ঢাকা ১০:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অঙ্গীকার রাখবেন ‘প্লিজ কেউ কাউকে ছেড়ে যাইয়েন না’ বলা আবিদ

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেট সময় : ০৪:৩৬:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ১৩ জন পড়েছেন

২০২৪ সালের জুলাই গণ অভ্যুত্থানে রাজধানীর চানখারপুলে আন্দোলনরতদের উদ্দেশ্যে ‘প্লিজ কেউ কাউকে ছেড়ে যাইয়েন না’ বলে আহ্বান জানিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রদল নেতা আবিদুল ইসলাম খান আবিদ। সে সময় কেউ কাউকে ছেড়ে যাননি।

তাই ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে দুনিয়া কাঁপানো জয় হাসিল করেছিল ছাত্র-জনতা। আবিদও উঠে আসেন আলোচনায়।

সেই আবিদ পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ান। নিজ ইশতেহারে সব সময় শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবেন উল্লেখ করেন। ডাকসুতে জয়ী হতে পারেননি আবিদ। তবে ইশতেহার অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে নিজের অঙ্গীকার রক্ষার কথা জানান আবিদ। এখানেই তার যাত্রা শেষ নয় বলেও ঘোষণা দেন তিনি।

ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ক্ষুদ্র জীবনে আমি এতদূর আসবো কোনোদিন ভাবিনি। নির্বাচনের আগের রাতে খালেদ মুহিউদ্দিন ভাই আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ৫ বছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চাই? আমি কোনো সদুত্তর দিতে পারিনি। আমি আসলে কোনোদিনই জানতাম না নিজেকে কোথায় দেখতে হবে, কোথায় দেখা উচিত। একের পর এক আন্দোলন-সংগ্রাম এসেছে, নিজেকে রাজপথে সঁপে দিয়েছি। সেই পথ আজ আমাকে এতদূর নিয়ে আসলো।

ইটস ওকে। এই নির্বাচনে আমার দিনটা শুরু হয় মিডিয়ার অপপ্রচার দিয়ে। দুপুর থেকেই আমি ভোটে বিভিন্ন যায়গায় একের পর এক সমস্যা খুঁজে পেয়েছি, সারাটা দিন সেসব নিয়ে কথা বলেছি। এসব অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধান ও যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে আসবে বলে আশা করেন আবিদুল ইসলাম।

তিনি আরও লিখেছেন, মানুষ হিসাবে আমরা কেউ পরিপূর্ণ না। আমি জানি, আমি আপনাদের জন্য যথেষ্ট কাজ করতে পারিনি। সত্যি বলতে জীবন আমাকে সেই সুযোগটুকুও দেয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী ভাই-বোনদের ভোট দিতে আসার জন্য আমি মন থেকে ধন্যবাদ জানাই। মাত্র ২০ দিনের ক্যাম্পেইনে আমি চেষ্টা করেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ছাত্রের কাছে ছুটে যেতে। অনেকটুকু কাছাকাছি গিয়েছি, কিন্তু সবাইকে হয়তো স্পর্শ করতে পারিনি। তবে আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, আমার যাত্রা এখানেই শেষ নয়, আমার যাত্রা আরও অনেক দীর্ঘ।

শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার অঙ্গীকার জানিয়ে ছাত্রদলের এই নেতা বলেন, আমি এখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের একজন ছাত্রনেতা। কথা দিচ্ছি, আমার নির্বাচনী ইশতেহারে যা কিছু ছিল, তা একজন ছাত্রনেতা হিসেবেই প্রশাসনের কাছ থেকে আদায় করে নিতে যা যা করা দরকার তা আমি করব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতির নতুন শুরুটা আমাদের হাত ধরেই হবে। আমরা অতন্দ্র প্রহরী হয়ে রাজপথ পাহারা দিব, নিজেদের সবটুকু দিয়ে সমগ্র বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসব। ইনশাআল্লাহ, এর প্রতিফলন আপনারা পরবর্তী ডাকসুতে দেখতে পাবেন। আবিদ আপনাদের কখনো ছেড়ে যাবে না।

বুধবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন। ফলাফলে দেখা যায়, ছাত্রশিবিরের সাদিক কায়েম ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের আবিদুল ইসলাম খান পেয়েছেন ৫ হাজার ৭০৮ ভোট।

কিন্তু তার আগেই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলেন আবিদ। ফেসবুকে ফল প্রত্যাখ্যানের ঘোষণাও দেন। ওই পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, পরিকল্পিত কারচুপির এই ফলাফল দুপুরের পরপরই অনুমান করেছি। নিজেদের মতো করে সংখ্যা বসিয়ে নিন। এই পরিকল্পিত প্রহসন প্রত্যাখ্যান করলাম।

ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

অঙ্গীকার রাখবেন ‘প্লিজ কেউ কাউকে ছেড়ে যাইয়েন না’ বলা আবিদ

আপডেট সময় : ০৪:৩৬:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

২০২৪ সালের জুলাই গণ অভ্যুত্থানে রাজধানীর চানখারপুলে আন্দোলনরতদের উদ্দেশ্যে ‘প্লিজ কেউ কাউকে ছেড়ে যাইয়েন না’ বলে আহ্বান জানিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রদল নেতা আবিদুল ইসলাম খান আবিদ। সে সময় কেউ কাউকে ছেড়ে যাননি।

তাই ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে দুনিয়া কাঁপানো জয় হাসিল করেছিল ছাত্র-জনতা। আবিদও উঠে আসেন আলোচনায়।

সেই আবিদ পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ান। নিজ ইশতেহারে সব সময় শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবেন উল্লেখ করেন। ডাকসুতে জয়ী হতে পারেননি আবিদ। তবে ইশতেহার অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে নিজের অঙ্গীকার রক্ষার কথা জানান আবিদ। এখানেই তার যাত্রা শেষ নয় বলেও ঘোষণা দেন তিনি।

ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ক্ষুদ্র জীবনে আমি এতদূর আসবো কোনোদিন ভাবিনি। নির্বাচনের আগের রাতে খালেদ মুহিউদ্দিন ভাই আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ৫ বছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চাই? আমি কোনো সদুত্তর দিতে পারিনি। আমি আসলে কোনোদিনই জানতাম না নিজেকে কোথায় দেখতে হবে, কোথায় দেখা উচিত। একের পর এক আন্দোলন-সংগ্রাম এসেছে, নিজেকে রাজপথে সঁপে দিয়েছি। সেই পথ আজ আমাকে এতদূর নিয়ে আসলো।

ইটস ওকে। এই নির্বাচনে আমার দিনটা শুরু হয় মিডিয়ার অপপ্রচার দিয়ে। দুপুর থেকেই আমি ভোটে বিভিন্ন যায়গায় একের পর এক সমস্যা খুঁজে পেয়েছি, সারাটা দিন সেসব নিয়ে কথা বলেছি। এসব অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধান ও যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে আসবে বলে আশা করেন আবিদুল ইসলাম।

তিনি আরও লিখেছেন, মানুষ হিসাবে আমরা কেউ পরিপূর্ণ না। আমি জানি, আমি আপনাদের জন্য যথেষ্ট কাজ করতে পারিনি। সত্যি বলতে জীবন আমাকে সেই সুযোগটুকুও দেয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী ভাই-বোনদের ভোট দিতে আসার জন্য আমি মন থেকে ধন্যবাদ জানাই। মাত্র ২০ দিনের ক্যাম্পেইনে আমি চেষ্টা করেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ছাত্রের কাছে ছুটে যেতে। অনেকটুকু কাছাকাছি গিয়েছি, কিন্তু সবাইকে হয়তো স্পর্শ করতে পারিনি। তবে আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, আমার যাত্রা এখানেই শেষ নয়, আমার যাত্রা আরও অনেক দীর্ঘ।

শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার অঙ্গীকার জানিয়ে ছাত্রদলের এই নেতা বলেন, আমি এখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের একজন ছাত্রনেতা। কথা দিচ্ছি, আমার নির্বাচনী ইশতেহারে যা কিছু ছিল, তা একজন ছাত্রনেতা হিসেবেই প্রশাসনের কাছ থেকে আদায় করে নিতে যা যা করা দরকার তা আমি করব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতির নতুন শুরুটা আমাদের হাত ধরেই হবে। আমরা অতন্দ্র প্রহরী হয়ে রাজপথ পাহারা দিব, নিজেদের সবটুকু দিয়ে সমগ্র বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসব। ইনশাআল্লাহ, এর প্রতিফলন আপনারা পরবর্তী ডাকসুতে দেখতে পাবেন। আবিদ আপনাদের কখনো ছেড়ে যাবে না।

বুধবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন। ফলাফলে দেখা যায়, ছাত্রশিবিরের সাদিক কায়েম ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের আবিদুল ইসলাম খান পেয়েছেন ৫ হাজার ৭০৮ ভোট।

কিন্তু তার আগেই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলেন আবিদ। ফেসবুকে ফল প্রত্যাখ্যানের ঘোষণাও দেন। ওই পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, পরিকল্পিত কারচুপির এই ফলাফল দুপুরের পরপরই অনুমান করেছি। নিজেদের মতো করে সংখ্যা বসিয়ে নিন। এই পরিকল্পিত প্রহসন প্রত্যাখ্যান করলাম।