ঢাকা ১০:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

জামায়াতের দুই নেতার দ্বন্দ্ব, বন্ধ ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট আউটলেট

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেট সময় : ০৭:৫১:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ১২ জন পড়েছেন

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় জামায়াতের দুই নেতার মধ্যে অংশীদারিত্ব নিয়ে বিরোধের জেরে ইসলামী ব্যাংকের একটি এজেন্ট আউটলেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় শতাধিক গ্রাহক ব্যাংকিং সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ।

এজেন্ট আউটলেটটি যৌথভাবে পরিচালনা করছিলেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আতাউর রহমান ও শান্তিরাম ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর সুজা মিয়া। আউটলেটের অংশীদারিত্ব ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এরই জেরে গত ১৬ সেপ্টেম্বর সকালে শোভাগঞ্জ বাজারে অবস্থিত আউটলেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয় ।

২০১৯ সালে সুজা মিয়া প্রথমে ব্যাংক আউটলেটটি চালুর উদ্যোগ নিলে, তার তৎকালীন জামায়াত শিবিরের পরিচয় থাকায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাকে প্রোপ্রাইটরশিপ দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে আতাউর রহমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সুজা মিয়াকে প্রোপ্রাইটরশিপ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে নিজের ভাই আলতাফ হোসেনকে প্রোপ্রাইটর করেন। তবে লিখিত চুক্তি না হওয়ায় বিতর্কের সূত্রপাত হয়। গত ৫ আগস্টের পর সুজা মিয়া আউটলেটের প্রোপ্রাইটরশিপ ফেরত চাইলে আলতাফ হোসেন মালিকানা দাবি করেন। অন্যান্য শেয়ারহোল্ডাররা অভিযোগ করেন, আলতাফ হোসেনের আউটলেটে কোনো বিনিয়োগ বা সরাসরি সম্পৃক্ততা নেই।

আউটলেটের বর্তমান ইনচার্জ মো. সুজা মিয়া অভিযোগ করেন যে তিনি নিজে ব্যাংক নিয়ে আসলেও আতাউর রহমান সুকৌশলে প্রতারণা করে ব্যাংকটির মালিকানা দখল করে নেন। তিনি উপজেলা আমীর শহিদুল ইসলাম মঞ্জুকে বারবার অবহিত করলেও তিনি বিষয়টি গুরুত্ব দেননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শেয়ারহোল্ডারও অভিযোগ করেন যে থানা আমীর সংঘাত সমাধানে ভূমিকা রাখছেন না বরং তিনি সেক্রেটারির পক্ষ নিচ্ছেন।

হঠাৎ ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন শতাধিক গ্রাহক। স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন তিনি এখানে টাকা লেনদেন করতেন। হঠাৎ তালা দেওয়ায় ব্যবসার টাকা জমা দিতে পারেননি, ফলে ব্যবসার কাজে সমস্যা হচ্ছে। কৃষকরা ধান বিক্রির টাকা তুলতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অনেক পরিবার মোবাইল ব্যাংকিং, বেতন ও বিভিন্ন লেনদেনের জন্য এ আউটলেটের ওপর নির্ভরশীল ছিল।

এ বিষয়ে ইসলামী ব্যাংকের আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বিষয়টি তদন্ত করে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। ব্যাংকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ার মতো ঘটনা এজেন্ট আউটলেটে কাম্য নয়।

স্থানীয়রা দ্রুত আউটলেট পুনরায় চালুর দাবি জানিয়ে বলেন, রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব বা ব্যক্তিগত বিরোধের কারণে যেন সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার না হন।

এ বিষয়ে ব্যাংকের বর্তমান প্রোপ্রাইটর আলতাফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সফল হওয়া যায়নি।

 

ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

জামায়াতের দুই নেতার দ্বন্দ্ব, বন্ধ ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট আউটলেট

আপডেট সময় : ০৭:৫১:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় জামায়াতের দুই নেতার মধ্যে অংশীদারিত্ব নিয়ে বিরোধের জেরে ইসলামী ব্যাংকের একটি এজেন্ট আউটলেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় শতাধিক গ্রাহক ব্যাংকিং সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ।

এজেন্ট আউটলেটটি যৌথভাবে পরিচালনা করছিলেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আতাউর রহমান ও শান্তিরাম ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর সুজা মিয়া। আউটলেটের অংশীদারিত্ব ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এরই জেরে গত ১৬ সেপ্টেম্বর সকালে শোভাগঞ্জ বাজারে অবস্থিত আউটলেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয় ।

২০১৯ সালে সুজা মিয়া প্রথমে ব্যাংক আউটলেটটি চালুর উদ্যোগ নিলে, তার তৎকালীন জামায়াত শিবিরের পরিচয় থাকায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাকে প্রোপ্রাইটরশিপ দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে আতাউর রহমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সুজা মিয়াকে প্রোপ্রাইটরশিপ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে নিজের ভাই আলতাফ হোসেনকে প্রোপ্রাইটর করেন। তবে লিখিত চুক্তি না হওয়ায় বিতর্কের সূত্রপাত হয়। গত ৫ আগস্টের পর সুজা মিয়া আউটলেটের প্রোপ্রাইটরশিপ ফেরত চাইলে আলতাফ হোসেন মালিকানা দাবি করেন। অন্যান্য শেয়ারহোল্ডাররা অভিযোগ করেন, আলতাফ হোসেনের আউটলেটে কোনো বিনিয়োগ বা সরাসরি সম্পৃক্ততা নেই।

আউটলেটের বর্তমান ইনচার্জ মো. সুজা মিয়া অভিযোগ করেন যে তিনি নিজে ব্যাংক নিয়ে আসলেও আতাউর রহমান সুকৌশলে প্রতারণা করে ব্যাংকটির মালিকানা দখল করে নেন। তিনি উপজেলা আমীর শহিদুল ইসলাম মঞ্জুকে বারবার অবহিত করলেও তিনি বিষয়টি গুরুত্ব দেননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শেয়ারহোল্ডারও অভিযোগ করেন যে থানা আমীর সংঘাত সমাধানে ভূমিকা রাখছেন না বরং তিনি সেক্রেটারির পক্ষ নিচ্ছেন।

হঠাৎ ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন শতাধিক গ্রাহক। স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন তিনি এখানে টাকা লেনদেন করতেন। হঠাৎ তালা দেওয়ায় ব্যবসার টাকা জমা দিতে পারেননি, ফলে ব্যবসার কাজে সমস্যা হচ্ছে। কৃষকরা ধান বিক্রির টাকা তুলতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অনেক পরিবার মোবাইল ব্যাংকিং, বেতন ও বিভিন্ন লেনদেনের জন্য এ আউটলেটের ওপর নির্ভরশীল ছিল।

এ বিষয়ে ইসলামী ব্যাংকের আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বিষয়টি তদন্ত করে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। ব্যাংকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ার মতো ঘটনা এজেন্ট আউটলেটে কাম্য নয়।

স্থানীয়রা দ্রুত আউটলেট পুনরায় চালুর দাবি জানিয়ে বলেন, রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব বা ব্যক্তিগত বিরোধের কারণে যেন সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার না হন।

এ বিষয়ে ব্যাংকের বর্তমান প্রোপ্রাইটর আলতাফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সফল হওয়া যায়নি।