ফ্রান্সে বন্দি এক নারীর জন্য কেন ‘বিশাল ছাড়’ দিচ্ছে ইরান?
ফ্রান্সে বন্দি এক নারীর জন্য কেন ‘বিশাল ছাড়’ দিচ্ছে ইরান?

- আপডেট সময় : ০৪:২৭:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ৭ জন পড়েছেন
ফ্রান্সের কারাগারে থাকা এক নারীর জন্য বিশাল এক ছাড় দিচ্ছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি জানিয়েছেন, ফ্রান্সে বন্দি থাকা একজন ইরানি নাগরিকের বিনিময়ে ইরানে আটক দুই ফরাসি বন্দির মুক্তির একটি চুক্তি প্রায় সম্পন্ন হতে চলেছে।
প্রস্তাবিত এই বিনিময়ের মধ্যে রয়েছেন মাহদিয়ে এসফানদিয়ারি নামের ৩৯ বছর বয়সি এক ইরানি নারী, যিনি গত ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে প্যারিসের উপকণ্ঠের একটি কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
তিনি টেলিগ্রামে একটি বার্তা প্রকাশ করেছিলেন, যেখানে অবরুদ্ধ গাজায় চলমান ইসরাইলি গণহত্যার নিন্দা জানানো হয়। মূলত এই বার্তা প্রকাশের পরই তাকে গ্রেফতার করা হয়।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) প্রেস টিভির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাস দেড়েক ধরে ফ্রান্সের অন্যতম কুখ্যাত কারাগারে বন্দি থাকা এসফানদিয়ারিকে প্রথম দুই সপ্তাহে তার পরিবারের সঙ্গে কোনোরকম যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি।
ইরান বারবার তার মুক্তির দাবি জানিয়েছে এবং বলেছে, তাকে অন্যায়ভাবে আটক করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে আরাগচি বলেন, ‘আমরা অনেক কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি এবং এখন বলতে পারি, ইরানে আটক ফরাসি বন্দিদের সঙ্গে ইরানি নাগরিকের বিনিময়ের বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে’।
এসফানদিয়ারির পরিবার ও বন্ধুরা জানিয়েছেন, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ফ্রান্সে তার বাড়িতে সম্পূর্ণ তল্লাশি চালায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী, যা পুরো ঘটনাটিকে অনেকটা অপহরণের মতো করে তোলে।
গ্রেফতারের পরের দুই দিন তার অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। পরিবার ও বন্ধুদের ধারাবাহিক অনুসন্ধানের পর তারা জানতে পারেন, তিনি পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।
পরে তাকে ফ্রেসনের কারাগারে স্থানান্তর করা হয়, যা রাজধানী প্যারিস থেকে প্রায় ৪৭০ কিলোমিটার দূরে। এই দূরত্বের কারণে তার পরিবার ও বন্ধুদের পক্ষে মামলার অগ্রগতি অনুসরণ বা কোনো সহায়তা দেওয়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
পেশায় ভাষাবিজ্ঞানী এসফানদিয়ারি ফরাসি ভাষায় ডিগ্রিধারী এবং গত আট বছর ধরে ফ্রান্সের লিওঁ শহরে বসবাস করছেন। তিনি লুমিয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন অধ্যাপক, অনুবাদক ও দোভাষী হিসেবে কাজ করেন।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ফরাসি কর্তৃপক্ষ পুরো এক মাস কোনো তথ্য সরবরাহ করতে অস্বীকার করে, যদিও এসফানদিয়ারির পরিবারের আবেদনে ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে।
এদিকে, ইরানি কর্তৃপক্ষ ২০২২ সালের ৭ মে সিসিল কোলার (৪০) এবং জ্যাক প্যারিস (৭০) নামে দুই ফরাসি নাগরিককে গ্রেফতার করে। তাদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়।