রূপগঞ্জে শফিকুল বাহিনী ৬৭ বছরের প্রবীণকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেল

- আপডেট সময় : ০১:৫২:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫
- / ২২ জন পড়েছেন
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সন্ত্রাসী শফিকুল বাহিনীর চাঁদাবাজি, অস্ত্রসন্ত্রাস ও মাদক কারবারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় হামলার শিকার হয়েছেন মোঃ সামছুদ্দোহা ভূঁইয়া (৬৭)। তিনি রূপগঞ্জ থানার কর্ণগোপ গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। কর্মজীবনে তিনি করিম জুট মিলে সৎ ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি অবসর জীবনযাপন করছেন এবং ভাড়াটিয়া বাড়ি ভাড়া দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
গত ২৮ জুলাই (২০২৫) বিকেলে কর্ণগোপের রহিম মার্কেটের সামনে শফিকুল ইসলাম শফিকের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। তারা দশ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে, অস্বীকৃতি জানালে লাঠি, রড ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে পৈশাচিক মারধর করে এবং হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি ছোড়ে। আশপাশের লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় সামছুদ্দোহা ভূঁইয়াকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
রবিবার (২ আগস্ট) নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী মোঃ সামছুদ্দোহা ভূঁইয়া লিখিত বক্তব্যে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, শফিকুল ইসলাম শফিক ও তার বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে কর্ণগোপ এলাকায় মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। সম্প্রতি তার ভাড়াটিয়াদের মারধর, মোবাইল-টাকা ছিনিয়ে নেওয়া এবং ভয় দেখিয়ে বাড়ি ছাড়ার মতো ঘটনাও ঘটিয়েছে। এসব বিষয়ে তিনি রূপগঞ্জ থানা ও স্থানীয় আর্মি ক্যাম্পে একাধিকবার অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু অভিযোগের পরও সন্ত্রাসীরা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
তিনি আরও বলেন, “আমি, আমার ছেলে-মেয়ে কেউই কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নই। আমরা একজন সাধারণ, শিক্ষিত, মধ্যবিত্ত পরিবার। মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সবসময় প্রতিবাদ করে এসেছি। শফিকুল বাহিনীর বিরুদ্ধে এলাকার মানুষ মুখ খুলতে ভয় পায়। অথচ এই বাহিনীকে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় পালে বড় করা হচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, শফিকুল ইসলাম শফিক বর্তমানে রূপগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে একাধিক মাদক ও অস্ত্র মামলাও রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। তার ভাগ্নে সাকিব রূপগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে থেকে প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রবীণ সামছুদ্দোহা ভূঁইয়া সংবাদ সম্মেলনে প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, “আমি চাই, এই সন্ত্রাসী বাহিনীর হাত থেকে এলাকাবাসী ও আমার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক। আমি চাই প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করুক যাতে কর্ণগোপে সাধারণ মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারে।”
তিনি প্রশাসনের প্রতি কর্ণগোপে চাঁদাবাজি, মাদক কারবার ও অস্ত্র সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগীর পরিবারের ৫ সদস্য। একমাত্র ছেলে নাসিম, দুই ভাতিজা তানভীর ও শফিক, ভাতিজি সেলিনা আক্তার এবং স্ত্রী শামসুন্নাহার।