ঢাকা ০৪:১৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরাজমান সমস্যাগুলো একটি জাতীয় সমস্যা

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেট সময় : ০৭:৩৩:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ১৪ জন পড়েছেন
বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরাজমান সমস্যাগুলো শুধু সেখানে বসবাসরত আদিবাসীদের সমস্যা না, একটি জাতীয় সমস্যা। আদিবাসীদের সমস্যাকে সংখ্যাগুরুর লেন্স দিয়ে দেখলে হবে না, আদিবাসীদের লেন্স দিয়েই দেখতে হবে। সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির

শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে পাভেল পার্থ বলেন, এম এন লারমা ছোটকাল থেকে কঠিন বাস্তবতার মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠেছিলেন। তিনিই প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম বাংলাদেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেছেন এবং একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন।

বাঙালি হেজিমনির বিরুদ্ধে আইডেন্টিটির ন্যারেটিভটা বাঁচিয়ে রাখার জন্য সেই সময়ে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি। অথচ এখন নতুন করে বাইনারি বিভাজনের অপচেষ্টা চলছে।মানবাধিকার কর্মী দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। ২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়নকালে সেই বিষয়গুলো নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।

সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন কখনো আদিবাসীদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। অথচ গণ-অভ্যুত্থানে আদিবাসীদেরও অংশীদারি আছসমাপনী বক্তব্যে জাকির হোসেন বলেন, এম এন লারমা জাতীয় নেতা। কিন্তু অনেকে তাঁকে জাতীয় হিসেবে মেনে নিতে পারেন না। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেন।

সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। কিন্তু সরকার সেই চুক্তি যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করেনি। বৈষম্য কমানোর জন্য পিছিয়ে রাখা মানুষদেরকে এগিয়ে নিতে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।অনুষ্ঠানটি শুরু হয় মহান নেতা এম এন লারমাকে সম্মান জানিয়ে কবিতা পাঠের মাধ্যমে। কবিতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেই চাকমা ও লাল নিকিম বম। কবিতা আবৃত্তির পরে এম এন লারমার জীবন বৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন, ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা। এই অনুষ্ঠানে সংহতি প্রকাশ করে আদিবাসী ছাত্র ও যুব সংগঠনসমূহ।

ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরাজমান সমস্যাগুলো একটি জাতীয় সমস্যা

আপডেট সময় : ০৭:৩৩:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরাজমান সমস্যাগুলো শুধু সেখানে বসবাসরত আদিবাসীদের সমস্যা না, একটি জাতীয় সমস্যা। আদিবাসীদের সমস্যাকে সংখ্যাগুরুর লেন্স দিয়ে দেখলে হবে না, আদিবাসীদের লেন্স দিয়েই দেখতে হবে। সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির

শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে পাভেল পার্থ বলেন, এম এন লারমা ছোটকাল থেকে কঠিন বাস্তবতার মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠেছিলেন। তিনিই প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম বাংলাদেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেছেন এবং একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন।

বাঙালি হেজিমনির বিরুদ্ধে আইডেন্টিটির ন্যারেটিভটা বাঁচিয়ে রাখার জন্য সেই সময়ে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি। অথচ এখন নতুন করে বাইনারি বিভাজনের অপচেষ্টা চলছে।মানবাধিকার কর্মী দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। ২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়নকালে সেই বিষয়গুলো নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।

সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন কখনো আদিবাসীদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। অথচ গণ-অভ্যুত্থানে আদিবাসীদেরও অংশীদারি আছসমাপনী বক্তব্যে জাকির হোসেন বলেন, এম এন লারমা জাতীয় নেতা। কিন্তু অনেকে তাঁকে জাতীয় হিসেবে মেনে নিতে পারেন না। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেন।

সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। কিন্তু সরকার সেই চুক্তি যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করেনি। বৈষম্য কমানোর জন্য পিছিয়ে রাখা মানুষদেরকে এগিয়ে নিতে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।অনুষ্ঠানটি শুরু হয় মহান নেতা এম এন লারমাকে সম্মান জানিয়ে কবিতা পাঠের মাধ্যমে। কবিতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেই চাকমা ও লাল নিকিম বম। কবিতা আবৃত্তির পরে এম এন লারমার জীবন বৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন, ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা। এই অনুষ্ঠানে সংহতি প্রকাশ করে আদিবাসী ছাত্র ও যুব সংগঠনসমূহ।