আমেরিকায় থাকায় বিদেশি নাগরিক বললে তারেক রহমানকেও বলবে কাল

- আপডেট সময় : ০৯:৫৪:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
- / ১০ জন পড়েছেন
শুধু বাংলাদেশের নাগরিক থাকার কথা নিশ্চিত করে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে থাকার কারণে যদি আমাকে বলা হয় বিদেশি নাগরিক, তাহলে কাল তো (লন্ডনে অবস্থান করা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমানকেও এমন কথা বলবে। বুধবার দুপুরে বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন নিরাপত্তা উপদেষ্টা।
মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চলকেন্দ্রিক মানবিক করিডোর নিয়ে কারও সঙ্গে কোনো কথা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেছেন, জাতিসংঘ আমাদের এতটুকু বলেছে, ত্রাণসামগ্রী বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে রাখাইনে নেওয়ার জন্য। এ সময় ‘মানবিক করিডর’ নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের আলোচনাকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়ে খলিলুর রহমান বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলছি, করিডর নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কারও কথা হয়নি।
কারও সঙ্গে কথা হবেও না। অনেকে বলছেন, করিডর বিষয়ে সরকার কথা বলছে না কেন? অস্তিত্বহীন জিনিস নিয়ে কী আলোচনা করব? মানবিক করিডর হচ্ছে— একটা জরুরি সময়ে দুর্যোগপূর্ণ জায়গা থেকে মানুষকে সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা। এখানে কাউকে সরানো হচ্ছে না। যেটা করা হচ্ছে, তাতে এখানে ত্রাণসামগ্রী ও উপকরণ অন্য রুটে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। জাতিসংঘ আমাদের এতটুকু বলেছে, পণ্যটি বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে রাখাইনে নেওয়ার জন্য।
রাখাইনে মানবিক সহায়তা কোন রুট দিয়ে, কীভাবে যাবে সেটি এখনো ঠিক হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, রোগী তো এখনো হাসপাতালে। এসব নিয়ে এখনো আলোচনা শুরু হয়নি। আমরা এখনো সেখানে যাইনি। কোনো কিছু এখনো বিবেচনার জন্য আসেনি।
মানবিক সহায়তা পাঠানোর জন্য রাস্তাঘাট, নিরাপত্তার বিষয় দেখতে হবে জানিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, মানবিক সহায়তার নিয়ন্ত্রণ থাকবে জাতিসংঘের কাছে, বাংলাদেশের কাজ হবে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করা। মানবিক সহায়তার আড়ালে মাদক যাচ্ছে কিনা, অস্ত্র আসছে কিনা—এসব দেখবে সরকার, যাতে মানবিক সহায়তা সঠিকভাবে নিয়ে যেতে পারে।
করিডর স্থাপন করে লোকজনের যাতায়াতের প্রয়োজনীয়তা এখন নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, এখন প্রয়োজন শুধু ত্রাণ পৌঁছানো। আরাকানের অবস্থা যত দিন অস্থিতিশীল থাকবে, তত দিন আমরা প্রত্যাবাসন নিয়ে কথা বলতে পারব না।
মানবিক সহায়তা নিয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে কোনো মতপার্থক্য আছে কিনা—জানতে চাইলে খলিলুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে সেনাপ্রধানের সঙ্গে আমার বিস্তর আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে কোনো মতপার্থক্য নেই।
গত এপ্রিলে করিডর স্থাপনের বিষয়ে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের কথা পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন উল্লেখ করে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে আমার রোজ কথা হয়। তিনি ‘স্লিপ অব দ্য টাং’ কথাটি বলেছিলেন। উনি পরে সংশোধন করেছেন। এরপর মানবিক করিডর নিয়ে আর কোনো কথা বলেননি তিনি।
নিজের নাগরিকত্ব নিয়ে অবস্থান পরিষ্কার করে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেন, আমি শুধু বাংলাদেশের নাগরিক। বাংলাদেশে আসার আগে যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের সঙ্গে থেকেছি।
আমার যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্ট নেই। বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কোনো দেশের জাতীয়তা আমার নেই। এখন আমাকে যদি বলা হয়, আমেরিকায় থেকেছি তাই আমি ওই দেশের নাগরিক। তাহলে কাল তারেক রহমানকে একই কথা বলা হবে। আমি আবেদন করব, একটু বুঝে কথা বলবেন। যদি আমাকে ঢিল নিক্ষেপ করেন, সেই ঢিল কিন্তু অন্যের ওপর গিয়েও পড়তে পারে।
সবার প্রতি বুঝেশুনে কথা বলার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আমি যেটা নই, আমাকে সেটা বানাবেন না। আর যদি পারেন আদালতে প্রমাণ দিন, আমি বিদেশি নাগরিক। ‘প্লিজ স্টপ ইট’। আমার একটা অধিকার আছে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে। সেই অধিকার যদি আপনারা রক্ষা না করেন, সেটি যে কারো ওপর প্রযোজ্য হতে পারে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর।