ঢাকা ০১:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাদাপাথর লুট : উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটির গণশুনানি

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেট সময় : ০৬:৩৮:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৪৫ জন পড়েছেন
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে পাথর লুটের ঘটনায় তদন্ত কাজ করছে মন্ত্রীপরিষদ তদন্ত কমিটি। সিলেটে তাদের কার্যক্রমের দ্বিতীয়দিনে বুধবার (২৭ আগস্ট) সার্কিট হাউসে গণশুনানির আয়োজন করে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এই তদন্ত কমিটি।

গণশুনানিতে সভাপতিত্ব করেন তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জাহেদা পারভীন। কমিটির অন্য সদস্যরাও এসময় উপস্থিত ছিলেন।

শুনানিতে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, পুলিশ প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি ছাড়াও পরিবেশবাদী সংগঠন, ট্রাক পরিবহন মালিক সমিতি, পাথর ব্যবসায়ী সমিতি ও প্রেসক্লাব নেতারা অংশ নিয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন।

গণশুনানি শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তদন্ত কমিটির আহ্বায় ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জাহেদা পারভীন। এসময় তিনি তদন্ত সংক্রান্ত বেশিরভাগ প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান।

আগের দিন সাদাপাথর পরিদর্শন করা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা স্পট (সাদাপাথর) পরিদর্শন করেছি।

অনেক ধরনের জনগণের সঙ্গে কথা বলেছি। যাকে পেয়েছি, যাদের মনে হয়েছে কথা বলা দরকার তাদের কাছ থেকে ধারণা নেওয়ার চেষ্টা করেছি। স্থানীয় উপজেলায় আমরা বসেছিলাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে সেখানকার যাদের অংশীজন মনে হয়েছে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। আলাদাভাবেও আমরা প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলেছি।
গণশুনানি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আজকে জেলা পর্যায়ে সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন ব্যক্তি পর্যায়ে আলাদা আলাদা কথা বলেছি। আমাদের যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেটি বুঝার জন্য আমরা এভাবেই এগোচ্ছি। আপনাদের (সাংবাদিকদের) ধন্যবাদ দিতে চাই কারণ আপনারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন তথ্যের যোগান দিয়েছেন। অনেককিছু আছে যেগুলোকে আমরা বিবেচ

তদন্ত চলমান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বুঝাতে চাচ্ছি, আমাদের তদন্ত চলমান। এখন যেগুলো পেপার ক্লিপ আছে, সংবাদপত্র আছে, অন্যান্য ডিজিটাল ও ইলেকট্রনিক মাধ্যমে যে জিনিসগুলো আছে সেগুলো নিয়ে কাজ করব।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সিলেটের অংশ শেষ করেছি। এখন আমরা বসে তথ্যগুলো সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করব। এটুকু সময় আমরা নেবো। প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের সময় দেন সেই সময়ের মধ্যে আমরা কাজ শেষ করব।’

অন্যান্য সংস্থা এ বিষয়ে তদন্ত করছে। তাদের সঙ্গে কিভাবে সমন্বয় হবে প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অন্যদের তদন্ত বা তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে আমি অবগত নই। যেহেতু দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এটি, নিজ নিজ কর্তৃপক্ষ এটি করছে নিজেদের মতো করে। আপনারা জানেন এটা একক কারো দায়িত্ব নয়। অনেক মন্ত্রণালয়, কর্তৃপক্ষ, বিভাগ এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। যারা যার যার মতো করে তদন্ত করছে। মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে আমি সেটি পালন করছি। সমন্বয়ের বিষয়টি রিপোর্ট দেওয়ার পর সরকারের বিষয়, আমার নয়।’

এর আগে মঙ্গলবার মন্ত্রীপরিষদের তদন্ত কমিটি সরেজমিনে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর এলাকা পরিদর্শন করে। গত ২০ আগস্ট মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে কমিটি গঠনের পর তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করে।

প্রসঙ্গত, সাদাপাথর লুটের ঘটনায় ইতোমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার নিস্ক্রিয়তায় ও যোগসাজশ ছিল। দুদকের প্রতিবেদনে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ওসিসহ মোট ৫২ ব্যক্তি ও সংস্থার সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে রাজনৈতিক নেতা ও ব্যবসায়ী রয়েছেন ৪২ জন।

অন্যদিকে জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটিও একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সেখানে শতাধিক ব্যক্তির সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেলেও কোনো নাম প্রকাশ করা হয়নি।

ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সাদাপাথর লুট : উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটির গণশুনানি

আপডেট সময় : ০৬:৩৮:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে পাথর লুটের ঘটনায় তদন্ত কাজ করছে মন্ত্রীপরিষদ তদন্ত কমিটি। সিলেটে তাদের কার্যক্রমের দ্বিতীয়দিনে বুধবার (২৭ আগস্ট) সার্কিট হাউসে গণশুনানির আয়োজন করে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এই তদন্ত কমিটি।

গণশুনানিতে সভাপতিত্ব করেন তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জাহেদা পারভীন। কমিটির অন্য সদস্যরাও এসময় উপস্থিত ছিলেন।

শুনানিতে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, পুলিশ প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি ছাড়াও পরিবেশবাদী সংগঠন, ট্রাক পরিবহন মালিক সমিতি, পাথর ব্যবসায়ী সমিতি ও প্রেসক্লাব নেতারা অংশ নিয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন।

গণশুনানি শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তদন্ত কমিটির আহ্বায় ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জাহেদা পারভীন। এসময় তিনি তদন্ত সংক্রান্ত বেশিরভাগ প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান।

আগের দিন সাদাপাথর পরিদর্শন করা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা স্পট (সাদাপাথর) পরিদর্শন করেছি।

অনেক ধরনের জনগণের সঙ্গে কথা বলেছি। যাকে পেয়েছি, যাদের মনে হয়েছে কথা বলা দরকার তাদের কাছ থেকে ধারণা নেওয়ার চেষ্টা করেছি। স্থানীয় উপজেলায় আমরা বসেছিলাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে সেখানকার যাদের অংশীজন মনে হয়েছে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। আলাদাভাবেও আমরা প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলেছি।
গণশুনানি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আজকে জেলা পর্যায়ে সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন ব্যক্তি পর্যায়ে আলাদা আলাদা কথা বলেছি। আমাদের যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেটি বুঝার জন্য আমরা এভাবেই এগোচ্ছি। আপনাদের (সাংবাদিকদের) ধন্যবাদ দিতে চাই কারণ আপনারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন তথ্যের যোগান দিয়েছেন। অনেককিছু আছে যেগুলোকে আমরা বিবেচ

তদন্ত চলমান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বুঝাতে চাচ্ছি, আমাদের তদন্ত চলমান। এখন যেগুলো পেপার ক্লিপ আছে, সংবাদপত্র আছে, অন্যান্য ডিজিটাল ও ইলেকট্রনিক মাধ্যমে যে জিনিসগুলো আছে সেগুলো নিয়ে কাজ করব।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সিলেটের অংশ শেষ করেছি। এখন আমরা বসে তথ্যগুলো সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করব। এটুকু সময় আমরা নেবো। প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের সময় দেন সেই সময়ের মধ্যে আমরা কাজ শেষ করব।’

অন্যান্য সংস্থা এ বিষয়ে তদন্ত করছে। তাদের সঙ্গে কিভাবে সমন্বয় হবে প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অন্যদের তদন্ত বা তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে আমি অবগত নই। যেহেতু দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এটি, নিজ নিজ কর্তৃপক্ষ এটি করছে নিজেদের মতো করে। আপনারা জানেন এটা একক কারো দায়িত্ব নয়। অনেক মন্ত্রণালয়, কর্তৃপক্ষ, বিভাগ এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। যারা যার যার মতো করে তদন্ত করছে। মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে আমি সেটি পালন করছি। সমন্বয়ের বিষয়টি রিপোর্ট দেওয়ার পর সরকারের বিষয়, আমার নয়।’

এর আগে মঙ্গলবার মন্ত্রীপরিষদের তদন্ত কমিটি সরেজমিনে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর এলাকা পরিদর্শন করে। গত ২০ আগস্ট মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে কমিটি গঠনের পর তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করে।

প্রসঙ্গত, সাদাপাথর লুটের ঘটনায় ইতোমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার নিস্ক্রিয়তায় ও যোগসাজশ ছিল। দুদকের প্রতিবেদনে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ওসিসহ মোট ৫২ ব্যক্তি ও সংস্থার সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে রাজনৈতিক নেতা ও ব্যবসায়ী রয়েছেন ৪২ জন।

অন্যদিকে জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটিও একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সেখানে শতাধিক ব্যক্তির সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেলেও কোনো নাম প্রকাশ করা হয়নি।