না.গঞ্জে শহরকেন্দ্রিক শোডাউনের পরিকল্পনা
সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা আ.লীগের

- আপডেট সময় : ০৭:৩২:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
- / ২৯ জন পড়েছেন
নারায়ণগঞ্জে আবারও সক্রিয় হচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পাঁচ আগষ্টে পতনের পর রাজপথে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া দলটির নেতাকর্মীরা। নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড ও কলেজ রোড এলাকায় সবচেয়ে সক্রিয় দলটির নেতাকর্মীরা। প্রায়ই এসকল এলাকায় পোস্টারিং করছে আওয়ামী লীগ। পাশাপাশি শহরের উত্তর চাষাঢ়া, লিংক রোড ও ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়কে ঝটিকা মিছিল করতে দেখা গেছে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের।
পাঁচ আগষ্টের পর দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়ে। এই সুযোগেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারা। আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারির নেতারাও দেশ ছেড়ে ভারত পালিয়েছেন। তবে শহরে এখনও তাদের বিশাল কর্মী বাহিনী রয়ে গেছে।
পাঁচ আগষ্টের বিপ্লবের পর গত জানুয়ারি মাসে নারায়ণগঞ্জ শহরের ডিসি অফিসের সামনে সহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি স্থানে রাতে পোস্টার লাগায় আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শহরের সরকারি তোলারাম কলেজের গেইটের সামনেও পোস্টার লাগায় তারা৷ একসময় এই তোলারাম কলেজ থেকেই ওসমান পরিবারের অনুগতরা নারায়ণগঞ্জ শহরের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করত। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় এই কলেজ থেকেই সন্ত্রাসীরা ছাত্র জনতার ওপর হামলা চালায়।
এদিকে পোস্টার লাগানোর ঘটনায় একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ থাকলেও এখন পর্যন্ত এঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। প্রশাসনের ব্যার্থতার কারণেই আওয়ামী লীগ রাজপথে সক্রিয় হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ করেছেন ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়া ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা।
পোস্টার কান্ডের পর পুলিশ সক্রিয় হলে বলে গত কয়েকমাস রাজপথে আওয়ামী লীগের কোন গতিবিধি লক্ষ্য করা যায়নি। তবে এখন আবারও দেশব্যাপী বিচ্ছিন্ন ভাবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঝটিকা মিছিল করতে দেখা গেছে। ঢাকায়ও বেশ কয়েকটি স্থানে শোডাউন করেছে আওয়ামী লীগ।
গত এপ্রিল মাসে আড়াইহাজারে কৃষকলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঝটিকা মিছিল করে আওয়ামী লীগ। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে ঈদ সামগ্রী বিতরণ, এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের উপহার দেয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রাচর করে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ। এসকল ছবিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের চেহারা অস্পষ্ট করে দেয়া হয়।
এর আগে চলতি মাসে আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজ থেকে ২৬ জুন থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত টানা কর্মসূচি ঘোঘনা করা হয়। নারায়ণগঞ্জে এসকল কর্মসূচি সফলের দায়িত্বে রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা হিসেবে নারায়ণগঞ্জের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।
নারায়ণগঞ্জে কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকার কর্মসূচিতে সাপোর্ট দেয়ার নির্দেশনাও দিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতারা। নারায়ণগঞ্জ থেকে লোক নিয়ে ঢাকায় বড় পরিসরে কর্মসূচি পালনের জন্যেও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কর্মীদের।
জানা গেছে ইতিমধ্যে ভার্চুয়ালি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে ভার্চুয়ালি সভা করেছেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। ভারত থেকেই ভিডিও বার্তা ও জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে দলীয় নেতাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন তিনি। পর্যায়ক্রমে তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়েও দলটি ভার্চুয়াল মিটিংয়ের আয়োজন করবে বলে জানা গেছে। নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে এসকল মিটিংয়ে শেখ হাসিনা নিজেই উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
নারায়ণগঞ্জের সাবেক এমপি শামীম ওসমানসহ পলাতক নেতারা নিয়মিত নিজ অনুসারীদের সাথে যোগাযোগ করছেন ও তাদের দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। এসকল কর্মসূচি থেকে নাশকতা ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন স্থাপনায় আক্রমণ করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসকল অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জ জুড়ে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এদিকে দুষ্কৃতকারীদের মোকাবিলায় নারায়ণগঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে চেকপোস্ট ও তল্লাশী কার্যকর জোরদার করেছে পুলিশ। এছাড়াও দূরপাল্লার যানচলাচল ও পন্য পরিবহনে যেন বিঘœ না ঘটে সেদিকে নজর দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জেলাজুড়ে বিভিন্ন ছাপাখানা ও কম্পিউটারের দোকানেও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে প্রশাসন।