড়েছেন
স্টাফ রিপোর্টার
নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী হকার্স মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর পুরো শহরজুড়ে নেমে আসে এক বিষাদের ছায়া। এ ঘটনায় ৩০টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়, ক্ষতিগ্রস্ত হন অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী। এমন এক দুঃসময়ে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও মডেল গ্রুপের চেয়ারম্যান মাসুদুজ্জামান মাসুদ দুর্ঘটনাস্থলে প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
গত ১৮ জুলাই ভোর ৬ টায় চাষাড়া হকার্স মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়ার পরপরই মাসুদুজ্জামান মাসুদের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। তাঁরা আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলো পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে তাদের দুঃখ-দুর্দশার খোঁজ নেন। এ সময় মডেল গ্রুপের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানান, “স্যার (মাসুদুজ্জামান মাসুদ) প্রথমেই আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তদের অবস্থা সরেজমিনে দেখতে এবং দ্রুত সহযোগিতার পরিকল্পনা গ্রহণ করতে।”
২৯ জুলাই সোমবার বিকেলে ১২নং ওয়ার্ডের ফিলোসোপিয়া স্কুল প্রাঙ্গণে এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যেখানে উপস্থিত হন মাসুদুজ্জামান মাসুদ। সেখানে তিনি হকার্স মার্কেটের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ২০ টাকা করে প্রতীকী সহায়তা প্রদান করেন এবং বলেন, “এই অনুদান কোনো অর্থমূল্যের দিক থেকে বড় নয়, বরং এটি আমার প্রতিশ্রুতি—আমি আপনাদের দুঃসময়ে আছি এবং থাকব।”
তিনি বলেন, “আমি এখানে এসেছি আপনাদের পাশে দাঁড়াতে, শুধু সহানুভূতি জানাতে নয়—বরং ভবিষ্যতে পুনর্বাসনের জন্য আমার সামর্থ্য অনুযায়ী যা যা দরকার করব। এটি শুধু একজন রাজনীতিকের দায়িত্ব নয়, এটি একজন মানুষ হিসেবে আমার দায়িত্ব।”
তিনি তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন, “অনেকেই ভোটের সময় মানুষের দরজায় গিয়ে সেলফি তুলে চলে যান, আর দেখা মেলে না। কিন্তু আমি রাজনীতি করি মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার জন্য। আমি চাই, যারা সব হারিয়ে এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন, তারা যেন ঘুরে দাঁড়াতে পারেন।”
মাসুদ আরও বলেন, “হকার্স মার্কেট শুধু একটা মার্কেট না, এটা নারায়ণগঞ্জ শহরের অর্থনীতির এক বড় চালিকাশক্তি। যারা এখানে ব্যবসা করতেন, তারা কেউ লাখপতি ছিলেন না, কিন্তু সৎ পথে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এখন তারা যেন পথে বসে না যান, সেটা দেখা আমাদের সকলের দায়িত্ব।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেক ব্যবসায়ী মাসুদের বক্তব্যে আশ্বস্ত হন এবং কেউ কেউ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিক হান্নান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমরা সব কিছু হারাইছি, কেউ খবরও নেয়নি। মাসুদ ভাই অন্তত আমাদের কথা শুনতে এসেছেন। এটা অনেক বড় ব্যাপার।”
আরেকজন বলেন, “যত বড় রাজনীতিবিদই হোক, সাধারণ মানুষের পাশে এসে দাঁড়ানোই বড় বিষয়। উনি যেভাবে নিজে এসে আমাদের সাহস জুগিয়েছেন, সেটা আমরা ভুলব না।”
যদিও প্রতীকীভাবে দেওয়া ২০ টাকা অনুদান অনেকের কাছেই অপ্রতুল মনে হয়েছে, তবুও এটি ছিল এক ধরনের প্রতীকী সহানুভূতি ও সহমর্মিতার প্রকাশ। মাসুদ পরিস্কারভাবে জানিয়েছেন, তিনি শিগগিরই একটি পূর্ণাঙ্গ পুনর্বাসন কর্মসূচির পরিকল্পনা করছেন এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতার ব্যবস্থা করবেন।
তিনি বলেন, “আমি চাই প্রশাসন দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত করুক এবং সরকারি সহায়তার পাশাপাশি বেসরকারি সহায়তার একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করুক, যেখানে আমি নিজেও অবদান রাখতে পারব।”
মাসুদের বক্তব্যে প্রশাসনের প্রতি ছিল জোরালো আহ্বান। তিনি বলেন, “এই ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের শুধু একবার সহানুভূতি জানিয়ে দায়িত্ব শেষ নয়। প্রশাসনের উচিত হবে দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ, আর্থিক সহায়তা ও ব্যবসা পুনরায় শুরু করার সুযোগ নিশ্চিত করা। এতে করে তারা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।”
হকার্স মার্কেটের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড নারায়ণগঞ্জবাসীর মনে গভীর ক্ষতের জন্ম দিয়েছে। এ ঘটনায় ব্যবসায়ীদের বড় অংশ নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। সেই প্রেক্ষাপটে মাসুদুজ্জামান মাসুদের সহানুভূতিমূলক অবস্থান এবং ক্ষুদ্র হলেও সরাসরি সহায়তা প্রদান এক অনন্য নজির। এটি শুধু তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে না, বরং সাধারণ জনগণের মনেও স্থান করে নেবে বলে মনে করছেন নগরবাসী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, ১২ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু, নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন রানাসহ আরও অন্যান্য নেতাকর্মীরা।