ঢাকা ০৪:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
‎সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সাংবাদিক মামুন রনিকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে গেলেন সাখাওয়াত টিপু ফতুল্লায় একাধিক মামলার আসামি ছিনতাইকারী দুর্জয় গ্রেপ্তার খালেদা জিয়ার জন্মদিনে ১০০টি মসজিদে মাসুদুজ্জামানের দোয়া  রূপগঞ্জে খাল দখল মুক্ত করেনল প্রশাসন মায়ের ওষুধ আনতে গিয়ে নিখোজ হয় ইয়াসিন চাষাঢ়ায় পঞ্চায়েত নেতাদের মাদক ব্যবসায়ীদের হুমকি, এলাকাবাসীর সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সিদ্ধিরগঞ্জ থানার বিশেষ অভিযানে তাঁতী লীগ, শ্রমিক লীগ ও যুবলীগের তিন নেতা গ্রেফতার চার দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক আইনমন্ত্রী সিদ্ধিরগঞ্জে নারীসহ ২ লাশ উদ্ধার ‘পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান’ দিয়েই ফিরছেন জনি ডেপ?
ভারতে স্বাধীনতা দিবসে মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ, তীব্র বিতর্ক

ভারতে স্বাধীনতা দিবসে মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ, তীব্র বিতর্ক

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেট সময় : ০৪:০৬:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
  • / ১৮ জন পড়েছেন

ভারতের স্বাধীনতা দিবসে দেশটির বিভিন্ন সিটি করপোরেশন ও পৌর কর্তৃপক্ষ কসাইখানা ও মাংসের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এ নিয়ে ভারতে বড় ধরনের রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে।

এমন সিদ্ধান্তকে সরাসরি মানুষের খাদ্যাভ্যাসের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ তুলেছে বিরোধী দলগুলো। এই ইস্যুতে সমালোচনায় সরব হয়েছেন হায়দরাবাদের এমপি ও অল ইন্ডিয়া মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমিনের (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি থেকে শিবসেনা নেতা আদিত্য ঠাকরে।

স্বাধীনতা দিবসে মানুষের খাদ্যাভ্যাসের স্বাধীনতা হরণের অধিকার কে দিল, প্রশ্ন তুলেছেন তারা।

ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবস ও ১৬ আগস্ট জন্মাষ্টমীতে সব কসাইখানা ও মাংসের দোকান বন্ধ থাকবে।

১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের, বিভিন্ন এলাকায় মাংস নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।দিল্লি পৌরসভা জানিয়েছে, ওই দিন সব মাংসের দোকান বন্ধ রাখতে হবে। কসাইখানাগুলোও ওইদিন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মহারাষ্ট্রের ছত্রপতি সম্ভাজীনগরেও একই ভাবে মাংস নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই নির্দেশ দিয়েছে থানের কল্যাণ-দোম্বিভ্যালি পৌরসভা।

গ্রেটার হায়দরাবাদ মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের (জিএইচএমসি) এমন নির্দেশনার তীব্র সমালোচনা করেছেন আসাদুদ্দিন ওয়াইসি।

এক্সে তিনি লিখেছেন, ‘ভারতের অনেক পৌরসভা ১৫ আগস্ট কসাইখানা ও মাংসের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে জিএইচএমসিও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি সংবেদনশীলতা ও সংবিধান—দুটোরই পরিপন্থী।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাংস খাওয়া আর স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপনের মধ্যে সম্পর্ক কী? তেলেঙ্গানার ৯৯ শতাংশ মানুষ মাংস খান। এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা মানুষের স্বাধীনতা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা, জীবিকা, সংস্কৃতি, পুষ্টি ও ধর্ম পালনের অধিকার লঙ্ঘন করে।’

মহারাষ্ট্রের ছত্রপতি সম্ভোজনগরে জারি হওয়া একই ধরনের মাংস বিক্রয় নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করেছেন রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার। তিনি বলেন, ‘এভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ ঠিক নয়। বড় শহরে নানা বর্ণ ও ধর্মের মানুষ থাকেন। যদি বিষয়টি আবেগের হয়, মানুষ হয়তো এক দিনের জন্য মেনে নেয়। কিন্তু মহারাষ্ট্র দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও প্রজাতন্ত্র দিবসে এমন আদেশ জারি করলে তা কঠিন হয়ে যায়।’

মুম্বাইয়ের কাছের থানেতে কল্যাণ-ডোম্বিওয়ালি মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনও একই নির্দেশ দিয়েছে। এ নিয়ে শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা আদিত্য ঠাকরে বলেছেন, পৌর কমিশনারের দায়িত্ব নয় কে কী খাবেন তা নির্ধারণ করা। তার মতে, কমিশনারকে বরখাস্ত করা উচিত।

আদিত্য বলেন, ‘স্বাধীনতা দিবসে আমরা কী খাব, তা আমাদের অধিকার, আমাদের স্বাধীনতা। তারা আমাদের বলতে পারে না কী খাব। আমাদের ঘরে এমনকি নবরাত্রিতেও প্রসাদে চিংড়ি ও মাছ থাকে, কারণ এটাই আমাদের ঐতিহ্য। এটাই আমাদের হিন্দুত্ব। কেন আপনারা আমাদের ঘরে ঢুকছেন? পৌর করপোরেশনকে বরং রাস্তায় গর্তের মতো সমস্যায় মনোযোগ দেওয়া উচিত।’

এদিকে, মহারাষ্ট্রের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী একনাথ সিন্ধের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা অংশের মুখপাত্র অরুণ সাওয়ান্ত বলেছেন, মহারাষ্ট্রে বিজেপি-শিবসেনা-এনসিপি জোট সরকার এ ধরনের মাংস নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেনি।

তিনি বলেন, ‘বিরোধীরা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে এবং সরকারকে বদনাম করার চেষ্টা করছে।’

ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ভারতে স্বাধীনতা দিবসে মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ, তীব্র বিতর্ক

ভারতে স্বাধীনতা দিবসে মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ, তীব্র বিতর্ক

আপডেট সময় : ০৪:০৬:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫

ভারতের স্বাধীনতা দিবসে দেশটির বিভিন্ন সিটি করপোরেশন ও পৌর কর্তৃপক্ষ কসাইখানা ও মাংসের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এ নিয়ে ভারতে বড় ধরনের রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে।

এমন সিদ্ধান্তকে সরাসরি মানুষের খাদ্যাভ্যাসের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ তুলেছে বিরোধী দলগুলো। এই ইস্যুতে সমালোচনায় সরব হয়েছেন হায়দরাবাদের এমপি ও অল ইন্ডিয়া মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমিনের (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি থেকে শিবসেনা নেতা আদিত্য ঠাকরে।

স্বাধীনতা দিবসে মানুষের খাদ্যাভ্যাসের স্বাধীনতা হরণের অধিকার কে দিল, প্রশ্ন তুলেছেন তারা।

ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবস ও ১৬ আগস্ট জন্মাষ্টমীতে সব কসাইখানা ও মাংসের দোকান বন্ধ থাকবে।

১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের, বিভিন্ন এলাকায় মাংস নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।দিল্লি পৌরসভা জানিয়েছে, ওই দিন সব মাংসের দোকান বন্ধ রাখতে হবে। কসাইখানাগুলোও ওইদিন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মহারাষ্ট্রের ছত্রপতি সম্ভাজীনগরেও একই ভাবে মাংস নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই নির্দেশ দিয়েছে থানের কল্যাণ-দোম্বিভ্যালি পৌরসভা।

গ্রেটার হায়দরাবাদ মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের (জিএইচএমসি) এমন নির্দেশনার তীব্র সমালোচনা করেছেন আসাদুদ্দিন ওয়াইসি।

এক্সে তিনি লিখেছেন, ‘ভারতের অনেক পৌরসভা ১৫ আগস্ট কসাইখানা ও মাংসের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে জিএইচএমসিও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি সংবেদনশীলতা ও সংবিধান—দুটোরই পরিপন্থী।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাংস খাওয়া আর স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপনের মধ্যে সম্পর্ক কী? তেলেঙ্গানার ৯৯ শতাংশ মানুষ মাংস খান। এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা মানুষের স্বাধীনতা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা, জীবিকা, সংস্কৃতি, পুষ্টি ও ধর্ম পালনের অধিকার লঙ্ঘন করে।’

মহারাষ্ট্রের ছত্রপতি সম্ভোজনগরে জারি হওয়া একই ধরনের মাংস বিক্রয় নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করেছেন রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার। তিনি বলেন, ‘এভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ ঠিক নয়। বড় শহরে নানা বর্ণ ও ধর্মের মানুষ থাকেন। যদি বিষয়টি আবেগের হয়, মানুষ হয়তো এক দিনের জন্য মেনে নেয়। কিন্তু মহারাষ্ট্র দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও প্রজাতন্ত্র দিবসে এমন আদেশ জারি করলে তা কঠিন হয়ে যায়।’

মুম্বাইয়ের কাছের থানেতে কল্যাণ-ডোম্বিওয়ালি মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনও একই নির্দেশ দিয়েছে। এ নিয়ে শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা আদিত্য ঠাকরে বলেছেন, পৌর কমিশনারের দায়িত্ব নয় কে কী খাবেন তা নির্ধারণ করা। তার মতে, কমিশনারকে বরখাস্ত করা উচিত।

আদিত্য বলেন, ‘স্বাধীনতা দিবসে আমরা কী খাব, তা আমাদের অধিকার, আমাদের স্বাধীনতা। তারা আমাদের বলতে পারে না কী খাব। আমাদের ঘরে এমনকি নবরাত্রিতেও প্রসাদে চিংড়ি ও মাছ থাকে, কারণ এটাই আমাদের ঐতিহ্য। এটাই আমাদের হিন্দুত্ব। কেন আপনারা আমাদের ঘরে ঢুকছেন? পৌর করপোরেশনকে বরং রাস্তায় গর্তের মতো সমস্যায় মনোযোগ দেওয়া উচিত।’

এদিকে, মহারাষ্ট্রের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী একনাথ সিন্ধের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা অংশের মুখপাত্র অরুণ সাওয়ান্ত বলেছেন, মহারাষ্ট্রে বিজেপি-শিবসেনা-এনসিপি জোট সরকার এ ধরনের মাংস নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেনি।

তিনি বলেন, ‘বিরোধীরা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে এবং সরকারকে বদনাম করার চেষ্টা করছে।’