না.গঞ্জে বিভিন্ন স্থানে আ.লীগের অগ্নিসংযোগ ও ঝটিকা মিছিল
না.গঞ্জে বিভিন্ন স্থানে আ.লীগের অগ্নিসংযোগ ও ঝটিকা মিছিল

- আপডেট সময় : ০৫:২৫:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫
- / ৪৩ জন পড়েছেন
সোজাসাপটা রিপোর্ট
সারাদেশে আওয়ামীলীগের ঘোষিত ৪টি অঙ্গসংগঠনের হরতাল কর্মসূচির অংশ হিসবে ২০শে জুলাই রাতে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ ও ঝটিকা মিছিল করেন ছাত্রলীগ ,যুবলীগ, শ্রমিকলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকর্মীরা।
রবিবার ২০ শে জুলাই দিবাগত রাত ১টা থেকে শুরু করে রাত ৩টা পর্যন্ত নগরীর কাশিপুর, পঞ্চপটি, অক্টোঅফিস এর মোড়ে অগ্নিসংযোগ ও মশাল মিছিল করেন নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা।
প্রথমে রাত ১টায় ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে হরতাল কর্মসূচি পালন করনে যুবলীগের কর্মীরা। পরে স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও শ্রমীকলীগের কর্মীরা ১টা ৩০ মিনিটে পঞ্চপটি এলাকায় জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে একটি ঝটিকা মিছিল করেন। পরে রাত ২টায় ফতুল্লার মাসদাইর এলাকার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ছাত্রলীগের কর্মীরা টায়ার জ্বালিয়ে অগ্নিসংযোগ ও মিছিলের প্রস্তুতিকালে স্থানীয় ছাত্রদল ও যুবদলের কর্মীদের হাতে দুইজন আটক হন। পরে স্থানীয় থানায় তাদের হস্তান্তর করা হয় বলে জানাযায়।
এমন আচমকা রাজনৈতিক প্রদর্শন অনেককেই ভাবিয়ে তুলেছে এটা কি শুধুই দলীয় হরতালের অংশ, নাকি এর গভীরে রয়েছে বড় কোনো রাজনৈতিক বার্তা?
সুত্রমতে, এটি ছিল আওয়ামী লীগের চারটি অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ এর কেন্দ্রঘোষিত অবস্থান ও হরতাল কর্মসূচি এর অংশ। ঢাকায় এই কর্মসূচির মধ্যে অবস্থান ধর্মঘট ও বিক্ষোভ মিছিল দেখা গেছে। তবে নারায়ণগঞ্জে এর রূপ ছিল অনেকটাই ভিন্ন ও আগ্রাসী।
সুত্রনুসারে, গত ৫ আগষ্ট হাসিনা পলায়নের পর সারাদেশে আওয়ামীলীগসহ তার সকল অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা পালিয়ে যায়। আবার কেউ কেউ গ্রেফতার হয়েছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর হাতে। এরপর থেকেই সারাদেশে আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক মাঠে নিষ্ক্রিয়।
তবে সাম্প্রতি গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির সমাবেশকে কেদ্র করে ঘটে যাওয়ার ঘটনায় আবারও মাথা চারা দিয়ে উঠছে আওয়ামীলীগ এর প্রমাণ সরূপ বলা যায় ২০ শে জুলাই নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশে আওয়ামীলী ডাকা হরতাল কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের সরব অবস্থানে।
এইদিকে, সাধারণ জনগণ এই ঘটনাগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। রাতের অগ্নিসংযোগ ও ঝটিকা মিছিল নিরাপত্তার হুমকি বলে মনে করছেন নগরবাসীর অনেকেই।
নগরীর রাজনৈতিক বোদ্ধাদের মতে, এটা নিছক হরতালের অংশ না। এটা একধরনের ভবিষ্যৎ মহড়া। যারা ক্ষমতায় আছে, তারাও বুঝে গেছে জনগণের সমর্থন কিছুটা ক্ষয়ে গেছে। তাই মাঠে হঠাৎ করে আগুনের রাজনীতি করে ভয় ও শক্তি একসাথে দেখাতে চাচ্ছে। এবং রাতের শহরে রাজনৈতিক সংগঠনের এই ধরনের শোডাউন ভবিষ্যতে অপরাধীদেরও উৎসাহিত করতে পারে বলে তাদের ধারণা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিশ্চুপ থাকলে এটি নৈরাজ্যে পরিণত হতে পারে।
অন্যদিকে নগরীর সচেতন মহলের ভাষ্যমতে, নারায়ণগঞ্জে ২০ জুলাই রাতের অগ্নিসংযোগ ও ঝটিকা মিছিল নিছক রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়। এটি একদিকে রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শনের রণকৌশল, অন্যদিকে ভবিষ্যৎ সংঘাত ও দখল রাজনীতির ইঙ্গিত। এ ধরনের ঘটনা শুধু আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নই তোলে না, বরং দলীয় রাজনীতির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা, নেতৃত্বের দেউলিয়াপনা এবং সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর প্রশ্ন তোলে? জনগণ চায় শান্তি, শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা কিন্তু যখন রাত গভীর হলে শহরের রাস্তায় আগুন জ্বলে ওঠে, তখন ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত না হয়ে উপায় থাকে না।
অগ্নিসংযোগ ও ঝটিকা মিছিল সম্পর্কে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার জানায়, আমরা ঘটনার সাথে সাথেই ব্যবস্থা গ্রহন শুরু করেছি। শহর জুড়ে অভিযান চলছে অপরাধীদের ধরতে। এবং এই ঘটনায় দুইজনকে ঘটনাস্থলে থেকে স্থানীয়রা ধরে ফতুল্লায় দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।