‘রাত জেগে ছেলের জ্বর মাপছি’
নাঃগঞ্জে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ছে পাড়া-মহল্লায়

- আপডেট সময় : ০২:০২:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
- / ৭৫ জন পড়েছেন
নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়া, দেওভোগ, বাবুরাইল, খানপুর, গোগনগর কিংবা শহরতলীর মদনগঞ্জ, কলাগাছিয়া, ফতুল্লা কিংবা সিদ্ধিরগঞ্জ-সবখানেই এখন জ্বর-কাশি-ব্যথার রোগীর ছড়াছড়ি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় অন্তত ৭/৮ জন করে মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। অনেকেই ডাক্তারের পরামর্শে টেস্ট না করেই ওষুধ খাচ্ছেন। আবার যারা টেস্ট করাচ্ছেন, তাঁদের বড় একটা অংশ হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বাবুরাইলের বাসিন্দা শামীমা আক্তার বললেন, “আমার ছেলে জ্বর, গায়ে ব্যথা, মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছিল। হাসপাতালে গেছি, স্যালাইন দিয়েছে। কিন্তু ভর্তি নিচ্ছে না। বলছে বমি হলে আসেন। এখন বাসায় রাত জেগে জ্বর মাপি।”
চাষাড়ার মোস্তাক আহমেদ জানালেন, “ডাক্তার বললো টেস্ট করাতে। কিন্তু সরকারি হাসপাতালে টেস্টের লাইন দেখে ভয় পেয়ে গেলাম। পাশের ডায়াগনস্টিকে তিনশো টাকা লাগবে শুনে করাইনি। বাসায় বসে স্যালাইন দিচ্ছি। আল্লাহ ভরসা।”
সরকারি হিসাবে নারায়ণগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ৪ জন। অথচ শুধুমাত্র খানপুর ৩০০ শয্যার হাসপাতালেই প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০ জন নতুন রোগী ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য আসছেন। ভিক্টোরিয়ায় সংখ্যাটা আরও কিছুটা বেশি।
খানপুর হাসপাতালের এক সিনিয়র নার্স নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আসলে অনেকে জ্বর নিয়েই আসে। ওষুধ নিয়ে চলে যায়। কিছু রোগী পরে আবার আসে, তখন দেখা যায় প্লাটিলেট নিচে নেমে গেছে। তখন আর সময় থাকে না।”
স্বাস্থ্য বিশ্লেষক ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যাপক ডা. শরিফ জামান বলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা বাসায় বসে থাকা ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা গণনায় আনতে পারছি না, ততক্ষণ পর্যন্ত এটা মহামারী রূপ নিচ্ছে কি না, তা বুঝা সম্ভব না। তবে এটা নিছক মৌসুমি জ্বর না-এই বাস্তবতা মানতে হবে।”