না.গঞ্জে গার্মেন্টে অস্থিরতা, এক বছরে ৯টি বন্ধ
না.গঞ্জে গার্মেন্টে অস্থিরতা, এক বছরে ৯টি বন্ধ

- আপডেট সময় : ০৩:৩৩:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫
- / ৩ জন পড়েছেন
নারায়ণগঞ্জের পোশাক কারখানাগুলোয় অস্থিরতা বেড়েছে। এক বছরে বিভিন্ন কারণে ৯টি পোশাক কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এতে চাকরি হারিয়েছেন কয়েক হাজার শ্রমিক। এর মধ্যে ৩ আগস্ট অতিরিক্ত টিফিন বিরতির দাবিতে ফতুল্লার অ্যাসরোটেক্স গার্মেন্টে ‘শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে’ কর্মবিরতি পালন এবং অফিস কক্ষ ভাঙচুর করা হয়। এতে মালিকপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানাটি বন্ধ করে দেয়। এছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতা, ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদহার, উৎপাদন অপ্রতুলতা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ বিভিন্ন কারণে নারায়ণগঞ্জের পোশাক কারখানাগুলোয় অস্থিরতা বেড়েছে।
জেলা শিল্পাঞ্চল পুলিশ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে ছোট-বড় মিলিয়ে ১ হাজার ৮৩৪টি পোশাক কারখানা রয়েছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানাগুলোর মধ্যে নিট গার্ডেন, একে ফ্যাশন লিমিটেড, লা মেইজন কচুর লিমিটেড, মোল্লা নিট ফ্যাশনসহ অন্তত ৮টি বড় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নারায়ণগঞ্জ কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের হিসাবে, নারায়ণগঞ্জে নিবন্ধন করা পোশাক কারখানা ১ হাজার ১০টি। এর মধ্যে এক বছরে ৯টি কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।
অ্যাসরোটেক্স গার্মেন্টের মালিক আসাদুল ইসলাম বলেন, আমি লাভবান না হলেও কোনো মাসে শ্রমিকদের বেতনভাতা দেরিতে দিইনি। এরপরও শ্রমিকদের তুচ্ছ দাবিতে আন্দোলনের কারণে বিদেশি বায়াররা ভয়ে সরে গেছেন। এখন ইচ্ছা করলেই কারখানা খোলা সম্ভব নয়। এএসটি গার্মেন্টের মালিক আতিকুর রহমান বলেন, অর্ডার কমে যাওয়ার পাশাপাশি আর্থিক সংকটে কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভর্তুকি দিয়ে কয়েক মাস কারখানাটি চালানো হয়।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি এমএ শাহীন বলেন, বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানার অধিকাংশ শ্রমিক এখন অটোরিকশা চালাচ্ছেন, কিছু সংখ্যক শ্রমিক গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ জেলার উপমহাপরিদর্শক রাজীব চন্দ্র ঘোষ বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে সব সময় চেষ্টা থাকে কোনো কারখানা যেন স্থায়ীভাবে বন্ধ না হয়।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সহসভাপতি মোরশেদ সারোয়ার সোহেল বলেন, পোশাক খাতের সমস্যা শুরু হয়েছে করোনাকালীন থেকেই। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে আরও নাজুক অবস্থা তৈরি হলে একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। দেশে স্থিতিশীল না এলে আগামী দিনে আরও কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে।
নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু বলেন, বিদেশি বায়ার না পাওয়া, আর্থিক সংকট ও বিভিন্ন সিন্ডিকেটের কারণে শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে কিছু মালিক পতিত সরকারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন, তারাও আত্মগোপনে চলে গেছেন। সরকারের উচিত যে শক্তিগুলো শিল্প-কলকারখানা বন্ধ করে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করার চেষ্টায় জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর অবস্থানে যাওয়া।