ঢাকা ১০:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে প্রথম চালানে রপ্তানি সাড়ে ৩৭ টন ইলিশ

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেট সময় : ০৩:০৯:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৬ জন পড়েছেন

শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে বাংলাদেশ থেকে প্রথম চালানে সাড়ে ৩৭ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৮টি ট্রাকে এসব ইলিশ ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে পৌঁছায়।

বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামীম হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বন্দর সূত্র জানায়, ভারতের কলকাতার পাঁচটি প্রতিষ্ঠান—ন্যাশনাল ট্রেডিং, এফএনএস ফিশ, জয় শান্তসী, মা ইন্টারন্যাশনাল ও আর জে ইন্টারন্যাশনাল—এ চালানে ইলিশ আমদানি করেছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশের ছয়টি প্রতিষ্ঠান—সততা ফিশ, স্বর্ণালি এন্টারপ্রাইজ, তানিশা এন্টারপ্রাইজ, বিশ্বাস ট্রেডার্স ও লাকী ট্রেডিং—এ চালানে ইলিশ রপ্তানি করে। মোট রপ্তানি হয়েছে ৩৭ টন ৪৬০ কেজি।

যদিও ইলিশ রপ্তানি নিষিদ্ধ, তবে দুর্গোৎসব উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার ভারতে ১২০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। ৩৭টি প্রতিষ্ঠান এ অনুমোদন পেয়েছে। এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ টন, ২৫টিকে ৩০ টন করে ৭৫০ টন, ৯টিকে ৪০ টন করে ৩৬০ টন এবং দুটি প্রতিষ্ঠানকে ২০ টন করে মোট ৪০ টন রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে শুরু হচ্ছে দুর্গাপূজা। পূজার আগেই পদ্মার ইলিশ ভারতীয় বাজারে পৌঁছাচ্ছে।

গত বছর বাংলাদেশ সরকার ২ হাজার ৪২০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিলেও রপ্তানি হয়েছিল মাত্র ১ হাজার ৩০৬ মেট্রিক টন। এবারও মাছের সংকট ও বেশি দামের কারণে পুরো কোটা রপ্তানি সম্ভব নাও হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা।

ভারতের ফিস ইমপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ বলেন, আমরা আশা করেছিলাম এবার ইলিশের পরিমাণ কিছুটা বাড়বে। তবে বাংলাদেশে উৎপাদন কম হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। তবুও পূজার আগে পদ্মার ইলিশ পেয়ে আমরা কৃতজ্ঞ।

বেনাপোল মৎস্য কোয়ারেন্টাইন কর্মকর্তা সজিব সাহা জানান, ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবরের মধ্যে অনুমোদিত ইলিশ রপ্তানি শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রতি কেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ দশমিক ৫ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ হাজার ৫৩৩ টাকা। প্রতিটি ইলিশের গড় ওজন ধরা হয়েছে ১ কেজি ২০০ গ্রাম থেকে দেড় কেজি।

গত কয়েক বছরের তথ্য অনুযায়ী, অনুমোদিত পরিমাণের তুলনায় সবসময় কম ইলিশ রপ্তানি হয়ে আসছে। যেমন—২০২৩ সালে অনুমোদন ছিল ৩৫০০ টন, রপ্তানি হয়েছিল মাত্র ৬৩১ টন; ২০২২ সালে অনুমোদন ছিল ২৯০০ টন, রপ্তানি হয়েছিল ১৩০০ টন; ২০২১ সালে অনুমোদন ছিল ৪৬০০ টন, রপ্তানি হয়েছিল ১৬৯৯ টন; আর ২০২০ সালে অনুমোদন ছিল ১৪৫০ টন, রপ্তানি হয়েছিল ৫৩২ টন।

ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে প্রথম চালানে রপ্তানি সাড়ে ৩৭ টন ইলিশ

আপডেট সময় : ০৩:০৯:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে বাংলাদেশ থেকে প্রথম চালানে সাড়ে ৩৭ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৮টি ট্রাকে এসব ইলিশ ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে পৌঁছায়।

বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামীম হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বন্দর সূত্র জানায়, ভারতের কলকাতার পাঁচটি প্রতিষ্ঠান—ন্যাশনাল ট্রেডিং, এফএনএস ফিশ, জয় শান্তসী, মা ইন্টারন্যাশনাল ও আর জে ইন্টারন্যাশনাল—এ চালানে ইলিশ আমদানি করেছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশের ছয়টি প্রতিষ্ঠান—সততা ফিশ, স্বর্ণালি এন্টারপ্রাইজ, তানিশা এন্টারপ্রাইজ, বিশ্বাস ট্রেডার্স ও লাকী ট্রেডিং—এ চালানে ইলিশ রপ্তানি করে। মোট রপ্তানি হয়েছে ৩৭ টন ৪৬০ কেজি।

যদিও ইলিশ রপ্তানি নিষিদ্ধ, তবে দুর্গোৎসব উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার ভারতে ১২০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। ৩৭টি প্রতিষ্ঠান এ অনুমোদন পেয়েছে। এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ টন, ২৫টিকে ৩০ টন করে ৭৫০ টন, ৯টিকে ৪০ টন করে ৩৬০ টন এবং দুটি প্রতিষ্ঠানকে ২০ টন করে মোট ৪০ টন রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে শুরু হচ্ছে দুর্গাপূজা। পূজার আগেই পদ্মার ইলিশ ভারতীয় বাজারে পৌঁছাচ্ছে।

গত বছর বাংলাদেশ সরকার ২ হাজার ৪২০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিলেও রপ্তানি হয়েছিল মাত্র ১ হাজার ৩০৬ মেট্রিক টন। এবারও মাছের সংকট ও বেশি দামের কারণে পুরো কোটা রপ্তানি সম্ভব নাও হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা।

ভারতের ফিস ইমপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ বলেন, আমরা আশা করেছিলাম এবার ইলিশের পরিমাণ কিছুটা বাড়বে। তবে বাংলাদেশে উৎপাদন কম হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। তবুও পূজার আগে পদ্মার ইলিশ পেয়ে আমরা কৃতজ্ঞ।

বেনাপোল মৎস্য কোয়ারেন্টাইন কর্মকর্তা সজিব সাহা জানান, ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবরের মধ্যে অনুমোদিত ইলিশ রপ্তানি শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রতি কেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ দশমিক ৫ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ হাজার ৫৩৩ টাকা। প্রতিটি ইলিশের গড় ওজন ধরা হয়েছে ১ কেজি ২০০ গ্রাম থেকে দেড় কেজি।

গত কয়েক বছরের তথ্য অনুযায়ী, অনুমোদিত পরিমাণের তুলনায় সবসময় কম ইলিশ রপ্তানি হয়ে আসছে। যেমন—২০২৩ সালে অনুমোদন ছিল ৩৫০০ টন, রপ্তানি হয়েছিল মাত্র ৬৩১ টন; ২০২২ সালে অনুমোদন ছিল ২৯০০ টন, রপ্তানি হয়েছিল ১৩০০ টন; ২০২১ সালে অনুমোদন ছিল ৪৬০০ টন, রপ্তানি হয়েছিল ১৬৯৯ টন; আর ২০২০ সালে অনুমোদন ছিল ১৪৫০ টন, রপ্তানি হয়েছিল ৫৩২ টন।