আইফোনের জন্য অপহরণ-ধর্ষণের নাটক কলেজ শিক্ষার্থীর! ২ সহপাঠী আটক
আইফোনের জন্য অপহরণ-ধর্ষণের নাটক কলেজ শিক্ষার্থীর! ২ সহপাঠী আটক

- আপডেট সময় : ০৫:৫১:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫
- / ১৫ জন পড়েছেন
সোজাসাপটা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আইফোন কেনার টাকার জন্য নিজের অপহরণ ও গণধর্ষণের নাটক সাজিয়েছে মাহিয়া আক্তার নামে একাদশ শ্রেণির এক কলেজছাত্রী। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় রূপগঞ্জ থানা প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য জানান ওসি মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মাহিয়ার দুই সহপাঠী সিফাত মিয়া ও সিনথিয়া আক্তারকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
ওসি তরিকুল ইসলাম জানান, “গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, মুড়াপাড়া কলেজের এক ছাত্রীকে অপহরণ ও গণধর্ষণ করা হয়েছে। তার পরিবার থানায় একটি অপহরণের অভিযোগ দেয়। বিষয়টি আমলে নিয়ে পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত শুরু করে।”
তদন্তে বেরিয়ে আসে, মাহিয়া আক্তার বেশ কিছুদিন ধরে একটি দামি আইফোন কিনতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু পরিবার টাকা না দেওয়ায় সে অপহরণ ও ধর্ষণের সাজানো নাটকের পরিকল্পনা করে। এতে সহায়তা করে তার দুই সহপাঠী সিফাত ও সিনথিয়া।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকালে মাহিয়া কলেজে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। পরে সিফাত ‘অপহরণকারী’ সেজে মাহিয়ার মাকে ফোন করে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে মাহিয়াকে ‘ধর্ষণের’ হুমকিও দেওয়া হয়।
পরদিন বুধবার জানা যায়, মাহিয়া বান্ধবী সিনথিয়ার বাসায় অবস্থান করছিলেন। টাকা না পেয়ে, নাটকের অংশ হিসেবে মাহিয়া তুসকা সিরাপ খেয়ে নিজেকে অচেতন দেখিয়ে মুড়াপাড়া কলেজের পেছনে পড়ে থাকেন। পরে সিফাত মাহিয়ার মাকে ফোন দিয়ে বলে, “টাকা না দেওয়ায় মেয়েকে ফেলে গেলাম।”
এরপর পুলিশ মাহিয়াকে উদ্ধার করে প্রথমে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে নারায়ণগঞ্জে চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঠায়।
ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনাটি রূপগঞ্জে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সচেতন মহল বলছেন, “এই ধরনের সাজানো নাটক শুধুমাত্র পারিবারিক বা ব্যক্তিগত নয়, বরং সমাজ ও প্রশাসনের জন্য চরম প্রতারণা এবং বিভ্রান্তির কারণ। দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা জরুরি, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন কর্মকাণ্ডে উৎসাহ না পায়।”