ঢাকা ০১:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫, ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
না.গঞ্জ ড্রেজার পরিদপ্তর নিয়ে যা বললেন রাজিব-সজল-সাহেদসহ কর্মকর্তারা শহরজুড়ে সাটানো আজমেরী ওসমানের পোস্টার ছিড়ে ফেললেন ছাত্রনেতা আরাফাত ফতুল্লায় র‍্যাবে ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযান, ৪ লাখ টাকা জরিমানা ফতুল্লায় ভোক্তাঅধিদপ্তরের অভিযান, ২ ফার্মেসিকে জরিমানা দাবারু মুনতাহার পাশে দাঁড়ালেন বিএনপি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় করা মামলায় চার দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে আনিসুল হক রূপগঞ্জে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ করে উধাও সমবায় সমিতির কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জে সুইচগিয়ারসহ আটক ২ মুসলিমনগরের বেকারী ব্যবসায়ী মনির হোসেন প্রতারনায় দায়ে গ্রেফতার এলডিসি গ্রাজুয়েশন পরবর্তী সরকারের বিষয় নয়, প্রস্তুতি দরকার এখনই
ইউরোপসেরা গোলরক্ষককে যে কারণে ছেড়ে দিচ্ছে পিএসজি

ইউরোপসেরা গোলরক্ষককে যে কারণে ছেড়ে দিচ্ছে পিএসজি

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেট সময় : ০৪:২১:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৬ জন পড়েছেন

প্যারিস সেইন্ট জার্মেইঁয়ের গোলপোস্টে গত মৌসুমে যে খেলোয়াড় বারবার দলকে রক্ষা করেছেন, সেই ইতালীয় তারকা জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা এখন ক্লাব ছাড়তে চলেছেন। পিএসজির ঐতিহাসিক চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ে তার অবদান ছিল বিশাল। বিশেষ করে নকআউট পর্বে তিনি অসাধারণ সেভ করে দলকে বাঁচিয়েছেন। লিভারপুলের বিপক্ষে আনফিল্ডে টাইব্রেকারে তার পারফরম্যান্সের জন্য তিনি ম্যাচসেরা হন। দলের সহখেলোয়াড় ভিতিনিয়া পর্যন্ত বলেছিলেন, ‘সে আমাদের এমভিপি’। কিন্তু ঠিক সেই মৌসুম শেষ যখন হলো ইন্টার মিলানের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে ৫-০ জয় দিয়ে, তা শেষে দোন্নারুম্মা বলেন, ‘আমরা কয়েক দিনের মধ্যে দেখব আমি পিএসজিতে থাকব কি না।’

এরপর দুই মাসেরও বেশি সময় কেটে গেছে। ১২ আগস্ট ইনস্টাগ্রামে তিনি হতাশা ও ক্ষোভে ভরা এক পোস্ট দিয়ে জানিয়ে দেন যে, তিনি আর দলের অংশ নন। সেখানে লেখেন, ‘কেউ ঠিক করেছে যে আমি আর দলের অংশ হতে পারব না।’ যদিও কার কথা তিনি বলেছেন, তা অনুমান করা কঠিন নয়।

লুইস এনরিকের অধীনে পিএসজি মৌসুমে ধারাবাহিক ছিল না। দোন্নারুম্মার শুরুটাও ভালো ছিল না। আর্সেনালের বিপক্ষে তার একটি ভুলে গোল হজম করে দল। তখন কোচ এনরিকে বলেন, ‘আমি দোষারোপ করব না। দোষ থাকলে সেটা আমার।’ তবে এ ম্যাচের পর থেকেই তার এক নম্বর গোলরক্ষক হিসেবে অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে।

শোনা যাচ্ছিল, এনরিকে এমন একজন গোলরক্ষক চান যার ফুটওয়ার্ক আর পাসিংয়ে বেশি দক্ষ। দোন্নারুম্মা শট-স্টপিংয়ে সেরা হলেও বল পায়ে নিয়ে আক্রমণ শুরু করার ক্ষেত্রে দুর্বল। এ কারণে লুকাস শেভালিয়েরকে নেওয়ার আলোচনা চলছিল অনেক দিন। অবশেষে লিল থেকে ৪০ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে তাকে দলে নেওয়া হয়েছে। এতে দোন্নারুম্মার বিদায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে।

তার সঙ্গে নতুন চুক্তি নিয়েও অগ্রগতি হয়নি। বর্তমান চুক্তি শেষ হবে আগামী বছর। পিএসজি বছরে ৭ মিলিয়ন ইউরো বেতন ও পারফরম্যান্স বোনাসে আরও ৩ মিলিয়ন প্রস্তাব দেয়, যা বর্তমান বেতনের সমান। কিন্তু দোন্নারুম্মা চান বছরে ১২ মিলিয়ন ইউরো। তিনি বলেন, ‘আমার অগ্রাধিকার প্যারিসে থাকা।’ তবে শর্ত মেনে না নেওয়ায় ক্লাব জানিয়ে দেয়, প্রস্তাবে রাজি না হলে নতুন দল খুঁজে নিতে হবে।

২৬ বছর বয়সী এই গোলরক্ষকের জন্য ইতিমধ্যে আগ্রহ দেখিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, চেলসি ও গালাতাসারাই। পিএসজি তাকে ৪০ মিলিয়ন ইউরোতে ছাড়তে রাজি, যাতে আগামী মৌসুমে বিনা মূল্যে চলে যাওয়ার ঝুঁকি এড়ানো যায়।

দোন্নারুম্মা প্রথম পিএসজিতে আসার সময় কেইলর নাভাসের সঙ্গে খেলতে হয়েছিল। কিন্তু এবার শেভালিয়ের স্পষ্ট ফেভারিট। এদিকে আগামী বছরই বিশ্বকাপ, এমন সময়ে বেঞ্চে বসা তার জন্য কঠিনই হবে। শেভালিয়ের গত মৌসুমে লিগে ১১টি ক্লিনশিট করেছেন, যেখানে দোন্নারুম্মা করেছেন ৪টি। পাস ও লং বলের ক্ষেত্রেও তিনি অনেক এগিয়ে।

ইউরোপিয়ান সুপার কাপে টটেনহামের বিপক্ষে দলে না থাকায় বিষয়টি একেবারে পরিষ্কার হয়ে গেছে। বিদায়বার্তা দিয়ে দোন্নারুম্মা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভক্তদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তার এ বিদায় যদিও অনেকের কাছে বিস্ময়কর, তবে পিএসজির জন্য অর্থনৈতিক ও কৌশলগত দিক থেকে এটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত বলেই মনে হচ্ছে।

ট্যাগ :

সংবাদটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ইউরোপসেরা গোলরক্ষককে যে কারণে ছেড়ে দিচ্ছে পিএসজি

ইউরোপসেরা গোলরক্ষককে যে কারণে ছেড়ে দিচ্ছে পিএসজি

আপডেট সময় : ০৪:২১:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫

প্যারিস সেইন্ট জার্মেইঁয়ের গোলপোস্টে গত মৌসুমে যে খেলোয়াড় বারবার দলকে রক্ষা করেছেন, সেই ইতালীয় তারকা জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা এখন ক্লাব ছাড়তে চলেছেন। পিএসজির ঐতিহাসিক চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ে তার অবদান ছিল বিশাল। বিশেষ করে নকআউট পর্বে তিনি অসাধারণ সেভ করে দলকে বাঁচিয়েছেন। লিভারপুলের বিপক্ষে আনফিল্ডে টাইব্রেকারে তার পারফরম্যান্সের জন্য তিনি ম্যাচসেরা হন। দলের সহখেলোয়াড় ভিতিনিয়া পর্যন্ত বলেছিলেন, ‘সে আমাদের এমভিপি’। কিন্তু ঠিক সেই মৌসুম শেষ যখন হলো ইন্টার মিলানের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে ৫-০ জয় দিয়ে, তা শেষে দোন্নারুম্মা বলেন, ‘আমরা কয়েক দিনের মধ্যে দেখব আমি পিএসজিতে থাকব কি না।’

এরপর দুই মাসেরও বেশি সময় কেটে গেছে। ১২ আগস্ট ইনস্টাগ্রামে তিনি হতাশা ও ক্ষোভে ভরা এক পোস্ট দিয়ে জানিয়ে দেন যে, তিনি আর দলের অংশ নন। সেখানে লেখেন, ‘কেউ ঠিক করেছে যে আমি আর দলের অংশ হতে পারব না।’ যদিও কার কথা তিনি বলেছেন, তা অনুমান করা কঠিন নয়।

লুইস এনরিকের অধীনে পিএসজি মৌসুমে ধারাবাহিক ছিল না। দোন্নারুম্মার শুরুটাও ভালো ছিল না। আর্সেনালের বিপক্ষে তার একটি ভুলে গোল হজম করে দল। তখন কোচ এনরিকে বলেন, ‘আমি দোষারোপ করব না। দোষ থাকলে সেটা আমার।’ তবে এ ম্যাচের পর থেকেই তার এক নম্বর গোলরক্ষক হিসেবে অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে।

শোনা যাচ্ছিল, এনরিকে এমন একজন গোলরক্ষক চান যার ফুটওয়ার্ক আর পাসিংয়ে বেশি দক্ষ। দোন্নারুম্মা শট-স্টপিংয়ে সেরা হলেও বল পায়ে নিয়ে আক্রমণ শুরু করার ক্ষেত্রে দুর্বল। এ কারণে লুকাস শেভালিয়েরকে নেওয়ার আলোচনা চলছিল অনেক দিন। অবশেষে লিল থেকে ৪০ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে তাকে দলে নেওয়া হয়েছে। এতে দোন্নারুম্মার বিদায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে।

তার সঙ্গে নতুন চুক্তি নিয়েও অগ্রগতি হয়নি। বর্তমান চুক্তি শেষ হবে আগামী বছর। পিএসজি বছরে ৭ মিলিয়ন ইউরো বেতন ও পারফরম্যান্স বোনাসে আরও ৩ মিলিয়ন প্রস্তাব দেয়, যা বর্তমান বেতনের সমান। কিন্তু দোন্নারুম্মা চান বছরে ১২ মিলিয়ন ইউরো। তিনি বলেন, ‘আমার অগ্রাধিকার প্যারিসে থাকা।’ তবে শর্ত মেনে না নেওয়ায় ক্লাব জানিয়ে দেয়, প্রস্তাবে রাজি না হলে নতুন দল খুঁজে নিতে হবে।

২৬ বছর বয়সী এই গোলরক্ষকের জন্য ইতিমধ্যে আগ্রহ দেখিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, চেলসি ও গালাতাসারাই। পিএসজি তাকে ৪০ মিলিয়ন ইউরোতে ছাড়তে রাজি, যাতে আগামী মৌসুমে বিনা মূল্যে চলে যাওয়ার ঝুঁকি এড়ানো যায়।

দোন্নারুম্মা প্রথম পিএসজিতে আসার সময় কেইলর নাভাসের সঙ্গে খেলতে হয়েছিল। কিন্তু এবার শেভালিয়ের স্পষ্ট ফেভারিট। এদিকে আগামী বছরই বিশ্বকাপ, এমন সময়ে বেঞ্চে বসা তার জন্য কঠিনই হবে। শেভালিয়ের গত মৌসুমে লিগে ১১টি ক্লিনশিট করেছেন, যেখানে দোন্নারুম্মা করেছেন ৪টি। পাস ও লং বলের ক্ষেত্রেও তিনি অনেক এগিয়ে।

ইউরোপিয়ান সুপার কাপে টটেনহামের বিপক্ষে দলে না থাকায় বিষয়টি একেবারে পরিষ্কার হয়ে গেছে। বিদায়বার্তা দিয়ে দোন্নারুম্মা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভক্তদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তার এ বিদায় যদিও অনেকের কাছে বিস্ময়কর, তবে পিএসজির জন্য অর্থনৈতিক ও কৌশলগত দিক থেকে এটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত বলেই মনে হচ্ছে।