ঢাকা ০২:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অবৈধ উচ্ছেদে গিয়ে বদলি হলেন ভূমি কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন

সোজাসাপটা রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০৮:০১:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৩১২ জন পড়েছেন

রেলের সম্পত্তি দখল উচ্ছেদ – লিজ সংক্রান্ত নানা দুর্নীতি এবং টাকা আত্মসাৎসহ পাহাড়সম অভিযোগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয় রেলওয়ে ল্যান্ডস অ্যান্ড বিল্ডিংয়ের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ও ডেপুটি কমিশনার নাসির উদ্দিন মাহমুদকে।

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার চাষাঢ়ায় কয়েক শত ব্যাক্তি মালিকানাধীন প্রায় পাঁচ একর জমি রেলওয়ের দাবি করে এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা উচ্ছেদের পায়তারা করেছিলো। এর প্রতিবাদে বিক্ষুব্দ এলাকাবাসী মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনসহ নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বরাবর স্মারকলিপিও প্রদান করেন।

ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা বাংলাদেশ রেলওয়ে কমলাপুর, ঢাকার ফিল্ড কানুনগো মো: জিয়াউল হকের মাধ্যমে মৌখিকভাবে হুমকি দিয়েছিলো। যেখানে বলা হয়, সেপ্টেম্বরের ৩ তারিখের মধ্যে রেলওয়ের জমি ছেড়ে দিতে হবে। অন্যথায় ৪ সেপ্টেম্বর তারা জমি থেকে চোখ বন্ধ করে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। আরো বলা হয়, এই জমিতে বসবাস করতে হলে রেল হতে লিজ নিয়ে বসবাস করতে হবে। এমনকি উচ্ছেদের সময় কোন ব্যক্তিমালকানাধীন কাগজপত্র দেখা হবেনা। তাদের এই আচরণ এবং হুমকি সাধারণ জণগনের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।

আর রহস্যজনক বিষয় হচ্ছে, ফিল্ড কানুনগো মো: জিয়াউল হক ব্যক্তিমালিকাধীন জায়গার একাধিক মালিককে তার ভিজিটিং কার্ড দিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করার কথা বলেন। এর ফলে তাদের অসৎ উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়ে উঠে।

নিউ চাষাঢ়া পঞ্চায়েত কমিটির অপর সদস্য মোমেনুর রহমান খান বলেন, সরকারী এই কর্মকর্তা অবৈধ উপায়ে মালিকদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, এর আগে ২০১৭ সালে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডাবল রেল লাইনের কাজের সময় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা হয়েছে। তখন আমাদের জমির বিষয়ে রেলওয়ে কোন দাবি করেনি এবং কোন অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেনি। রেলের নিজস্ব অধিগ্রহনকৃত জায়গাতে কাজ চলমান থাকে। সেসময় রেলের যায়গা চিহ্নিত করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে দেয়া হয়।

নাসির উদ্দিন মাহমুদ ১৮২২ সালের দলিলের দোহায় দিয়ে এভাবেই সাধারণ জনগণের উপর নানা ভাবে তার অপকর্মের বলি করার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা জানান, যারা জমির প্রকৃত মালিক তাদের যায়গা উচ্ছেদ করা হবে না। এ কথার পরও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ মাইকিং ও উচ্ছেদ অভিযান করার ঘোষণা করে এবং বারবার বলে, কারো যায়গার দলিল বা কোন প্রকার কাগজ দেখা হবে না।

অবশেষে জেলা প্রশাসকের কঠোর হস্তক্ষেপে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করে রেল কর্তৃপক্ষকে ১৫ দিনের সময় দেয়া হয় যেন তারা তাদের যায়গার দলিলপত্র নিয়ে আসে আর ব্যাক্তি মালিকানাধীন দাবী করা সকলের দলিলের কপি জেলা প্রশাসকের কাছে জমা রাখা হয়।

এরপর বিশদিন পার হলেও রেলের এই ভূমি কর্মকর্তা তার কোন কাগজপত্র দাখিল করতে পারেনি।

এছাড়াও দেশের যেখানেই তিনি গেছেন সেখানেই এসব অপকর্ম করে বেড়িয়েছেন। এর আগে তিনি নিজে উপস্থিত থেকে গত মে মাসে ময়মনসিংহ নগরীর সানকিপাড়া বাজার এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। সেখানে তার উচ্ছেদের ব্যাপকতা আঁচ করতে না পারায় অনেকেই তাদের দোকান ও মালামাল সরাতে পারেননি।

ময়মনসিংহ পৌরসভা গঠিত হয় ১৮৬৯ সালে। নগরীতে এ বাজারগুলো প্রায় ৫০-৬০ বছর আগে থেকেই জমজমাটভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। সেখানেও তিনি রেলের জমি বলে ময়মনসিংহ সিটির যায়গা দখলের চেষ্টা করেও পরে ব্যর্থ হয়ে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করেন।

সেখানকার মাছ ব্যবসায়ী সবুজ মিয়া জানান, রেললাইনের পাশে সিটি কর্পোরেশন শেড ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে। আমরা সেখানে দীর্ঘদিন ইজারা দিয়ে ব্যবসা করছি। রেলের ভ্রাম্যমাণ আদালত এসে হঠাৎ আমাদের বাজারটি ভেঙে দিয়েছে। পরে শেড ঘরটি ভাঙতে আসলে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ ও ইজারাদাররা বাধা দিলে তারা ফেরত চলে যায়।

সংশ্লিষ্ট ‎সূত্রে জানা যায়, রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে যুগ্মসচিব আবুল হায়াত মো. রফিকের স্বাক্ষরিত প্রেষণ-১ শাখা থেকে পাঠানো এক প্রজ্ঞাপন আদেশে তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়।

‎বদলি আদেশে বলা হয়, আগামী ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করবেন, অন্যথায় সেই তারিখ অপরাহ্ন থেকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত (স্ট্যান্ড রিলিজড) হবেন।

‎বদলির প্রজ্ঞাপনের এ অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সিনিয়র সচিব/সচিব, রেক্টর, প্রধান উপদেষ্টার একান্ত সচিব, উপপরিচালক, সিনিয়র সচিবের একান্ত সচিব (জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়)সহ বেশ কয়েকটি দপ্তরে পাঠানো হয়।

এর পরও আগের অফিসে বসে সন্ধ্যার পর রুমের দরজা আটকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রেওয়ের ফাইল স্বাক্ষর করছেন।

‎মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় সরেজমিন কমলাপুর রেলওয়ে ল্যান্ডস অ্যান্ড বিল্ডিংয়ের বিভাগীয় অফিসে গিয়ে এমন কর্মকাণ্ড দেখা যায়।

‎নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলওয়ের এক কর্মকর্তা জানান, নাসির উদ্দিন মাহমুদকে বিভিন্ন অপরাধের দায়ে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। কিন্তু তিনি বদলিকৃত অফিসে গিয়ে হাজিরা দিয়ে এসেই আগের অফিসে পূর্বের তারিখ দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ফাইলগুলো স্বাক্ষর করছেন।  আমরা তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছি না। আমাদের মধ্যে দুজনকে ইতোমধ্যে তার রুমে নিয়ে মোবাইলগুলো জব্দ করে রুমের ভিতর থেকে তালা লাগিয়ে এ কাজ করছেন।

‎এ ঘটনায় কমলাপুর স্টেশনের নিচ তলার ভূ-সম্পত্তি অফিসে গিয়ে ভেতরে থেকে দরজা বন্ধ করে রাখতে দেখা যায়। তাকে কয়েক দফায় কল দিয়ে এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে তার কোনো সাড়া মেলেনি।

‎তবে এ ঘটনায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ভূ-সম্পত্তি অফিসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতায় বেঁচে যায় প্রায় দেড় শতাধিক মানুষের শত বছরের আঁকড়ে রাখা ভিটে বাড়ি। তাই এলাকাবাসীর মাঝে দেখা যায় স্বস্থির আভা।

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

অবৈধ উচ্ছেদে গিয়ে বদলি হলেন ভূমি কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন

আপডেট সময় : ০৮:০১:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রেলের সম্পত্তি দখল উচ্ছেদ – লিজ সংক্রান্ত নানা দুর্নীতি এবং টাকা আত্মসাৎসহ পাহাড়সম অভিযোগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয় রেলওয়ে ল্যান্ডস অ্যান্ড বিল্ডিংয়ের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ও ডেপুটি কমিশনার নাসির উদ্দিন মাহমুদকে।

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার চাষাঢ়ায় কয়েক শত ব্যাক্তি মালিকানাধীন প্রায় পাঁচ একর জমি রেলওয়ের দাবি করে এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা উচ্ছেদের পায়তারা করেছিলো। এর প্রতিবাদে বিক্ষুব্দ এলাকাবাসী মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনসহ নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বরাবর স্মারকলিপিও প্রদান করেন।

ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা বাংলাদেশ রেলওয়ে কমলাপুর, ঢাকার ফিল্ড কানুনগো মো: জিয়াউল হকের মাধ্যমে মৌখিকভাবে হুমকি দিয়েছিলো। যেখানে বলা হয়, সেপ্টেম্বরের ৩ তারিখের মধ্যে রেলওয়ের জমি ছেড়ে দিতে হবে। অন্যথায় ৪ সেপ্টেম্বর তারা জমি থেকে চোখ বন্ধ করে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। আরো বলা হয়, এই জমিতে বসবাস করতে হলে রেল হতে লিজ নিয়ে বসবাস করতে হবে। এমনকি উচ্ছেদের সময় কোন ব্যক্তিমালকানাধীন কাগজপত্র দেখা হবেনা। তাদের এই আচরণ এবং হুমকি সাধারণ জণগনের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।

আর রহস্যজনক বিষয় হচ্ছে, ফিল্ড কানুনগো মো: জিয়াউল হক ব্যক্তিমালিকাধীন জায়গার একাধিক মালিককে তার ভিজিটিং কার্ড দিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করার কথা বলেন। এর ফলে তাদের অসৎ উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়ে উঠে।

নিউ চাষাঢ়া পঞ্চায়েত কমিটির অপর সদস্য মোমেনুর রহমান খান বলেন, সরকারী এই কর্মকর্তা অবৈধ উপায়ে মালিকদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, এর আগে ২০১৭ সালে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডাবল রেল লাইনের কাজের সময় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা হয়েছে। তখন আমাদের জমির বিষয়ে রেলওয়ে কোন দাবি করেনি এবং কোন অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেনি। রেলের নিজস্ব অধিগ্রহনকৃত জায়গাতে কাজ চলমান থাকে। সেসময় রেলের যায়গা চিহ্নিত করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে দেয়া হয়।

নাসির উদ্দিন মাহমুদ ১৮২২ সালের দলিলের দোহায় দিয়ে এভাবেই সাধারণ জনগণের উপর নানা ভাবে তার অপকর্মের বলি করার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা জানান, যারা জমির প্রকৃত মালিক তাদের যায়গা উচ্ছেদ করা হবে না। এ কথার পরও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ মাইকিং ও উচ্ছেদ অভিযান করার ঘোষণা করে এবং বারবার বলে, কারো যায়গার দলিল বা কোন প্রকার কাগজ দেখা হবে না।

অবশেষে জেলা প্রশাসকের কঠোর হস্তক্ষেপে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করে রেল কর্তৃপক্ষকে ১৫ দিনের সময় দেয়া হয় যেন তারা তাদের যায়গার দলিলপত্র নিয়ে আসে আর ব্যাক্তি মালিকানাধীন দাবী করা সকলের দলিলের কপি জেলা প্রশাসকের কাছে জমা রাখা হয়।

এরপর বিশদিন পার হলেও রেলের এই ভূমি কর্মকর্তা তার কোন কাগজপত্র দাখিল করতে পারেনি।

এছাড়াও দেশের যেখানেই তিনি গেছেন সেখানেই এসব অপকর্ম করে বেড়িয়েছেন। এর আগে তিনি নিজে উপস্থিত থেকে গত মে মাসে ময়মনসিংহ নগরীর সানকিপাড়া বাজার এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। সেখানে তার উচ্ছেদের ব্যাপকতা আঁচ করতে না পারায় অনেকেই তাদের দোকান ও মালামাল সরাতে পারেননি।

ময়মনসিংহ পৌরসভা গঠিত হয় ১৮৬৯ সালে। নগরীতে এ বাজারগুলো প্রায় ৫০-৬০ বছর আগে থেকেই জমজমাটভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। সেখানেও তিনি রেলের জমি বলে ময়মনসিংহ সিটির যায়গা দখলের চেষ্টা করেও পরে ব্যর্থ হয়ে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করেন।

সেখানকার মাছ ব্যবসায়ী সবুজ মিয়া জানান, রেললাইনের পাশে সিটি কর্পোরেশন শেড ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে। আমরা সেখানে দীর্ঘদিন ইজারা দিয়ে ব্যবসা করছি। রেলের ভ্রাম্যমাণ আদালত এসে হঠাৎ আমাদের বাজারটি ভেঙে দিয়েছে। পরে শেড ঘরটি ভাঙতে আসলে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ ও ইজারাদাররা বাধা দিলে তারা ফেরত চলে যায়।

সংশ্লিষ্ট ‎সূত্রে জানা যায়, রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে যুগ্মসচিব আবুল হায়াত মো. রফিকের স্বাক্ষরিত প্রেষণ-১ শাখা থেকে পাঠানো এক প্রজ্ঞাপন আদেশে তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়।

‎বদলি আদেশে বলা হয়, আগামী ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করবেন, অন্যথায় সেই তারিখ অপরাহ্ন থেকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত (স্ট্যান্ড রিলিজড) হবেন।

‎বদলির প্রজ্ঞাপনের এ অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সিনিয়র সচিব/সচিব, রেক্টর, প্রধান উপদেষ্টার একান্ত সচিব, উপপরিচালক, সিনিয়র সচিবের একান্ত সচিব (জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়)সহ বেশ কয়েকটি দপ্তরে পাঠানো হয়।

এর পরও আগের অফিসে বসে সন্ধ্যার পর রুমের দরজা আটকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রেওয়ের ফাইল স্বাক্ষর করছেন।

‎মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় সরেজমিন কমলাপুর রেলওয়ে ল্যান্ডস অ্যান্ড বিল্ডিংয়ের বিভাগীয় অফিসে গিয়ে এমন কর্মকাণ্ড দেখা যায়।

‎নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলওয়ের এক কর্মকর্তা জানান, নাসির উদ্দিন মাহমুদকে বিভিন্ন অপরাধের দায়ে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। কিন্তু তিনি বদলিকৃত অফিসে গিয়ে হাজিরা দিয়ে এসেই আগের অফিসে পূর্বের তারিখ দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ফাইলগুলো স্বাক্ষর করছেন।  আমরা তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছি না। আমাদের মধ্যে দুজনকে ইতোমধ্যে তার রুমে নিয়ে মোবাইলগুলো জব্দ করে রুমের ভিতর থেকে তালা লাগিয়ে এ কাজ করছেন।

‎এ ঘটনায় কমলাপুর স্টেশনের নিচ তলার ভূ-সম্পত্তি অফিসে গিয়ে ভেতরে থেকে দরজা বন্ধ করে রাখতে দেখা যায়। তাকে কয়েক দফায় কল দিয়ে এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে তার কোনো সাড়া মেলেনি।

‎তবে এ ঘটনায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ভূ-সম্পত্তি অফিসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতায় বেঁচে যায় প্রায় দেড় শতাধিক মানুষের শত বছরের আঁকড়ে রাখা ভিটে বাড়ি। তাই এলাকাবাসীর মাঝে দেখা যায় স্বস্থির আভা।