ঢাকা ০৮:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
মালয়েশিয়ায় দুই বাংলাদেশির বিরুদ্ধে আইএস সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ

মালয়েশিয়ায় দুই বাংলাদেশির বিরুদ্ধে আইএস সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেট সময় : ০৪:৪৮:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৫ জন পড়েছেন

দুই বাংলাদেশির বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার সেশনস কোর্টে সন্ত্রাসবাদ-সম্পর্কিত অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) আদালত এ অভিযোগ আনেন।

দেশটির সংবাদ সংস্থা বারনামা জানিয়েছে, তাদের মধ্যে একজন মামুন আলী (৩১)। তিনি সাহিফুল্লাহ ইসলাম নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ইসলামিক স্টেট (আইএস) সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সমর্থন জানানোর অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। ২০২৩ সালের ২৮ জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।

মালয়েশিয়ার পেনাল কোডের ১৩০জে (১)(এ) ধারার অধিনে এ অভিযোগ আনা হয়েছে, যা দোষী সাব্যস্ত হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা ৩০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং জরিমানাও হতে পারে।

অপরজন রেফাত বিশাত (২৭)। তিনি ২০২৫ সালের ১০ জুলাই বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে লারকিন ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকার একটি বাড়িতে তার হোনোর কোম্পানির এক্স৬এ মডেলের মোবাইল ফোনে আইএস সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর পতাকার ছবি রাখার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। দেশটির পেনাল কোডের ১৩০ জেবি (১) (এ) ধারার অধীনে এ অভিযোগ আনা হয়েছে, যাতে দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড অথবা জরিমানা এবং সংশ্লিষ্ট জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত হতে পারে বলে জানিয়েছে বারনামা।

বারনামা জানিয়েছে, বিচারক দাতুক আহমাদ কামাল আরিফিন ইসমাইল তাদের দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন। একজন দোভাষী নিয়োগের জন্য ১২ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেন। মামলাগুলোতে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি হিসেবে যথাক্রমে ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর মারিয়াম জামিয়েলা আব মানাফ এবং নূর আইনানা রিদজওয়ান উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সংস্থাটি স্পষ্ট করে জানিয়েছে, অভিযুক্ত দুজনের পক্ষেই কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

এদিকে, মালয়েশিয়ার জোহর বারুতে দুই বাংলাদেশি নাগরিকের বিরুদ্ধে আইএস জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে মামলা হয়েছে। দুই মাস আগে গ্রেফতার হওয়া মোহাম্মদ আফসার ভূঁইয়া (৩০) ও রফিকুল ইসলামকে (৩৫) শুক্রবার (১০ আগস্ট) সশস্ত্র পুলিশের কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সেশন কোর্টে হাজির করা হয়।

দেশটির টিভি তিগা ও হারিয়ান মেট্রো জানিয়েছে, দাতুক চে ওয়ান যায়েদি চে ওয়ান ইব্রাহিমের আদালতে শুনানির সময় ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর লিনা হনিনি ইসমাইল জানান, বাংলা দোভাষী উপস্থিত না থাকায় অভিযোগপত্র পাঠ করা সম্ভব হয়নি। তিনি আদালতের কাছে নতুন তারিখ নির্ধারণের আবেদন করেন। এদিন কোনো জামিনের প্রস্তাব দেওয়া হয়নি।

আদালত আগামী ১২ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্র পাঠের জন্য নতুন তারিখ ধার্য করেছে। কিন্তু অভিযুক্তদের পক্ষে কোনো আইনজীবী নেই।

মালয়েশিয়ার গণমাধ্যমগুলো বলছে, অভিযোগ অনুযায়ী মোহাম্মদ আফসারের বিরুদ্ধে দুটি এবং রফিকুলের বিরুদ্ধে একটি মামলা করার কথা। জুন মাসে গেলাং পাতাহ এলাকায় তাদের মোবাইল ফোনে আইএস সংশ্লিষ্ট কন্টেন্ট থাকার অভিযোগ রয়েছে।

তাদের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার দণ্ডবিধির ধারা ১৩০ জেবি(১)(এ) অনুযায়ী অভিযোগ আনা হবে, যেখানে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড বা জরিমানা এবং অপরাধে ব্যবহৃত বা ব্যবহারের উদ্দেশ্যে রাখা যে কোনো সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের বিধান রয়েছে—যদি দোষী প্রমাণিত হয়।

২৮ জুলাই অভিযোগপত্র পাঠের জন্য তাদের আদালতে আনা হয়েছিল, কিন্তু সেদিনও বাংলা দোভাষীর অনুপস্থিতিতে শুনানি স্থগিত হয়। আজও একই কারণে শুনানি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে হারিয়ান মেট্রো।

৪ জুলাই প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, মালয়েশিয়ায় বিদেশি জঙ্গি গোষ্ঠী ‘গেরাকান মিলিটান র্যাডিকাল বাংলাদেশ’ (জিএমআরবি) সক্রিয় রয়েছে। গোষ্ঠীটি বৈধভাবে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করা বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে উগ্রবাদী মতবাদ ছড়িয়ে দিয়ে তাদের সন্ত্রাসবাদ-সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে যুক্ত করছে।

বুলেটিন টিভি তিগা জানিয়েছে, পুলিশ মহাপরিদর্শক দাতুক সেরি মোহদ খালিদ ইসমাইল জানান, এই গোষ্ঠী সোশ্যাল মিডিয়া ও মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে অভিবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে আইএস মতবাদ প্রচার করছিল।

ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মালয়েশিয়ায় দুই বাংলাদেশির বিরুদ্ধে আইএস সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ

মালয়েশিয়ায় দুই বাংলাদেশির বিরুদ্ধে আইএস সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৪:৪৮:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫

দুই বাংলাদেশির বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার সেশনস কোর্টে সন্ত্রাসবাদ-সম্পর্কিত অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) আদালত এ অভিযোগ আনেন।

দেশটির সংবাদ সংস্থা বারনামা জানিয়েছে, তাদের মধ্যে একজন মামুন আলী (৩১)। তিনি সাহিফুল্লাহ ইসলাম নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ইসলামিক স্টেট (আইএস) সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সমর্থন জানানোর অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। ২০২৩ সালের ২৮ জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।

মালয়েশিয়ার পেনাল কোডের ১৩০জে (১)(এ) ধারার অধিনে এ অভিযোগ আনা হয়েছে, যা দোষী সাব্যস্ত হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা ৩০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং জরিমানাও হতে পারে।

অপরজন রেফাত বিশাত (২৭)। তিনি ২০২৫ সালের ১০ জুলাই বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে লারকিন ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকার একটি বাড়িতে তার হোনোর কোম্পানির এক্স৬এ মডেলের মোবাইল ফোনে আইএস সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর পতাকার ছবি রাখার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। দেশটির পেনাল কোডের ১৩০ জেবি (১) (এ) ধারার অধীনে এ অভিযোগ আনা হয়েছে, যাতে দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড অথবা জরিমানা এবং সংশ্লিষ্ট জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত হতে পারে বলে জানিয়েছে বারনামা।

বারনামা জানিয়েছে, বিচারক দাতুক আহমাদ কামাল আরিফিন ইসমাইল তাদের দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন। একজন দোভাষী নিয়োগের জন্য ১২ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেন। মামলাগুলোতে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি হিসেবে যথাক্রমে ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর মারিয়াম জামিয়েলা আব মানাফ এবং নূর আইনানা রিদজওয়ান উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সংস্থাটি স্পষ্ট করে জানিয়েছে, অভিযুক্ত দুজনের পক্ষেই কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

এদিকে, মালয়েশিয়ার জোহর বারুতে দুই বাংলাদেশি নাগরিকের বিরুদ্ধে আইএস জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে মামলা হয়েছে। দুই মাস আগে গ্রেফতার হওয়া মোহাম্মদ আফসার ভূঁইয়া (৩০) ও রফিকুল ইসলামকে (৩৫) শুক্রবার (১০ আগস্ট) সশস্ত্র পুলিশের কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সেশন কোর্টে হাজির করা হয়।

দেশটির টিভি তিগা ও হারিয়ান মেট্রো জানিয়েছে, দাতুক চে ওয়ান যায়েদি চে ওয়ান ইব্রাহিমের আদালতে শুনানির সময় ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর লিনা হনিনি ইসমাইল জানান, বাংলা দোভাষী উপস্থিত না থাকায় অভিযোগপত্র পাঠ করা সম্ভব হয়নি। তিনি আদালতের কাছে নতুন তারিখ নির্ধারণের আবেদন করেন। এদিন কোনো জামিনের প্রস্তাব দেওয়া হয়নি।

আদালত আগামী ১২ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্র পাঠের জন্য নতুন তারিখ ধার্য করেছে। কিন্তু অভিযুক্তদের পক্ষে কোনো আইনজীবী নেই।

মালয়েশিয়ার গণমাধ্যমগুলো বলছে, অভিযোগ অনুযায়ী মোহাম্মদ আফসারের বিরুদ্ধে দুটি এবং রফিকুলের বিরুদ্ধে একটি মামলা করার কথা। জুন মাসে গেলাং পাতাহ এলাকায় তাদের মোবাইল ফোনে আইএস সংশ্লিষ্ট কন্টেন্ট থাকার অভিযোগ রয়েছে।

তাদের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার দণ্ডবিধির ধারা ১৩০ জেবি(১)(এ) অনুযায়ী অভিযোগ আনা হবে, যেখানে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড বা জরিমানা এবং অপরাধে ব্যবহৃত বা ব্যবহারের উদ্দেশ্যে রাখা যে কোনো সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের বিধান রয়েছে—যদি দোষী প্রমাণিত হয়।

২৮ জুলাই অভিযোগপত্র পাঠের জন্য তাদের আদালতে আনা হয়েছিল, কিন্তু সেদিনও বাংলা দোভাষীর অনুপস্থিতিতে শুনানি স্থগিত হয়। আজও একই কারণে শুনানি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে হারিয়ান মেট্রো।

৪ জুলাই প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, মালয়েশিয়ায় বিদেশি জঙ্গি গোষ্ঠী ‘গেরাকান মিলিটান র্যাডিকাল বাংলাদেশ’ (জিএমআরবি) সক্রিয় রয়েছে। গোষ্ঠীটি বৈধভাবে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করা বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে উগ্রবাদী মতবাদ ছড়িয়ে দিয়ে তাদের সন্ত্রাসবাদ-সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে যুক্ত করছে।

বুলেটিন টিভি তিগা জানিয়েছে, পুলিশ মহাপরিদর্শক দাতুক সেরি মোহদ খালিদ ইসমাইল জানান, এই গোষ্ঠী সোশ্যাল মিডিয়া ও মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে অভিবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে আইএস মতবাদ প্রচার করছিল।