ঢাকা ০৭:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‎ শুভ জন্মাষ্টমীতে সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন সাখাওয়াত – টিপু

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৩:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫
  • / ২১ জন পড়েছেন



‎হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে অনুষ্ঠিত হলো এক বর্ণাঢ্য ও জাঁকজমকপূর্ণ র‍্যালি।

‎শনিবার (১৬ আগস্ট) সকাল ১০টায় ২নং রেলগেট এলাকা থেকে র‍্যালিটি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি শুভ উদ্বোধন করেন রামকৃষ্ণ মিশন ও আশ্রমের অধ্যক্ষ পরম পূজ্যপাদ স্বামী একনাথনন্দজী মহারাজ ও প্রধান অতিথি হিসবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞাসহ প্রধান বক্তা হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ তোমার মজুমদার।

‎বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর শাখার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ র‍্যালিতে শহরের বিভিন্ন এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে ধর্মীয় গান, ঢাকঢোল ও শোভাযাত্রার রঙে।

‎র‍্যালিটি ২নং রেলগেট থেকে শুরু হয়ে মন্ডলপাড়া ব্রিজ, নিতাইগঞ্জ, ডালপট্টি, টানবাজার, ১নং রেলগেট, কালীরবাজার, ডন চেম্বার ও চাষাড়া হয়ে পুনরায় ২নং রেলগেটে এসে শেষ হয়। এতে অংশ নেন হাজারো ভক্তবৃন্দ, সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ, কিশোর-কিশোরী ও ধর্মীয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

‎অনুষ্ঠানটির বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ অংশ ছিল নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সরব উপস্থিতি। র‍্যালির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অংশগ্রহণ করে সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. সাখাওয়াত হোসেন খান এবং সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. আবু আল ইউসুফ খান টিপু। দুই শীর্ষ নেতা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আনন্দ ও উৎসবে একাত্মতা প্রকাশ করে র‍্যালিতে অংশগ্রহণ করেন, যা এলাকাবাসীর মধ্যে প্রশংসার ঢল নামায়।

‎র্্যালি শেষে মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আজকে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শুভ জন্মাষ্টমী উদযাপন করল নারায়ণগঞ্জবাসী। এটি একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকলো নগরবাসীর জন্য।  যে যে দলেরই হোক না কেন যেকোনো ধর্মীয় উৎসবে সবাই একত্র হয়ে উদযাপন করাটাই হলো আসল রাজনীতির সৌন্দর্য।

‎মহানগর বিএনপির সদস্য সচি আবু আল ইউসুফ খান টিপু তার বক্তব্যে বলেন,  বিগত আমলে আওয়ামী শাসকরা সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে একক আধিপত্য বিস্তার করায় আমরা সে সময় কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারিনি। তবে বর্তমানে দেশ থেকে ফ্যাসিস্ট বিদায় হওয়ার পরে নারায়ণগঞ্জ সহ সারাদেশে সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে সকল রাজনৈতিক দলগুলো একসাথে অংশগ্রহণ করে সেই সকল অনুষ্ঠানগুলোর সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে।  আমার মনে হয় এইখানেই রাজনৈতিক সৌন্দর্য ফুটে উঠছে।

‎পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে আয়োজকরা জানান, দেশের সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষকে নিয়ে সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ে তোলাই তাদের মূল লক্ষ্য। এ ধরনের উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে ধর্মীয় সহনশীলতা এবং সামাজিক বন্ধন আরও দৃঢ় হয়।

‎র‍্যালির সমাপ্তি ঘোষণা করে সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন। তিনি বলেন, “ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আজকের এই আয়োজনে যে সম্প্রীতির চিত্র আমরা দেখলাম, তা সত্যিই হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো। নারায়ণগঞ্জে সব ধর্মের মানুষ একসাথে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছে, এটাই আমাদের গর্ব।”

‎র‍্যালি সঞ্চালনায় ছিলেন শিখন সরকার শিপন নিজে। এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন, জামায়েত ইসলামী নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মাওলানা মইনুদ্দিন আহমাদ,ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামী  নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মাওলানা আব্দুল জব্বার, জাতীয় নাগরিক পার্টি নারায়ণগঞ্জ জেলার যুগ্ন আহবায়ক আহমেদুর রহমান তনু, তিলোত্তমা দাস (সহ-সভাপতি, জেলা শাখা), বিষ্ণুপদ সাহা (সভাপতি, মহানগর শাখা), পংকজ কুমার সাহা (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জেলা), সুশীল দাস (সাধারণ সম্পাদক, মহানগর), রাজ সেন সজল (দপ্তর সম্পাদক, জেলা), এবং কৃষ্ণা আচার্য (সাংগঠনিক সম্পাদক, মহানগর) প্রমুখ।

‎এ র‍্যালি নারায়ণগঞ্জে ধর্মীয় সম্প্রীতির এক নতুন দৃষ্টান্ত হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। অংশগ্রহণকারীরা জানান, প্রতি বছর এ ধরনের আয়োজন আরও বড় পরিসরে এবং সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণে সম্পন্ন হোক—এই আশা তারা ব্যক্ত করেন

ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

‎ শুভ জন্মাষ্টমীতে সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন সাখাওয়াত – টিপু

আপডেট সময় : ০৮:৩৩:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫



‎হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে অনুষ্ঠিত হলো এক বর্ণাঢ্য ও জাঁকজমকপূর্ণ র‍্যালি।

‎শনিবার (১৬ আগস্ট) সকাল ১০টায় ২নং রেলগেট এলাকা থেকে র‍্যালিটি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি শুভ উদ্বোধন করেন রামকৃষ্ণ মিশন ও আশ্রমের অধ্যক্ষ পরম পূজ্যপাদ স্বামী একনাথনন্দজী মহারাজ ও প্রধান অতিথি হিসবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞাসহ প্রধান বক্তা হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ তোমার মজুমদার।

‎বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর শাখার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ র‍্যালিতে শহরের বিভিন্ন এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে ধর্মীয় গান, ঢাকঢোল ও শোভাযাত্রার রঙে।

‎র‍্যালিটি ২নং রেলগেট থেকে শুরু হয়ে মন্ডলপাড়া ব্রিজ, নিতাইগঞ্জ, ডালপট্টি, টানবাজার, ১নং রেলগেট, কালীরবাজার, ডন চেম্বার ও চাষাড়া হয়ে পুনরায় ২নং রেলগেটে এসে শেষ হয়। এতে অংশ নেন হাজারো ভক্তবৃন্দ, সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ, কিশোর-কিশোরী ও ধর্মীয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

‎অনুষ্ঠানটির বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ অংশ ছিল নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সরব উপস্থিতি। র‍্যালির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অংশগ্রহণ করে সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. সাখাওয়াত হোসেন খান এবং সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. আবু আল ইউসুফ খান টিপু। দুই শীর্ষ নেতা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আনন্দ ও উৎসবে একাত্মতা প্রকাশ করে র‍্যালিতে অংশগ্রহণ করেন, যা এলাকাবাসীর মধ্যে প্রশংসার ঢল নামায়।

‎র্্যালি শেষে মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আজকে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শুভ জন্মাষ্টমী উদযাপন করল নারায়ণগঞ্জবাসী। এটি একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকলো নগরবাসীর জন্য।  যে যে দলেরই হোক না কেন যেকোনো ধর্মীয় উৎসবে সবাই একত্র হয়ে উদযাপন করাটাই হলো আসল রাজনীতির সৌন্দর্য।

‎মহানগর বিএনপির সদস্য সচি আবু আল ইউসুফ খান টিপু তার বক্তব্যে বলেন,  বিগত আমলে আওয়ামী শাসকরা সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে একক আধিপত্য বিস্তার করায় আমরা সে সময় কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারিনি। তবে বর্তমানে দেশ থেকে ফ্যাসিস্ট বিদায় হওয়ার পরে নারায়ণগঞ্জ সহ সারাদেশে সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে সকল রাজনৈতিক দলগুলো একসাথে অংশগ্রহণ করে সেই সকল অনুষ্ঠানগুলোর সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে।  আমার মনে হয় এইখানেই রাজনৈতিক সৌন্দর্য ফুটে উঠছে।

‎পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে আয়োজকরা জানান, দেশের সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষকে নিয়ে সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ে তোলাই তাদের মূল লক্ষ্য। এ ধরনের উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে ধর্মীয় সহনশীলতা এবং সামাজিক বন্ধন আরও দৃঢ় হয়।

‎র‍্যালির সমাপ্তি ঘোষণা করে সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন। তিনি বলেন, “ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আজকের এই আয়োজনে যে সম্প্রীতির চিত্র আমরা দেখলাম, তা সত্যিই হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো। নারায়ণগঞ্জে সব ধর্মের মানুষ একসাথে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছে, এটাই আমাদের গর্ব।”

‎র‍্যালি সঞ্চালনায় ছিলেন শিখন সরকার শিপন নিজে। এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন, জামায়েত ইসলামী নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মাওলানা মইনুদ্দিন আহমাদ,ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামী  নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মাওলানা আব্দুল জব্বার, জাতীয় নাগরিক পার্টি নারায়ণগঞ্জ জেলার যুগ্ন আহবায়ক আহমেদুর রহমান তনু, তিলোত্তমা দাস (সহ-সভাপতি, জেলা শাখা), বিষ্ণুপদ সাহা (সভাপতি, মহানগর শাখা), পংকজ কুমার সাহা (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জেলা), সুশীল দাস (সাধারণ সম্পাদক, মহানগর), রাজ সেন সজল (দপ্তর সম্পাদক, জেলা), এবং কৃষ্ণা আচার্য (সাংগঠনিক সম্পাদক, মহানগর) প্রমুখ।

‎এ র‍্যালি নারায়ণগঞ্জে ধর্মীয় সম্প্রীতির এক নতুন দৃষ্টান্ত হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। অংশগ্রহণকারীরা জানান, প্রতি বছর এ ধরনের আয়োজন আরও বড় পরিসরে এবং সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণে সম্পন্ন হোক—এই আশা তারা ব্যক্ত করেন