ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগ আইএইএ প্রধানের বিরুদ্ধে

- আপডেট সময় : ০৪:১৩:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ৯ জন পড়েছেন
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) পরিচালক জেনারেল রাফায়েল গ্রোসির বিরুদ্ধে ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগ তীব্র আকার ধারন করেছে। ইরান কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গ্রোসি সংস্থাটিকে নিরপেক্ষ ও প্রযুক্তিগত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালনার পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলকে রাজনৈতিক সহায়তা দেওয়ার একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন।
ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ এসলামী বলেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে গ্রোসির ধ্বংসাত্মক ভূমিকা রেকর্ড হয়ে থাকবে। তিনি অভিযোগ করেন, গ্রোসি ইরানের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে সন্দেহের আওতায় আনার জন্য অননুমোদিত তথ্য ও অযৌক্তিক অভিযোগ প্রচার করছেন।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক হিসেবে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার কাজ হলো পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদন না করার বিষয়টি যাচাই করা। তবে ইরান বলছে, গ্রোসি সংস্থার তথ্যের গোপনীয়তা নীতি উপেক্ষা করে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে ইরানের প্রতি দমনমূলক মনোভাব গ্রহণ করেছেন।
এছাড়া গ্রোসির অভিযোগগুলোর প্রমাণ হিসেবে ইসরাইলের দেওয়া অবিশ্বস্ত তথ্য ব্যবহার করা হচ্ছে। ইসরাইল নিউক্লিয়ার প্রলিফারেশন ট্রিটিতে স্বাক্ষরকারী নয় এবং তাদের পারমাণবিক অস্ত্র বিষয়ক কার্যক্রম আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার নজরদারির বাইরে রয়েছে। সেই তুলনায়, ইরান সব ধরণের তথ্য ও ব্যাখ্যা সরবরাহ করছে। ইরান বলেছে, এই দ্বৈত মানদণ্ড আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা ধ্বংস করেছে।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে এই অবস্থার কারণে ইরানের বিরুদ্ধে চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে কষ্টে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এসলামী বলেন, গ্রোসির দীর্ঘসূত্রতা ইসরাইলকে অবৈধ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের সুযোগ তৈরি করেছে।
ইরান বলছে, ইসরাইলের সামরিক হামলার আগে গ্রোসির মন্তব্য ও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার রিপোর্ট আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ন্যারেটিভ ব্যবহার করে আক্রমণের যৌক্তিকতা তৈরি করা হয়েছিল। জুন মাসে ইসরাইল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে বড় ধরনের হামলা চালায়। ইরানের তথ্য অনুযায়ী, এই হামলায় শতাধিক সামরিক কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষ নিহত হয় এবং পারমাণবিক ও নাগরিক অবকাঠামো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মোহাম্মদ এসলামী আরও বলেন, গ্রোসির কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা-এর ইতিহাসে এক অন্ধকার অধ্যায় সৃষ্টি করেছে এবং সংস্থাটিকে একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
ইরানের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে যে, শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচির ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ও প্রযুক্তিগত তদারকি নিশ্চিত না করা, আন্তর্জাতিক পরমাণু নীতির প্রতি ধ্বংসাত্মক আঘাত হিসেবে গণ্য হবে।