ঢাকা ০৪:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ফয়েজ বাহিনীর কাছে জিম্মি লামাপাড়াবাসী

দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ফয়েজ বাহিনীর কাছে জিম্মি লামাপাড়াবাসী

বিশেষ প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় : ১২:২৮:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৮২ জন পড়েছেন

ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকার মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে দুর্র্ধষ সন্ত্রাসী ফয়েজ ওরফে কাইল্লা ফয়েজ ও তার বাহিনীর কাছে। চাঁদাবাজি, ভূমিদুস্য, ঝুট সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসা, ছিনতাই-ডাকাতিসহ এমন কোন অপরাধ নাই যা ফয়েজ বাহিনী করে না। এলাকার নিরীহ ভাড়াটিয়া, গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিকট হতে জোরপূর্বক টাকা-পয়সা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায় ফয়েজ বাহিনী।

 

এছাড়াও এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের মূলহোতা কাইল্লা ফয়েজ অবৈধ টাকার জোরে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে। এলাকার বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা রীতিমত জিম্মি হয়ে পড়েছে ফয়েজ বাহিনীর কাছে। ফ্যাক্টরী মালিকদের নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রন নিয়ে নেয় ফয়েজ। ফতুল্লা পুলিশের তথ্যমতে, হত্যা, অস্ত্র সহ বিভিন্ন অপরাধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে ফয়েজের বিরুদ্ধে। সন্ত্রাসী ফয়েজ পূর্ব লামাপাড়ার মৃত আব্দুল লতিফ কারীর ছেলে।

এলাকাবাসী জানায়, সন্ত্রাসী ফয়েজ ওরফে কাইল্লা ফয়েৎজ ক্রসফায়ারে নিহত শীর্ষ সন্ত্রাসী রকমত বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলো। রকমতের মৃত্যুর পর রকমত বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় ফয়েজ।

 

কিন্তু সে এতোটা দুর্র্ধষ ও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে যে তাকে যেই ফুফু লালন পালন করে বড় করেছে সেই ফুফুকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে আলোচনায় উঠে আসে ফয়েজ। দুদন্ড প্রতাপের সহিত চলে ফয়েজ বাহিনীর অপকর্ম। এক পর্যায়ে ২০০৬ সালে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয় ফয়েজ। কিন্তু কারাগারে থেকেই সে তার অপরাধ সাম্রাজ্য পরিচালনা করে।

 

এক পর্যায়ে দীর্ঘদিন জেল খেটে জামিনে বেরিয়ে এসেই বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করে। রাজনৈতিক শেল্টার পাওয়ার জন্য স্থানীয়ভাবে মিশে যায় আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে। শেল্টায় শামীম ওসমানের সেকেন্ড ইন কমান্ড শাহ নিজামের সাথে। শাহ নিজামের শেল্টারে বেপরোয়া হয়ে ওঠে ফয়েজ।

সবশেষ চলতি বছরের ২৮ আগস্ট সন্ত্রাসী কাইল্লা ফয়েজ বাহিনীর বাহিনীর হাতে একই পরিবারের ২ নারী শ্লীলতাহানিসহ ৪ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মোসাঃ নূর নাহার বাদী হয়ে সন্ত্রাসী কাইল্লা ফয়েজকে প্রধান আসামি করে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্ত অন্য হলেন- ফতুল্লার পূর্ব লামাপাড়া এলাকার আমিনুল হক হইক্কা, আব্দুল ওয়ালি, নাজমা, ফাইছা, শরিফ, বাদশা, ফাহিম ও মুক্তি।

ভুক্তভোগি নূর নাহার জানান, ২৮ আগস্ট সকাল ৯টার সময় ২ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি আমার বাসার উপর দিয়ে যাওয়ার সময় আমি তাদের পরিচয় জিজ্ঞাসা করলে ফয়েজ ও নাজমা আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।

এক পর্যায়ে সন্ত্রাসী ফয়েজের ইন্দনে ফাইছা আমাকে এলোপাথারী কিল, ঘুষি ও থাপ্পর মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। এবং শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। পরবর্তীতে আমার ছেলে এগিয়ে আসলে আমিনুল হক হইক্কা ও ফয়েজ ফোন কলের মাধ্যমে আরো অজ্ঞতনামা ২০/২৫ জনকে ডেকে এনে আমার ছেলে ও আমার বোনের চেলেকে রড ও দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র দিয়ে মারধর করে রক্তাক্ত।

 

আমাদের চিৎকার শুনে আমার ছেলের বউ ঘটনাস্থলে মারধর থামাতে এগিয়ে আসলে তাকেও মেরে রক্তাক্ত করে এবং শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। এসময় আমার ছেলের বউকে মারতে দেখে আমার ছেলে থামাতে এগিয়ে আসলে তাকে আবারো এলোপাথারী কিল, ঘুষি মারে। এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বলে, কাউকে কিছু বললে কিংবা থানা পুলিশ করলে তোকে জীবনের তরে শেষ করে ফেলবো। এই কথা বলে আমার বাসা হতে নগদ ২ লক্ষ টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায় ফয়েজ বাহিনী।
এলাকাবাসী সন্ত্রাসী ফয়েজ ও তার বাহিনীর সদস্যদের আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এড্রেস লিখুন :

দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ফয়েজ বাহিনীর কাছে জিম্মি লামাপাড়াবাসী

দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ফয়েজ বাহিনীর কাছে জিম্মি লামাপাড়াবাসী

আপডেট সময় : ১২:২৮:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫

ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকার মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে দুর্র্ধষ সন্ত্রাসী ফয়েজ ওরফে কাইল্লা ফয়েজ ও তার বাহিনীর কাছে। চাঁদাবাজি, ভূমিদুস্য, ঝুট সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসা, ছিনতাই-ডাকাতিসহ এমন কোন অপরাধ নাই যা ফয়েজ বাহিনী করে না। এলাকার নিরীহ ভাড়াটিয়া, গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিকট হতে জোরপূর্বক টাকা-পয়সা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায় ফয়েজ বাহিনী।

 

এছাড়াও এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের মূলহোতা কাইল্লা ফয়েজ অবৈধ টাকার জোরে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে। এলাকার বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা রীতিমত জিম্মি হয়ে পড়েছে ফয়েজ বাহিনীর কাছে। ফ্যাক্টরী মালিকদের নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রন নিয়ে নেয় ফয়েজ। ফতুল্লা পুলিশের তথ্যমতে, হত্যা, অস্ত্র সহ বিভিন্ন অপরাধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে ফয়েজের বিরুদ্ধে। সন্ত্রাসী ফয়েজ পূর্ব লামাপাড়ার মৃত আব্দুল লতিফ কারীর ছেলে।

এলাকাবাসী জানায়, সন্ত্রাসী ফয়েজ ওরফে কাইল্লা ফয়েৎজ ক্রসফায়ারে নিহত শীর্ষ সন্ত্রাসী রকমত বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলো। রকমতের মৃত্যুর পর রকমত বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় ফয়েজ।

 

কিন্তু সে এতোটা দুর্র্ধষ ও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে যে তাকে যেই ফুফু লালন পালন করে বড় করেছে সেই ফুফুকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে আলোচনায় উঠে আসে ফয়েজ। দুদন্ড প্রতাপের সহিত চলে ফয়েজ বাহিনীর অপকর্ম। এক পর্যায়ে ২০০৬ সালে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয় ফয়েজ। কিন্তু কারাগারে থেকেই সে তার অপরাধ সাম্রাজ্য পরিচালনা করে।

 

এক পর্যায়ে দীর্ঘদিন জেল খেটে জামিনে বেরিয়ে এসেই বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করে। রাজনৈতিক শেল্টার পাওয়ার জন্য স্থানীয়ভাবে মিশে যায় আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে। শেল্টায় শামীম ওসমানের সেকেন্ড ইন কমান্ড শাহ নিজামের সাথে। শাহ নিজামের শেল্টারে বেপরোয়া হয়ে ওঠে ফয়েজ।

সবশেষ চলতি বছরের ২৮ আগস্ট সন্ত্রাসী কাইল্লা ফয়েজ বাহিনীর বাহিনীর হাতে একই পরিবারের ২ নারী শ্লীলতাহানিসহ ৪ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মোসাঃ নূর নাহার বাদী হয়ে সন্ত্রাসী কাইল্লা ফয়েজকে প্রধান আসামি করে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্ত অন্য হলেন- ফতুল্লার পূর্ব লামাপাড়া এলাকার আমিনুল হক হইক্কা, আব্দুল ওয়ালি, নাজমা, ফাইছা, শরিফ, বাদশা, ফাহিম ও মুক্তি।

ভুক্তভোগি নূর নাহার জানান, ২৮ আগস্ট সকাল ৯টার সময় ২ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি আমার বাসার উপর দিয়ে যাওয়ার সময় আমি তাদের পরিচয় জিজ্ঞাসা করলে ফয়েজ ও নাজমা আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।

এক পর্যায়ে সন্ত্রাসী ফয়েজের ইন্দনে ফাইছা আমাকে এলোপাথারী কিল, ঘুষি ও থাপ্পর মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। এবং শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। পরবর্তীতে আমার ছেলে এগিয়ে আসলে আমিনুল হক হইক্কা ও ফয়েজ ফোন কলের মাধ্যমে আরো অজ্ঞতনামা ২০/২৫ জনকে ডেকে এনে আমার ছেলে ও আমার বোনের চেলেকে রড ও দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র দিয়ে মারধর করে রক্তাক্ত।

 

আমাদের চিৎকার শুনে আমার ছেলের বউ ঘটনাস্থলে মারধর থামাতে এগিয়ে আসলে তাকেও মেরে রক্তাক্ত করে এবং শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। এসময় আমার ছেলের বউকে মারতে দেখে আমার ছেলে থামাতে এগিয়ে আসলে তাকে আবারো এলোপাথারী কিল, ঘুষি মারে। এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বলে, কাউকে কিছু বললে কিংবা থানা পুলিশ করলে তোকে জীবনের তরে শেষ করে ফেলবো। এই কথা বলে আমার বাসা হতে নগদ ২ লক্ষ টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায় ফয়েজ বাহিনী।
এলাকাবাসী সন্ত্রাসী ফয়েজ ও তার বাহিনীর সদস্যদের আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।