অপরাধ দমাতে সুইচ গিয়ার আমদানী ও বিক্রি বন্ধের আহবান!

- আপডেট সময় : ১০:৫৮:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
- / ১৬ জন পড়েছেন
সুইচ গিয়ার একটি অত্যাধুনিক ছুরি যা বর্তমান সময়ে এক আতঙ্কের নাম। সহজে বহনযোগ্য এটি ভাজ করে রাখা যায়, সুইচ টিপলে বের হয়ে আসে ধারালো ফলাটি। আকারে ছোট ৬ ইঞ্চির স্টিলের এই ছুরি দিয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছুরিকাঘাত, ছিনতাই ও খুনের মতো ঘটনা। সহজে পকেটে বহন করা যায় বলে এই ধরনের ছুরি এখন খুনি এবং উঠতি বয়সী কিশোর গ্যাং ছেলেদের হাতে হাতে দেখা যায়।
বর্তমান সমাজে সুইচ গিয়ার নামক এ ছুরিটি অত্যন্ত জনপ্রিয় করে তুলেছে উঠতি বয়সী অপরাধীরা। নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় এই সুইচ গিয়ার ছুরি বা টিপ ছোরার ব্যবহার নিয়ে এখন থানা পুলিশও বেশ উদ্বিগ্ন। কেননা, এ ধরনের ছুরি খুব ধারালো, পকেটে ভাজ করে নিরাপদে হাটা যায় বলে অপরাধী এবং কিশোর গ্যাংয়ের সদ্যসরা বর্তমানে এই ছুরির খুব বেশি ব্যবহার করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে চীনের তৈরি এসব ছুরির একপাশ ধারালো। তবে, এগুলো দিয়ে ফল বা সবজি কাটা বা অন্য কোনো কাজে লাগে না। নারায়ণগঞ্জ শহর কিংবা শহরতলীর প্রতিটি পাড়া-মহল্লা কিংবা ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোরে এ সুইচ গিয়ারগুলো মাত্র ২শত টাকা থেকে ৭শত টাকার মধ্যেই হাত বাড়ালেই মেলে এই টিপ ছুরি।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায় যে, সহজে বহনযোগ্য হওয়ার ফলে এর চাহিদাও প্রচুর। তবে এগুলো সচরাচর পেশাদার ছিনতাইকারী,কিশোরগ্যাং এবং মাদক বিক্রেতাদের কাছেই বেশী দেখা যায়। নিজেদেরকে বিপদমুক্ত রাখতে এবং সাধারন মানুষকে এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত করতেই নাকি অপরাধীরা তাদের কাছে এ সুইচগিয়ার গুলো রাখেন। তবে প্রতিটি পাড়া-মহল্লাতে সংঘটিত অপরাধের পর পুলিশ কিংবা স্থানীয় জনতার হাতে আটকের পর প্রতি ১০ জন অপরাধীর প্রায় ৮ জনের কাছেই এ সুইচ গিয়ারগুলো উদ্ধার করা হয়ে থাকে বলে অনেকে।
কর্মশেষে বাড়ি ফেরার পথে ছিনতাইকারী কিংবা কিশোর অপরাধীরা এ সুইচ গিয়ার বুকে-পেটে কিংবা গলায় ঠেকিয়ে সর্বস্ত্র কেড়ে নিচ্ছে একজন পথচারীর। তাদের রোষানলে পড়ে উলটপালট কিছু হলেই দেহের যেকোন অংশে তা দিয়ে ছুড়িকাঘাত করে একটি জীবনকে শংকার মধ্যে ফেলে দিতেও কোন দ্বিধাবোধ করেনা উক্ত ছিনতাইকারী কিংবা কিশোর অপরাধীরা। শহর কিংবা শহরতলীতে প্রতিদিনই এ সকল অপরাধীদেও মুখোমুখি হতে হচ্ছে ঘরমুখো মানুষকে। আর তাদের কাছে থাকা সুইচ গিয়ার ঠেকিয়ে সর্বস্ত্র কেড়ে নিচ্ছে তারা। সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।
আর কিশোর অপরাধী কিংবা ছিনতাইকারীরা এ সকল সুইচ গিয়ারগুলো বেশীরভাগই অনলাইনের মাধ্যমে সংগ্রহ করছেন বলে একাধিক সুত্রে জানা যায়। ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে এই ছুরি বেচাকেনা করতে দেখা গেছে। এমনকি দারাজ, আলিবাবাসহ বিভিন্ন দেশী বিদেশী অনলাইন শপ থেকে কুরিয়ার যোগে এসব সুইচ গিয়ার ছুরি কিনে থাকেন যুবকরা। তবে এগুলো মুলত বেশীরভাগই চায়না হতে আমদানী করা হয় বলে জানান অনেকে।
অথচ অপরাধমুলক কাজে ব্যবহৃত এ সুইচ গিয়ারগুলো আমদানী কিংবা ক্রয়-বিক্রয় বন্ধের বিষয়ে কোন উদ্যোগ নিচ্ছেনা সরকার। আবার প্রশাসনও চুপসে রয়েছে এগুলো বাজারজাত করনের বিরুদ্ধে। শহর কিংবা শহরতলীতে কোথায় কোথায় এ সকল সুইচ গিয়ার বিক্রি হচ্ছে তা পুলিশসহ প্রশাসনের সকলেই অবগত আছেন কিন্তু এগুলো বিক্রি বন্ধ করার কোন উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন তারা। আর অপরাধীদের কাছে থাকা এ সকল সুইচ গিয়ারের আঘাতে অনেক মায়ের বুক খালি হচ্ছে আবার সারাদিনের উপার্জিত অর্থগুলোও একটু ঠেক দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে ছিনতাইকারীরা।
কিশোর অপরাধের অন্যতম হাতিয়ার সুইচ গিয়ার আমদানী ও বিক্রয় বন্ধের জন্য সরকারের বানিজ্য মন্ত্রনালয় এবং নারায়ণগঞ্জের শহর ও শহরতলী থেকে সুইচ গিয়ার বিক্রয়ের সাথে যারা জড়িত রয়েছেন তাদেরকে আইনের আওতায় নেয়ার জন্য সদয় দাবী জানান নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের সাধারন