ঢাকা ০২:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডিপ ড্রেনের কাজে ধীরগতি, পানিবন্দী নগরবাসী

আশরাফুল ইসলাম তানভীর
  • আপডেট সময় : ০২:২৪:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
  • / ১৯ জন পড়েছেন

নারায়ণগঞ্জে টানা বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়া, বঙ্গবন্ধু সড়ক ও আশেপাশের এলাকায় ডিপ ড্রেন সংস্কার কাজের ধীরগতির কারণে বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে নগরীর মূল সড়কসহ বিভিন্ন এলাকা। এর ফলে তীব্র ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
সোমবার (২৮ জুলাই) শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ দৃশ্য দেখা গেছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে চলমান ডিপ ড্রেনের কাজ চলমান থাকায় অনেক সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি অবস্থাতেই পড়ে আছে। কোথাও ফেলা হয়নি ইটের খোয়া, কোথাও বা খোলা ড্রেন। এতে পথচারীদের পাশাপাশি যানবাহন চালকরাও পড়ছেন চরম দুর্ভোগে। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছে।
শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক, কালীরবাজার ও মাসদাইর এলাকায়ও ডিপ ড্রেনের কাজ চলমান রয়েছে। ড্রেনের কাজ চলমান থাকায় মূল শহরসহ এসকল এলাকাতেও তীব্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে জলাবদ্ধতার ফলে অফিস, স্কুল ও বাজারের যাওয়া মানুষের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পাড়া মহল্লার সড়কেও বৃষ্টির পানি জমে ছোট ছোট গর্ত হয়েছে যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি করছে। সড়ক সংস্কারের ধীরগতির কারণে পাড়া-মহল্লার সড়কগুলো দিয়ে গাড়ি চলাচলও কষ্টকর হয়ে উঠেছে।
টানবাজার এলাকায় বেসরকারি ব্যাংকের চাকুরিজীবী তাহমিদ হক জানান, তীব্র বৃষ্টিতে রাস্তায় পানি জমে আছে। বৃষ্টি হলেই রিকশা পাওয়া যায় না। পায়ে হেটে যাওয়ার অবস্থাও নেই। অফিস শেষে বাড়ি কীভাবে ফিরবো ভাবছি।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় টানা বৃষ্টিতে শহরের চাষাঢ়া ও আশেপাশের এলাকায় বিভিন্ন মার্কেট ও দোকানে পানি ঢুকে পড়েছে। এর ফলে ব্যাবসায়ীদের তীব্র ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
চাষাঢ়া এলাকার কাপড়ের দোকানদার মাহাবুব জানান, রাতভর বৃষ্টিতে রাস্তায় তীব্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানি দোকানেও ঢুকে গেছে। সকালে দেকান খুলতে এসে দেখি দোকানে পানি। পানিতে বেশ কিছু মালপত্রও নষ্ট হয়ে গেছে।
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টি জলাবদ্ধতা ইস্যুতে জানান, নারায়ণগঞ্জ শহরে গভীর ড্রেইন নির্মাণের কাজ অত্যন্ত ধীর গতিতে চলছে। যা জনদুর্ভোগ চরমে নিয়ে গেছে।ঠিকাদার কাজে গাফিলতি করছে নিশ্চিত। এদিকে সপ্তাহে মাত্র দুইদিন সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক অফিস করেন বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে। তিনি কতটুকু কি করবেন এই স্বল্প সময়ে তা সহজেই অনুমেয়। স্থানীয় সরকার নির্বাচন কবে হবে আমরা জানিনা। তাই প্রশাসক বসালেও সেটা পূর্ণসময় হওয়া উচিত এবং অবিলম্বে ঠিকাদারকে চাপ দেয়া উচিত কাজ দ্রুত করার জন্য। নাগরিক কমিটি ও রাজনৈতিক দলগুলো প্রশাসককে চাপ দিন কাজ দ্রুত করতে।
বর্ষা মৌসুম ও ঠিকাদারদের বিলম্বের কারণে কাজের গতি মন্থর বলে জানিয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। তবে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে অধিকাংশ কাজ শেষ করার আশ্বাস দিয়েছেন তারা।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিও) জাকির হোসেন জানান, বৃষ্টির মৌসুম হওয়ায় মানুষের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এতে আমরা দুঃখিত। তবে এই ডিপ ড্রেনের কাজটা সম্পন্ন হয়ে গেলে মানুষ দীর্ঘ মেয়াদে এর সুফল পাবে। তখন জলাবদ্ধতা অতীতের চেয়ে অনেকটাই কমে আসবে।
তিনি আরও বলেন, বৃষ্টির কারণে কাজের অগ্রগতিও কম। বৃষ্টিতে এই কাজ করা সম্ভব হয় না। তবে আমরা ঠিকাদারদের বলেছি প্রয়োজনে অতিরিক্ত লোকবল নিয়োগ করতে। যেন দ্রুত এই ড্রেনের কাজটা সম্পন্ন করা সম্ভব হয় এবং মানুষ এর সুফল পায়। মানুষের দুর্ভোগ যেন লাঘব হয়।
এদিকে দ্রুত সংস্কারকাজ সম্পন্ন না হলে নগরবাসীর দুর্ভোগ আরও দীর্ঘায়িত হবে বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ।

ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ডিপ ড্রেনের কাজে ধীরগতি, পানিবন্দী নগরবাসী

আপডেট সময় : ০২:২৪:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

নারায়ণগঞ্জে টানা বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়া, বঙ্গবন্ধু সড়ক ও আশেপাশের এলাকায় ডিপ ড্রেন সংস্কার কাজের ধীরগতির কারণে বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে নগরীর মূল সড়কসহ বিভিন্ন এলাকা। এর ফলে তীব্র ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
সোমবার (২৮ জুলাই) শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ দৃশ্য দেখা গেছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে চলমান ডিপ ড্রেনের কাজ চলমান থাকায় অনেক সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি অবস্থাতেই পড়ে আছে। কোথাও ফেলা হয়নি ইটের খোয়া, কোথাও বা খোলা ড্রেন। এতে পথচারীদের পাশাপাশি যানবাহন চালকরাও পড়ছেন চরম দুর্ভোগে। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছে।
শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক, কালীরবাজার ও মাসদাইর এলাকায়ও ডিপ ড্রেনের কাজ চলমান রয়েছে। ড্রেনের কাজ চলমান থাকায় মূল শহরসহ এসকল এলাকাতেও তীব্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে জলাবদ্ধতার ফলে অফিস, স্কুল ও বাজারের যাওয়া মানুষের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পাড়া মহল্লার সড়কেও বৃষ্টির পানি জমে ছোট ছোট গর্ত হয়েছে যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি করছে। সড়ক সংস্কারের ধীরগতির কারণে পাড়া-মহল্লার সড়কগুলো দিয়ে গাড়ি চলাচলও কষ্টকর হয়ে উঠেছে।
টানবাজার এলাকায় বেসরকারি ব্যাংকের চাকুরিজীবী তাহমিদ হক জানান, তীব্র বৃষ্টিতে রাস্তায় পানি জমে আছে। বৃষ্টি হলেই রিকশা পাওয়া যায় না। পায়ে হেটে যাওয়ার অবস্থাও নেই। অফিস শেষে বাড়ি কীভাবে ফিরবো ভাবছি।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় টানা বৃষ্টিতে শহরের চাষাঢ়া ও আশেপাশের এলাকায় বিভিন্ন মার্কেট ও দোকানে পানি ঢুকে পড়েছে। এর ফলে ব্যাবসায়ীদের তীব্র ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
চাষাঢ়া এলাকার কাপড়ের দোকানদার মাহাবুব জানান, রাতভর বৃষ্টিতে রাস্তায় তীব্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানি দোকানেও ঢুকে গেছে। সকালে দেকান খুলতে এসে দেখি দোকানে পানি। পানিতে বেশ কিছু মালপত্রও নষ্ট হয়ে গেছে।
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টি জলাবদ্ধতা ইস্যুতে জানান, নারায়ণগঞ্জ শহরে গভীর ড্রেইন নির্মাণের কাজ অত্যন্ত ধীর গতিতে চলছে। যা জনদুর্ভোগ চরমে নিয়ে গেছে।ঠিকাদার কাজে গাফিলতি করছে নিশ্চিত। এদিকে সপ্তাহে মাত্র দুইদিন সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক অফিস করেন বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে। তিনি কতটুকু কি করবেন এই স্বল্প সময়ে তা সহজেই অনুমেয়। স্থানীয় সরকার নির্বাচন কবে হবে আমরা জানিনা। তাই প্রশাসক বসালেও সেটা পূর্ণসময় হওয়া উচিত এবং অবিলম্বে ঠিকাদারকে চাপ দেয়া উচিত কাজ দ্রুত করার জন্য। নাগরিক কমিটি ও রাজনৈতিক দলগুলো প্রশাসককে চাপ দিন কাজ দ্রুত করতে।
বর্ষা মৌসুম ও ঠিকাদারদের বিলম্বের কারণে কাজের গতি মন্থর বলে জানিয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। তবে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে অধিকাংশ কাজ শেষ করার আশ্বাস দিয়েছেন তারা।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিও) জাকির হোসেন জানান, বৃষ্টির মৌসুম হওয়ায় মানুষের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এতে আমরা দুঃখিত। তবে এই ডিপ ড্রেনের কাজটা সম্পন্ন হয়ে গেলে মানুষ দীর্ঘ মেয়াদে এর সুফল পাবে। তখন জলাবদ্ধতা অতীতের চেয়ে অনেকটাই কমে আসবে।
তিনি আরও বলেন, বৃষ্টির কারণে কাজের অগ্রগতিও কম। বৃষ্টিতে এই কাজ করা সম্ভব হয় না। তবে আমরা ঠিকাদারদের বলেছি প্রয়োজনে অতিরিক্ত লোকবল নিয়োগ করতে। যেন দ্রুত এই ড্রেনের কাজটা সম্পন্ন করা সম্ভব হয় এবং মানুষ এর সুফল পায়। মানুষের দুর্ভোগ যেন লাঘব হয়।
এদিকে দ্রুত সংস্কারকাজ সম্পন্ন না হলে নগরবাসীর দুর্ভোগ আরও দীর্ঘায়িত হবে বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ।