লারা থেকে মুল্ডার, টেস্টের সর্বোচ্চ ৫ ইনিংস
লারা থেকে মুল্ডার, টেস্টের সর্বোচ্চ ৫ ইনিংস

- আপডেট সময় : ০৪:১১:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
- / ৪৬ জন পড়েছেন
টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ডটা উইয়ান মুল্ডারের দখলেই চলে যেতে পারত। কিন্তু রোববার তিনি রেকর্ডটা ভাঙার ৩৪ রান আগেই ইনিংস ঘোষণা করে বসেন। ফলে লারার রেকর্ডটা তার কাছেই রয়ে যায়।
শুধু লারা নয়, মুল্ডারের ইনিংস ঘোষণার ফলে লারার পরে আরও ৩ রেকর্ড টিকে যায় বহাল তবিয়তে। এক নজরে টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৫ ইনিংসে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক–
ব্রায়ান লারা – ৪০০ (২০০৪, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে)
ব্রায়ান লারা আগেও একবার এই রেকর্ড গড়েছিলেন, পরে তা হারিয়েছিলেন ম্যাথিউ হেইডেনের কাছে। কিন্তু আবার তা ফিরেও পেয়েছিলেন। দুবারই প্রতিপক্ষ ছিল ইংল্যান্ড, মাঠ ছিল অ্যান্টিগা। চার ম্যাচের সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ চতুর্থ টেস্টে ব্যাট করে ৭৫১/৫ রানে ইনিংস ঘোষণা করে। ইনিংসের ১৪তম ওভারে নামেন লারা এবং আর কেউ তাকে আউট করতে পারেনি। ১৩১ বলে সেঞ্চুরি, ২৬০ বলে ডাবল সেঞ্চুরি, আর ৪০৪ বলে ট্রিপল সেঞ্চুরি করে তৃতীয় দিনে স্পিনার গ্যারেথ ব্যাটিকে সুইপ করে পৌঁছে যান ৪০০ রানে। এই ইনিংসে ছিল ৪৩টি চার এবং ৪টি ছক্কা। লারা এখনো টেস্ট ইতিহাসের একমাত্র ব্যাটার যিনি ৪০০ রানে অপরাজিত ছিলেন।
ম্যাথিউ হেইডেন – ৩৮০ (২০০৩, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে)
৪৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো কোনো অ-ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ব্যাটার টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের মালিক হন। পার্থে প্রথম টেস্টে জিম্বাবুয়ে বোলিং নেয়, যা পরে তাদের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়ায়। হেইডেন ইনিংসের শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করেন। হিথ স্ট্রিককে মিড-অফে ঠেলে ৩৬২ বলে পূর্ণ করেন ট্রিপল সেঞ্চুরি। এরপর রে প্রাইসকে লং-অন দিয়ে খেলে পেরিয়ে যান লারার পুরনো ৩৭৫ রানের রেকর্ড। শেষ পর্যন্ত তিনি আউট হন ৩৮০ রানে, ৩৮টি চার ও ১১টি ছক্কার ইনিংসে।
ব্রায়ান লারা – ৩৭৫ (১৯৯৪, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে)
২৫ বছর বয়সী লারা প্রথমবার রেকর্ডবুকে নিজের নাম লেখান এই ইনিংস দিয়ে। সিরিজে ৩-১ এগিয়ে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেষ টেস্টে আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ছিল। ১২ রানে ২ উইকেট হারানোর পর নামেন লারা। প্রথম দিনেই সেঞ্চুরি করেন, দ্বিতীয় দিনে ট্রিপল সেঞ্চুরি। তৃতীয় দিনে ক্রিস লুইসকে পুল করে পেরিয়ে যান স্যার গ্যারি সোবার্সের ৩৬৫* রানের রেকর্ড। ৫৩৮ বলের ইনিংসে মারেন ৪৫টি চার, এবং শেষ পর্যন্ত থামেন ৩৭৫ রানে।
মাহেলা জয়াবর্ধনে – ৩৭৪ (২০০৬, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে)
২০০৬ সালে কলম্বোতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে মাহেলা জয়াবর্ধনে এক দারুণ ইনিংস খেলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথমে ব্যাট করে অলআউট হয় ১৬৯ রানে। শ্রীলঙ্কা ১৪/২ স্কোরে বিপদে পড়ে, তখন কুমার সাঙ্গাকারার সঙ্গে জুটি বাঁধেন জয়াবর্ধনে। তারা তৃতীয় উইকেটে যোগ করেন ৬২৪ রান, যা এখনো বিশ্বরেকর্ড। সাঙ্গাকারা আউট হন ২৮৭ রানে, আর জয়াবর্ধনে ৪৯১ বলে ট্রিপল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। ৫৭২ বলে ৪৩টি চার ও ১টি ছক্কা মেরে থামেন ৩৭৪ রানে।
উইয়ান মুল্ডার– ৩৬৭ (২০২৫, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে)
সদ্যই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে আসা দক্ষিণ আফ্রিকা এই ম্যাচে নেমেছিল তাদের নিয়মিত অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে ছাড়াই। তার জায়গায় দায়িত্ব পান উইয়ান মুল্ডার। তবে তিনি তার কাজটা ভালোভাবেই করেছেন। জিম্বাবুয়ের বোলারদের ওপর স্টিম রোলার চালিয়ে প্রথম দিন শেষেই অপরাজিত ছিলেন ২৬৪ রানে।
দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনেও তিনি ব্যাট চালিয়েছেন দারুণ গতিতে। সেশন শেষে যখন ৩৬৭ রানে তিনি অপরাজিত, তখন মনে হচ্ছিল লারার রেকর্ডটা বুঝি তিনি ভেঙেই ফেলতে চলেছেন। তবে এরপরই ইনিংস ঘোষণা করে দেন মুল্ডার। ফলে লারা তো বটেই, টেস্ট ক্রিকেটের শীর্ষ চারটি ইনিংসও অক্ষতই রয়ে যায়।
তবে লারার সঙ্গে তার ইনিংসের মিল আছে এক জায়গায়। লারা তার ইনিংস শেষে মাঠ ছেড়েছিলেন অপরাজিত থেকে, মুল্ডারও ঠিক তাই।