ঢাকা ০৪:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫, ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শেখ মুজিবের মূর্তি যেভাবে ফ্যাসিস্টের মূর্তি হয়ে ওঠে, জানালেন মির্জা গালিব

শেখ মুজিবের মূর্তি যেভাবে ফ্যাসিস্টের মূর্তি হয়ে ওঠে, জানালেন মির্জা গালিব

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেট সময় : ০২:১৬:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৬ জন পড়েছেন

‘বাংলাদেশে তিন জন শেখ মুজিব আছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মির্জা গালিব। সেই সঙ্গে শেখ মুজিবের মূর্তি কিভাবে ফ্যাসিস্ট মুজিবের মূর্তি হয়ে ওঠে- সেই ব্যখ্যাও দিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ সময় বুধবার (১৩ আগস্ট) রাত ৯টা ৫৭ মিনিটে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে দেওয়া এক রি-পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।

পাঠকদের জন্য অধ্যাপক মির্জা গালিবের পোস্টটি তুলে ধরা হলো-

‘বাংলাদেশে আমাদের তিন জন শেখ মুজিব আছে।

প্রথম জন- মুক্তিযুদ্ধের নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। যিনি ৭১-এ আমাদের মুক্তি সংগ্রামের নেতা ছিলেন, প্রেরণা ছিলেন। যিনি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতিদের একজন।

দ্বিতীয় জন- একনায়ক শেখ মুজিব, যে রক্ষীবাহিনী বানাইয়া বিচার বহির্ভুত হত্যাকাণ্ডের শুরু করেছিল, গণতন্ত্র হত্যা করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল। আমাদের ট্রাজেডি, শেখ মুজিবই প্রথম সরকার-প্রধান যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে বেইমানী করে গণতন্ত্র হত্যা করেছিল।

তৃতীয় জন- ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিব, হাসিনা যারে সামনে রাইখা একটা ১৫ বছরের ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী জুলুমতন্ত্র চালাইছে। মুজিবের মূর্তি বানাইয়া আর চেতনা ইন্ডাস্ট্রি বিক্রি কইরা যে ফ্যাসিবাদ হাসিনা কায়েম করছিল, সেই ফ্যাসিবাদের কারখানায় শেখ মুজিবের মূর্তি ফ্যাসিস্ট মুজিবের মূর্তি হইয়া উঠছে।

ছাত্র জনতা আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিবের মূর্তি ভাঙছে, এই মূর্তি আমাদের ভাইঙ্গা গুড়ায়েই দিতে হবে। গণতন্ত্রকামী সব মানুষের এইটাই সঠিক রাজনৈতিক কর্তব্য।

একনায়ক শেখ মুজিবে পতনও আমাদের উদযাপন করতে হবে। আগস্টের ১৫ তারিখ শেখ মুজিবের পরিবার, বন্ধু এবং যারা তারে ভালোবাসে/ভালোবাসত তাদের জন্য সীমাহীন বেদনার দিন। এই বেদনার প্রতি সেনসিটিভ থাইকাই বলতেছি। মুক্তিযুদ্ধের নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কেমন কইরা একনায়ক শেখ মুজিব হইয়া উঠলেন আর এই ট্রাজিক পরিণতির দিকে নিজ পায়ে হাইটা গেলেন, সেই ইতিহাস চর্চা যদি আমরা না করি, তাইলে আমরা কোনোদিনও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বানাইতে পারব না। ইনফ্যাক্ট, এই চর্চা আমাদের মিডিয়া আর সিভিল সোসাইটিতে ছিলনা বইলাই হাসিনা আমাদের দেশরে একটা ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী জুলুমতন্ত্র বানাইয়া ফেলতে পারছিল।

হাসিনার এই ফ্যসিজমের পরেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আমাদের ইতিহাসে শ্রদ্ধার সঙ্গে থাইকা যাবেন। বাংলাদেশের অন্যতম (অনেকের মধ্যে একজন, একলা না) ফাউন্ডিং ফাদার হিসেবেই থাইকা যাবেন। আমরাই রাখবো তারে। আমরা ২৬ মার্চ আর ১৬ ডিসেম্বর শ্রদ্ধার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করব। কিন্তু আগস্টে আমাদের রাজনৈতিক কর্তব্য হইল এইটা বোঝা যে, কেমনে বিপ্লবের পরে/অভ্যুথানের পরে/ স্বাধীনতার পরে নায়করা ভিলেন হইয়া ওঠে আর পতনের রাস্তায় হাইটা যায়। আর পতিত একনায়ককে সমালোচনা না কইরা, ইনডেমনিটি দিয়া মাথার উপরে উঠাইলে কেমনে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের জন্ম হয়।’

ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

শেখ মুজিবের মূর্তি যেভাবে ফ্যাসিস্টের মূর্তি হয়ে ওঠে, জানালেন মির্জা গালিব

শেখ মুজিবের মূর্তি যেভাবে ফ্যাসিস্টের মূর্তি হয়ে ওঠে, জানালেন মির্জা গালিব

আপডেট সময় : ০২:১৬:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫

‘বাংলাদেশে তিন জন শেখ মুজিব আছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মির্জা গালিব। সেই সঙ্গে শেখ মুজিবের মূর্তি কিভাবে ফ্যাসিস্ট মুজিবের মূর্তি হয়ে ওঠে- সেই ব্যখ্যাও দিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ সময় বুধবার (১৩ আগস্ট) রাত ৯টা ৫৭ মিনিটে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে দেওয়া এক রি-পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।

পাঠকদের জন্য অধ্যাপক মির্জা গালিবের পোস্টটি তুলে ধরা হলো-

‘বাংলাদেশে আমাদের তিন জন শেখ মুজিব আছে।

প্রথম জন- মুক্তিযুদ্ধের নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। যিনি ৭১-এ আমাদের মুক্তি সংগ্রামের নেতা ছিলেন, প্রেরণা ছিলেন। যিনি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতিদের একজন।

দ্বিতীয় জন- একনায়ক শেখ মুজিব, যে রক্ষীবাহিনী বানাইয়া বিচার বহির্ভুত হত্যাকাণ্ডের শুরু করেছিল, গণতন্ত্র হত্যা করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল। আমাদের ট্রাজেডি, শেখ মুজিবই প্রথম সরকার-প্রধান যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে বেইমানী করে গণতন্ত্র হত্যা করেছিল।

তৃতীয় জন- ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিব, হাসিনা যারে সামনে রাইখা একটা ১৫ বছরের ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী জুলুমতন্ত্র চালাইছে। মুজিবের মূর্তি বানাইয়া আর চেতনা ইন্ডাস্ট্রি বিক্রি কইরা যে ফ্যাসিবাদ হাসিনা কায়েম করছিল, সেই ফ্যাসিবাদের কারখানায় শেখ মুজিবের মূর্তি ফ্যাসিস্ট মুজিবের মূর্তি হইয়া উঠছে।

ছাত্র জনতা আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিবের মূর্তি ভাঙছে, এই মূর্তি আমাদের ভাইঙ্গা গুড়ায়েই দিতে হবে। গণতন্ত্রকামী সব মানুষের এইটাই সঠিক রাজনৈতিক কর্তব্য।

একনায়ক শেখ মুজিবে পতনও আমাদের উদযাপন করতে হবে। আগস্টের ১৫ তারিখ শেখ মুজিবের পরিবার, বন্ধু এবং যারা তারে ভালোবাসে/ভালোবাসত তাদের জন্য সীমাহীন বেদনার দিন। এই বেদনার প্রতি সেনসিটিভ থাইকাই বলতেছি। মুক্তিযুদ্ধের নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কেমন কইরা একনায়ক শেখ মুজিব হইয়া উঠলেন আর এই ট্রাজিক পরিণতির দিকে নিজ পায়ে হাইটা গেলেন, সেই ইতিহাস চর্চা যদি আমরা না করি, তাইলে আমরা কোনোদিনও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বানাইতে পারব না। ইনফ্যাক্ট, এই চর্চা আমাদের মিডিয়া আর সিভিল সোসাইটিতে ছিলনা বইলাই হাসিনা আমাদের দেশরে একটা ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী জুলুমতন্ত্র বানাইয়া ফেলতে পারছিল।

হাসিনার এই ফ্যসিজমের পরেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আমাদের ইতিহাসে শ্রদ্ধার সঙ্গে থাইকা যাবেন। বাংলাদেশের অন্যতম (অনেকের মধ্যে একজন, একলা না) ফাউন্ডিং ফাদার হিসেবেই থাইকা যাবেন। আমরাই রাখবো তারে। আমরা ২৬ মার্চ আর ১৬ ডিসেম্বর শ্রদ্ধার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করব। কিন্তু আগস্টে আমাদের রাজনৈতিক কর্তব্য হইল এইটা বোঝা যে, কেমনে বিপ্লবের পরে/অভ্যুথানের পরে/ স্বাধীনতার পরে নায়করা ভিলেন হইয়া ওঠে আর পতনের রাস্তায় হাইটা যায়। আর পতিত একনায়ককে সমালোচনা না কইরা, ইনডেমনিটি দিয়া মাথার উপরে উঠাইলে কেমনে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের জন্ম হয়।’