রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ (পণ্য রাখার স্থান) কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় ২৫০টি কারখানার রপ্তানিপণ্য পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান।
এর মধ্য রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আনা বেশ কিছু বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পুড়ে গেছে। এসব সরঞ্জাম আজ রবিবার কার্গো ভিলেজ থেকে খালাস হওয়ার কথা ছিল বলে জানা গেছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য রাশিয়া থেকে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম আনা হয়।
সূত্র জানায়, ছয় দিন আগে রাশিয়া থেকে সাতটি শিপমেন্টের মাধ্যমে প্রায় ১৮ টনের মতো বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম এসেছিল। এসব পণ্য খালাসের জন্য পরমাণু শক্তি কমিশন থেকে এনওসি (অনাপত্তিপত্র) নিতে হয়। সেই এনওসি নিতে দেরি হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পণ্য খালাস করা যায়নি। আজ রবিবার খালাস হওয়ার কথা ছিল; কিন্তু তার মধ্যেই এসব পণ্য আগুনে পুড়ে গেছে।
জানা গেছে, প্রতি সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার বন্ড বহির্ভূত আমদানি পণ্য খালাস বন্ধ থাকে। তবে কুরিয়ারে আসা ডকুমেন্টস শনিবার অর্ধদিবস ও অন্য ৫দিন খালাস হয়। পুরো খালাস প্রক্রিয়ার দায়িত্বে থাকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, যা নিয়ন্ত্রণ করে সিভিল অ্যাভিয়েশন।
এদিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটওয়ারীকে। অন্য সদস্যরা হলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব মু. রইচ উদ্দিন খান ও মো. তারেক হাসান এবং ঢাকা কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার মুহাম্মদ কামরুল হাসান।
বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আগুন পরিকল্পিত বলে মনে করছে ঢাকা কাস্টমস এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটি বলছে, তাদের দৃঢ় বিশ্বাস- এটি কেবল দুর্ঘটনা নয় বরং দেশের শিল্পকারখানা, আমদানি-রপ্তানি খাত এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ক্ষতি করে জাতীয় অর্থনীতিকে অচলের নীলনকশার অংশ হতে পারে।
রবিবার সংগঠনের সভাপতি মিজানুর রহমানের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। পরে খবর পেয়ে একে একে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭ ইউনিটসহ আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয় সিভিল অ্যাভিয়েশন, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনী। অবশেষে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টা প্রচেষ্টার পর রাত সোয়া ৯টার দিকে নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন।