আড়াইহাজারে বিএনপি-যুবদলের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত ৩০

- আপডেট সময় : ০১:১৫:১৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
- / ১ জন পড়েছেন
আড়াইহাজারে স্থানীয়ভাবে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র বিএনপি ও যুবদলের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্তত ছয়জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
উপজেলার চরাঞ্চল কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের খালিয়ারচর পশ্চিমপাড়া গ্রামে শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকাল দশটা থেকে অন্তত দেড় ঘন্টা উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষ চলে বলে জানান জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (‘গ’ সার্কেল) মেহেদী ইসলাম।
আগ্নেয়াস্ত্র, টেঁটা, বল্লম ও দেশীয় তৈরি ধারালো অস্ত্র নিয়ে তারা সংঘর্ষে জড়ান। খবর পেয়ে পরে অতিরিক্ত পুলিশ সেখানে মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয় বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয়ভাবে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মেঘনা নদী বেষ্টিত কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি কবির হোসেনে সঙ্গে ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ফকির জহিরুল ইসলামের অনুসারীদের পুরোনো দ্বন্দ্ব রয়েছে। গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দু’জনই এলাকায় প্রভাব ধরে রাখতে নতুন লোকজনকে দলে ভেড়াতে শুরু করেন। এ নিয়ে ‘ফ্যাসিস্টের দোসরদের পুনর্বাসন চলছে’ অভিযোগ তুলে উভয়পক্ষের অনুসারীরা আগেও একাধিকবার বাকবিতন্ডা ও মারামারির ঘটনায় জড়িয়েছেন। সম্প্রতি গ্রামের একটি হত্যা মামলাকে কেন্দ্র করেও তাদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব বাড়ে।
শুক্রবার বিকেলেও জহিরুল ও কবিরের অনুসারীদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয় যা শনিবার সকালের সংঘর্ষে রূপ নেয়। খালিয়ারচর পশ্চিমপাড়া গ্রামের ফকির বাড়ি জামে মসজিদের সামনে উভয় পক্ষের লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এই সময় কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দও শুনতে পেয়েছেন বলে জানান স্থানীয়রা।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে সংঘর্ষে আহত খায়ের উদ্দিন (৪২), আব্দুল মতিন (৫০), জোনায়েত মিয়া (২৫), কালু মিয়া (৩৭), খলিলুর রহমান (৪০), আল আমিন (২৫), পশিদ মিয়া, (৫০), মনির হোসেন (৩৫), মজিবুর রহমান (৫০), সালাউদ্দিন মিয়া (৩৫), বিল্লাল হোসেন (৩৫), শুভ মিয়া (২৫), জুনায়েদুর রহমান জুনায়েত (২৫), রাজীব মিয়া (১৫), আহাদ মিয়া (১৮), তামিম মিয়া (১৪), আব্দুর রহিম (৪৫), আলমগীর হোসেন (৪২), স্বপন মিয়া (৪০), আমির আলী (৬০), জমির আলী (৫০), রাফি মিয়া (২৪) জনের নাম জানা গেছে।
আহতদের মধ্যে খায়ের, মতিন, জোনায়েত, কালু, খলিলুর ও আল আমিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছে পুলিশ। অন্যরা আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
সংঘর্ষের ঘটনায় কথা হলে ফকির জহিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “হত্যা মামলার আসামিদের শেল্টার দিচ্ছেন কবিরের লোকজন। তারা মামলায় জামিন না নিয়েই এলাকায় ঘোরাফেরা করলে এলাকাবাসী ক্ষুব্দ হয়ে তাদের বাধা দেয়। এতে এলাকাবাসীর উপর হামলা করে কবিরের লোকজন। এলাকাবাসী তখন প্রতিরোধ করে।”
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কবির হোসেন বলেন, “বিনা উসকানিতে আমার অনুসারী লোকজনের উপর হামলা করে জহিরুলের লোকজন। হামলায় আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।”
এদিকে, বিএনপি ও যুবদলের দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষের পর কালাপাহাড়িয়ার ওই গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় লোকজন পুনরায় সংঘর্ষের আতঙ্কে রয়েছে।
তবে, সিনিয়র এএসপি মেহেদী ইসলাম বলেন, “সংঘর্ষের ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবং ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।”