আইসিইউতে খালেদা জিয়া
- আপডেট সময় : ০৯:০৯:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫
- / ১৩৮ জন পড়েছেন
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তার হার্ট ও ফুসফুসে ইনফেকশন ধরা পড়েছে। সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করে নিবিড়ভাবে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এসব তথ্য জানিয়েছেন তার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা। বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান, ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে মেডিকেল বোর্ডের নিবিড় তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা হচ্ছে। এসময় সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর সুস্থতায় দেশবাসীর কাছে দোয়া চান তিনি। রোববার রাতে ৮১ বছর বয়সী বিএনপি চেয়ারপারসনকে গুলশানের বাসা থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তার চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড বৈঠকে বসে বেশ কিছু টেস্ট করার সিদ্ধান্ত নেন।
রোববার মধ্য রাতে হাসপাতালের সামনে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার আপডেট গণমাধ্যমকে অবহিত করেন তার মেডিকেল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী। এসময় তিনি জানান, ম্যাডামের (বিএনপি চেয়ারপারসন) হার্ট ও ফুসফুসে ইনফেকশন হয়েছে। এভারকেয়ার হাসপাতালের এই চিকিৎসক বলেন, গত কয়েক মাস ধরেই উনি খুব ঘন ঘন আক্রান্ত হচ্ছিলেন। আজকে আমরা যে কারণে এখানে (এভারকেয়ার হাসপাতালে) ভর্তি করিয়েছি- সেটা হচ্ছে যে, উনার কতগুলো সমস্যা একসাথে দেখা দিয়েছে। সেটা হচ্ছে, উনার চেস্টে ইনফেকশন হয়েছে। তিনি বলেন, যেহেতু উনার হার্টের সমস্যা আগে থেকেই ছিল। উনার হার্টে পারমানেন্ট পেসমেকার আছে এবং হার্টে উনার রিং পড়ানো হয়েছিল, তারপরেও উনার মাইট্রোস্টেনোসিস নামে একটা কন্ডিশন আছে- সেজন্য চেস্টে হওয়াতে উনার একসাথে হার্ট এবং ফুসফুস দুটোই এ্যাট এ টাইম আক্রান্ত হওয়াতে উনার খুব রেসপিরেটরি ডিস্ট্রেস হচ্ছিল। সেজন্য এখানে আমরা খুব দ্রুত ওনাকে নিয়ে এসেছি।
খালেদা জিয়া ২৪ ঘন্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন জানিয়ে এফএম সিদ্দিকী বলেন, হাসপাতালে আনার পর আমরা খুব তাৎক্ষণিকভাবে দ্রুত যে পরীক্ষাগুলো করা দরকার তা করেছি। আমরা প্রাথমিক যে রিপোর্ট পেয়েছি, সে অনুযায়ী মেডিকেল বোর্ডের সবাই বসে আমরা প্রাথমিকভাবে উনাকে এন্টিবায়োটিক দিয়েছি, উনাকে যেভাবে প্রাথমিক দ্রুত এবং জরুরি চিকিৎসা দেয়ার দরকার হয়, সেটা দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, আশা করছি যে, ২৪ ঘন্টার মধ্যে আরো কিছু রিপোর্ট আসবে। উনি আমাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন এবং আমি আমরা মনে করছি যে, নেক্সট ১২ ঘন্টার উনার পরবর্তী পরিস্থিতি কী হয় সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই মুহূর্তে উনি আমাদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা এবং আমরা যেটাকে খুব ভালোভাবে বলি, খুব ইন্টেন্সিভভাবে আমাদের মনিটরিং এর মধ্যে আছেন। কেবিনেই আছেন উনি। অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী বলেন, মেডিকেল বোর্ডের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ম্যাডামের চিকিৎসা শুরু হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা নিয়ে আমরা ডেফিনেটলি সুচিকিৎসার ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে এবং সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করে নিবিড়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। অত্যন্ত উৎকন্ঠিত কোনো বিষয় আমরা মনে করছি না। ডা. জাহিদ জানান, গতকাল ভোর রাত থেকে লন্ডন থেকে তারেক রহমান ও উনার সহধর্মিনী জুবাইদা রহমান সর্বাক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। এছাড়া ম্যাডামের ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর সহধর্মিনী সৈয়দা শর্মিলা রহমান এখানেই আছেন, উনাদের আত্বীয়-স্বজনরা ম্যাডামের চিকিৎসার ব্যাপারে সবসময় সহযোগিতা ও খোঁজ-খবর রাখছেন।
এদিকে এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধায়নে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। হাসপাতালে নেয়ার পরপর অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকাদারের সভাপতিত্বে মেডিকেল বোর্ড বৈঠকে বসে। এই বৈঠকে অধ্যাপক এফএস সিদ্দিকী, ডা. জাফর ইকবাল, ডা. জিয়াউল হক, ডা. মামুন আহমেদ, অব. বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাইফুল ইসলাম এবং লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি ডা. জুবাইদা রহমান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে জনহোপকিংস হসপিটালের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা অংশ নেন। উল্লেখ্য, ৮১ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।



















