ঢাকা ০৬:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সেনাবাহিনীতে বিদেশিদের যোগদানের সুযোগ বাড়াচ্ছে অস্ট্রেলিয়া

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেট সময় : ০৩:৫৮:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ১৩ জন পড়েছেন
চলতি সপ্তাহে স্বাক্ষরিত হতে যাওয়া একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়ার সেনাবাহিনীতে কাজ করতে পারবেন পাপুয়া নিউ গিনির (পিএনজি) নাগরিকরা। সোমবার ক্যানবেরা এ তথ্য জানিয়েছে। এই চুক্তিকে বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্রভাব মোকাবেলার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়া থেকে পাপুয়া নিউ গিনির স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপনের অংশ হিসেবে আগামী বুধবার পোর্ট মোরসবিতে প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ ও জেমস মারাপে নতুন প্রতিরক্ষা চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করবেন।

অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রিচার্ড মার্লেস এই চুক্তিকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করেছেন।মার্লেস বলেন, অস্ট্রেলিয়ার সেনাবাহিনী গত বছর থেকেই নিউজিল্যান্ড, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য উন্মুক্ত ছিল। তিনি জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম এবিসিকে বলেন, ‘সেই সময় আমরা বলেছিলাম, আমাদের প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে নজর থাকবে। পিএনজির সঙ্গে আমরা যে চুক্তি স্বাক্ষর করব তাতে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

অস্ট্রেলিয়ার সামরিক বাহিনীর কথা উল্লেখ করে মার্লেস আরো বলেন, ‘এই পথে হাঁটার ক্ষেত্রে আরো অনেক কাজ বাকি আছে। তবে আমরা অবশ্যই পাপুয়া নিউ গিনির নাগরিকদের সরাসরি এডিএফে (অস্ট্রেলীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী) কিভাবে নিয়োগ করতে পারি—তা নিয়ে আগ্রহী।’

চুক্তিটি ২০২৩ সালে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি সার্বিক নিরাপত্তা চুক্তিকে অনুসরণ করবে। অস্ট্রেলীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই চুক্তি পাপুয়া নিউ গিনির নাগরিকদের অন্য সদস্যদের মতো একই বেতনে অস্ট্রেলীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীতে কাজ করতে এবং নাগরিকত্বের পথ উন্মুক্ত করতে সক্ষম করবে।

এবিসি অনুসারে, পোর্ট মোরসবিতে সোমবার বক্তব্য রাখতে গিয়ে অ্যালবানিজ বলেন, এই চুক্তি হলো সম্পর্কের এক ধরনের উন্নয়ন এবং এর মধ্যে বাড়তি আন্ত কার্যক্ষমতা, বাড়তি সম্পৃক্ততা ও নিরাপত্তা সম্পর্ক অন্তর্ভুক্ত। চুক্তিটি পাপুয়া নিউগিনির সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করতে পারে—এমন আশঙ্কা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, মানুষ এই চুক্তি দেখতে পাবে, আর অস্ট্রেলিয়া যা করে তা হলো দেশগুলোর সঙ্গে সম্মানের ভিত্তিতে সম্পর্ক গড়া, আর সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মানই এর কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে।

এদিকে এই চুক্তি ‘আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে উৎসাহিত করবে’ উল্লেখ করে পাপুয়া নিউ গিনির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিলি জোসেফ বলেন, ‘একটি নিরাপদ পাপুয়া নিউ গিনি হলো একটি নিরাপদ অস্ট্রেলিয়া এবং একটি নিরাপদ অস্ট্রেলিয়া হলো একটি নিরাপদ পাপুয়া নিউ গিনি।’

অস্ট্রেলিয়ার উত্তরতম সীমান্ত থেকে ২০০ কিলোমিটারেরও কম দূরে অবস্থিত পাপুয়া নিউ গিনি মেলানেশিয়ার বৃহত্তম ও সর্বাধিক জনবহুল রাষ্ট্র। চীন গত দশকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোয় বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং হাসপাতাল, ক্রীড়া স্টেডিয়াম, রাস্তাঘাট ও অন্যান্য জনকল্যাণমূলক কাজে অর্থায়ন করেছে।

সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, কিরিবাতি ও নাউরু সাম্প্রতিক বছরগুলোয় চীনের পক্ষে থেকে তাইওয়ানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। বেইজিংয়ের প্রভাব মোকাবেলার জন্য ক্যানবেরা এই অঞ্চলের সঙ্গে তার সম্পর্ক জোরদার করেছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশটির সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক আরো গভীর করার লক্ষ্যে একটি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে গত সপ্তাহে অ্যালবানিজ ভানুয়াতুতে ছিলেন। তবে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়নি।

ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সেনাবাহিনীতে বিদেশিদের যোগদানের সুযোগ বাড়াচ্ছে অস্ট্রেলিয়া

আপডেট সময় : ০৩:৫৮:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
চলতি সপ্তাহে স্বাক্ষরিত হতে যাওয়া একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়ার সেনাবাহিনীতে কাজ করতে পারবেন পাপুয়া নিউ গিনির (পিএনজি) নাগরিকরা। সোমবার ক্যানবেরা এ তথ্য জানিয়েছে। এই চুক্তিকে বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্রভাব মোকাবেলার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়া থেকে পাপুয়া নিউ গিনির স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপনের অংশ হিসেবে আগামী বুধবার পোর্ট মোরসবিতে প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ ও জেমস মারাপে নতুন প্রতিরক্ষা চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করবেন।

অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রিচার্ড মার্লেস এই চুক্তিকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করেছেন।মার্লেস বলেন, অস্ট্রেলিয়ার সেনাবাহিনী গত বছর থেকেই নিউজিল্যান্ড, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য উন্মুক্ত ছিল। তিনি জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম এবিসিকে বলেন, ‘সেই সময় আমরা বলেছিলাম, আমাদের প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে নজর থাকবে। পিএনজির সঙ্গে আমরা যে চুক্তি স্বাক্ষর করব তাতে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

অস্ট্রেলিয়ার সামরিক বাহিনীর কথা উল্লেখ করে মার্লেস আরো বলেন, ‘এই পথে হাঁটার ক্ষেত্রে আরো অনেক কাজ বাকি আছে। তবে আমরা অবশ্যই পাপুয়া নিউ গিনির নাগরিকদের সরাসরি এডিএফে (অস্ট্রেলীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী) কিভাবে নিয়োগ করতে পারি—তা নিয়ে আগ্রহী।’

চুক্তিটি ২০২৩ সালে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি সার্বিক নিরাপত্তা চুক্তিকে অনুসরণ করবে। অস্ট্রেলীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই চুক্তি পাপুয়া নিউ গিনির নাগরিকদের অন্য সদস্যদের মতো একই বেতনে অস্ট্রেলীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীতে কাজ করতে এবং নাগরিকত্বের পথ উন্মুক্ত করতে সক্ষম করবে।

এবিসি অনুসারে, পোর্ট মোরসবিতে সোমবার বক্তব্য রাখতে গিয়ে অ্যালবানিজ বলেন, এই চুক্তি হলো সম্পর্কের এক ধরনের উন্নয়ন এবং এর মধ্যে বাড়তি আন্ত কার্যক্ষমতা, বাড়তি সম্পৃক্ততা ও নিরাপত্তা সম্পর্ক অন্তর্ভুক্ত। চুক্তিটি পাপুয়া নিউগিনির সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করতে পারে—এমন আশঙ্কা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, মানুষ এই চুক্তি দেখতে পাবে, আর অস্ট্রেলিয়া যা করে তা হলো দেশগুলোর সঙ্গে সম্মানের ভিত্তিতে সম্পর্ক গড়া, আর সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মানই এর কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে।

এদিকে এই চুক্তি ‘আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে উৎসাহিত করবে’ উল্লেখ করে পাপুয়া নিউ গিনির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিলি জোসেফ বলেন, ‘একটি নিরাপদ পাপুয়া নিউ গিনি হলো একটি নিরাপদ অস্ট্রেলিয়া এবং একটি নিরাপদ অস্ট্রেলিয়া হলো একটি নিরাপদ পাপুয়া নিউ গিনি।’

অস্ট্রেলিয়ার উত্তরতম সীমান্ত থেকে ২০০ কিলোমিটারেরও কম দূরে অবস্থিত পাপুয়া নিউ গিনি মেলানেশিয়ার বৃহত্তম ও সর্বাধিক জনবহুল রাষ্ট্র। চীন গত দশকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোয় বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং হাসপাতাল, ক্রীড়া স্টেডিয়াম, রাস্তাঘাট ও অন্যান্য জনকল্যাণমূলক কাজে অর্থায়ন করেছে।

সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, কিরিবাতি ও নাউরু সাম্প্রতিক বছরগুলোয় চীনের পক্ষে থেকে তাইওয়ানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। বেইজিংয়ের প্রভাব মোকাবেলার জন্য ক্যানবেরা এই অঞ্চলের সঙ্গে তার সম্পর্ক জোরদার করেছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশটির সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক আরো গভীর করার লক্ষ্যে একটি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে গত সপ্তাহে অ্যালবানিজ ভানুয়াতুতে ছিলেন। তবে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়নি।