হাসিনাসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে সেই সুখরঞ্জন বালির অভিযোগ

- আপডেট সময় : ০৪:২২:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫
- / ১৮ জন পড়েছেন
এক যুগ আগে জামায়াতে ইসলামীর নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে গুম হওয়া সুখরঞ্জন বালি ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বরাবর এ অভিযোগ দাখিল করেন।
শেখ হাসিনার ছাড়াও যাদের বিরুদ্ধে সুখরঞ্জন বালি অভিযোগ করেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন- সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম, সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ, সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, ট্রাইব্যুনালের সাবেক বিচারক এটিএম ফজলে কবির, ট্রাইব্যুনালের সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন, পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম আউয়াল, সাবেক চিফ প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী, সাবেক প্রসিকিউটর রানা দাস গুপ্ত ও তৎকালীন তদন্ত সংস্থার প্রধান মো. সানাউল হক।
সুখরঞ্জন বালি জামায়াতে ইসলামীর নেতা প্রয়াত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ছিলেন।
তিনি ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল চত্বর থেকে নিখোঁজ হন।
সুখরঞ্জন বালীর ভাই বিশাবালীকে (বিশেশ্বর বালী) ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি সেনারা হত্যা করে। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালের জুলাই-আগস্ট মাসের দিকে তৎকালীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন তার কাছে পিরোজপুরের পাড়েরহাটের রাজলক্ষ্মী স্কুলে ডেকে বিশাবালীর হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জানতে চায়।
সুখরঞ্জনের অভিযোগ, তিনি প্রকৃত ঘটনা খুলে বললেও হেলাল উদ্দিন তাকে বিশাবালীর হত্যাকারী হিসাবে প্রকৃত হত্যাকারীদের নামের সঙ্গে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নামও বলতে বলেন এবং তার বিরুদ্ধে ট্রাইবুনালে গিয়ে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে বলেন।
কিন্তু এতে তিনি রাজি না হওয়ায় তাকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। পরে সুখরঞ্জন মাওলানা সাঈদীর পক্ষেই সাক্ষী দিতে এলে ট্রাইব্যুনালের সামনে থেকে সাদা পোশাকধারীরা তাকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। দীর্ঘদিন অজ্ঞাতস্থানে তাকে গুম করে বৈদ্যুতিক শকসহ নানান মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়। এমনকি তাকে ভারতেও পাচার করে দেওয়া হয়।
এর মধ্যে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মাওলানা সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেয় তৎকালীন অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মাওলানা সাঈদী আবেদন করলে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে রায় দেয়। তাতে সাজা কমে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ আসে। তারপর থেকে তিনি কারাবন্দি ছিলেন। বন্দি অবস্থায় ২০২৩ সালের আগস্টে তিনি হার্ট অ্যাটাক করে মারা যান।
সুখরঞ্জন বালী বলেন, রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় আমাকে অপহরণ, গুম এবং ৫ বছর অবৈধভাবে কারাবন্দি রাখাসহ আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া সব অন্যায়ের আমি বিচার চাই।