ঢাকা ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
কাঁচপুরে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর অভিযানে আটক ৩ জিয়ার শাহাদাত বার্ষিকীতে ১৩ নং ওয়ার্ডে হিরা সরদারের দোয়া তবারক বিতরণ কর্মসূচি  অপহরণের পরে পটুয়াখালী থেকে ব্যবসায়ী সোহাগ উদ্ধার তিন মামলায় আইভীর জামিন নামঞ্জুর ঈদুল-আযহা ঘিরে নারায়ণগঞ্জে ছিনতাই ও মলম পার্টির দৌরাত্ম্য, জনমনে আতঙ্ক   সিটি লাইফ হাসপাতালে নবজাতকের মৃত্যু : স্বজনদের আহাজারি নারায়ণগঞ্জে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে গ্রেফতার ৬ সাংবাদিক সাব্বিরের মায়ের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকি আজ ক্রেতার অভাবে স্তব্ধ ব্যবসা, ঈদের বাজারে আশার আলো কালির বাজারে রাস্তা সংস্কারের নামে ধুঁকছে ওষুধের পাইকারি বাজার
নারায়ণগঞ্জে তাঁত মেলা

ক্রেতার অভাবে স্তব্ধ ব্যবসা, ঈদের বাজারে আশার আলো

স্টাফ রিপোর্টার 
  • আপডেট সময় : ০৮:০৬:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
  • / ২১ জন পড়েছেন
নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া জিয়া হল প্রাঙ্গণে চলমান ‘তাঁত বস্ত্র ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা’ জমজমাট হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে মেলাটি এখন অনেকটাই নিস্তেজ। আয়োজন যত বড়ই হোক না কেন, মেলার স্টলগুলোতে আশানুরূপ ক্রেতার দেখা মিলছে না। এর ফলে দিন শেষে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে।
মেলা শুরু হয়েছে প্রায় তিন মাস হতে চলেছে। শুরুতে আয়োজকেরা বলেছিলেন, স্থানীয় তাঁত শিল্পকে উৎসাহ দেওয়া এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের পণ্য বিক্রির জন্য এটি হবে একটি বড় সুযোগ। কিন্তু বাস্তবে মেলায় পণ্য বিক্রি প্রায় স্থবির। দর্শনার্থীরা এলেও তাদের বড় একটি অংশ শুধু ঘুরে দেখে চলে যাচ্ছে, বিক্রির টাকায় দোকানের ভাড়াই উঠছে না—এমন অভিযোগ রয়েছে অনেক ব্যবসায়ীর।
খরচের চাপে পিষ্ট উদ্যোক্তারা। মেলায় অংশ নিতে ব্যবসায়ীরা অনেকে অগ্রিম টাকা দিয়ে দোকান বরাদ্দ নিয়েছেন। দোকান নির্মাণ, পণ্য পরিবহন, কর্মচারীর বেতনসহ নানা খাতে খরচ হয়েছে লক্ষাধিক টাকা করে। কিন্তু বিক্রি এতটাই কম যে অনেকের মূলধনই উঠে আসছে না। দিনের পর দিন লোকসানে চলছে ব্যবসা। কেউ কেউ ইতিমধ্যেই স্টল বন্ধ করে চলে যাওয়ার কথাও ভাবছেন।
বৃষ্টিতে পরিস্থিতি আরও খারাপ। বিগত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে মেলার পরিবেশ আরও খারাপ হয়ে পড়েছে। মেলার ভেতর কাদা-পানিতে হাঁটা দুরূহ হয়ে গেছে। প্রবেশপথ ও চলাচলের রাস্তাগুলো কাদায় একাকার, পলিথিন বিছিয়েও তা সামলানো যাচ্ছে না। এতে করে সাধারণ মানুষ মেলায় আসতেই অনাগ্রহী হয়ে পড়েছে।
একাধিক দোকানে দেখা গেছে, স্টলে পণ্য সাজানো থাকলেও ক্রেতার দেখা নেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকেও বিক্রি হচ্ছে না একটিও পণ্য। এই স্থবিরতা ব্যবসায়ীদের মানসিক চাপে ফেলেছে।
সবকিছু ছাপিয়ে এখন ব্যবসায়ীদের একমাত্র আশার জায়গা আসন্ন ঈদুল আযহা। ঈদকে কেন্দ্র করে শেষ সপ্তাহে কিছুটা বেচাকেনা বাড়বে—এই ভরসাতেই মেলায় টিকে আছেন অনেক স্টল মালিক। অনেকেই নতুন করে ঈদের পণ্য তুলেছেন, মূল্যছাড় দিচ্ছেন, কাস্টমার ধরতে অফার চালু করেছেন। মেলার আয়োজকরাও ঈদের আগের কয়েকদিনকে ‘ফোকাস উইক’ হিসেবে ধরে প্রচারণায় নেমেছেন।
তবে সময় কম। ঈদের আর মাত্র সপ্তাহ খানেক বাকি। এর মধ্যে যদি বেচাকেনা না বাড়ে, তাহলে এই মেলা অনেক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার জন্য লোকসানের প্রতীক হয়ে থাকবে। এই মেলা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের আয়োজনে আরও পরিকল্পিত ব্যবস্থা, সময়োপযোগী প্রমোশন, আবহাওয়া বিবেচনায় নির্মাণ এবং প্রকৃত তাঁত ও কুটির শিল্পীদের প্রাধান্য দেওয়া উচিত—এমন অভিমত উঠে এসেছে সচেতন মহলের পক্ষ থেকেও।
ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

নারায়ণগঞ্জে তাঁত মেলা

ক্রেতার অভাবে স্তব্ধ ব্যবসা, ঈদের বাজারে আশার আলো

আপডেট সময় : ০৮:০৬:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া জিয়া হল প্রাঙ্গণে চলমান ‘তাঁত বস্ত্র ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা’ জমজমাট হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে মেলাটি এখন অনেকটাই নিস্তেজ। আয়োজন যত বড়ই হোক না কেন, মেলার স্টলগুলোতে আশানুরূপ ক্রেতার দেখা মিলছে না। এর ফলে দিন শেষে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে।
মেলা শুরু হয়েছে প্রায় তিন মাস হতে চলেছে। শুরুতে আয়োজকেরা বলেছিলেন, স্থানীয় তাঁত শিল্পকে উৎসাহ দেওয়া এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের পণ্য বিক্রির জন্য এটি হবে একটি বড় সুযোগ। কিন্তু বাস্তবে মেলায় পণ্য বিক্রি প্রায় স্থবির। দর্শনার্থীরা এলেও তাদের বড় একটি অংশ শুধু ঘুরে দেখে চলে যাচ্ছে, বিক্রির টাকায় দোকানের ভাড়াই উঠছে না—এমন অভিযোগ রয়েছে অনেক ব্যবসায়ীর।
খরচের চাপে পিষ্ট উদ্যোক্তারা। মেলায় অংশ নিতে ব্যবসায়ীরা অনেকে অগ্রিম টাকা দিয়ে দোকান বরাদ্দ নিয়েছেন। দোকান নির্মাণ, পণ্য পরিবহন, কর্মচারীর বেতনসহ নানা খাতে খরচ হয়েছে লক্ষাধিক টাকা করে। কিন্তু বিক্রি এতটাই কম যে অনেকের মূলধনই উঠে আসছে না। দিনের পর দিন লোকসানে চলছে ব্যবসা। কেউ কেউ ইতিমধ্যেই স্টল বন্ধ করে চলে যাওয়ার কথাও ভাবছেন।
বৃষ্টিতে পরিস্থিতি আরও খারাপ। বিগত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে মেলার পরিবেশ আরও খারাপ হয়ে পড়েছে। মেলার ভেতর কাদা-পানিতে হাঁটা দুরূহ হয়ে গেছে। প্রবেশপথ ও চলাচলের রাস্তাগুলো কাদায় একাকার, পলিথিন বিছিয়েও তা সামলানো যাচ্ছে না। এতে করে সাধারণ মানুষ মেলায় আসতেই অনাগ্রহী হয়ে পড়েছে।
একাধিক দোকানে দেখা গেছে, স্টলে পণ্য সাজানো থাকলেও ক্রেতার দেখা নেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকেও বিক্রি হচ্ছে না একটিও পণ্য। এই স্থবিরতা ব্যবসায়ীদের মানসিক চাপে ফেলেছে।
সবকিছু ছাপিয়ে এখন ব্যবসায়ীদের একমাত্র আশার জায়গা আসন্ন ঈদুল আযহা। ঈদকে কেন্দ্র করে শেষ সপ্তাহে কিছুটা বেচাকেনা বাড়বে—এই ভরসাতেই মেলায় টিকে আছেন অনেক স্টল মালিক। অনেকেই নতুন করে ঈদের পণ্য তুলেছেন, মূল্যছাড় দিচ্ছেন, কাস্টমার ধরতে অফার চালু করেছেন। মেলার আয়োজকরাও ঈদের আগের কয়েকদিনকে ‘ফোকাস উইক’ হিসেবে ধরে প্রচারণায় নেমেছেন।
তবে সময় কম। ঈদের আর মাত্র সপ্তাহ খানেক বাকি। এর মধ্যে যদি বেচাকেনা না বাড়ে, তাহলে এই মেলা অনেক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার জন্য লোকসানের প্রতীক হয়ে থাকবে। এই মেলা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের আয়োজনে আরও পরিকল্পিত ব্যবস্থা, সময়োপযোগী প্রমোশন, আবহাওয়া বিবেচনায় নির্মাণ এবং প্রকৃত তাঁত ও কুটির শিল্পীদের প্রাধান্য দেওয়া উচিত—এমন অভিমত উঠে এসেছে সচেতন মহলের পক্ষ থেকেও।